বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আজমেরী মোনালিসা (২৭) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে বরগুনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর। পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে চিকিৎসায় অবহেলার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

আজমেরী বরগুনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রয়াত জাফরুল হাসানের ছোট মেয়ে। তাঁর স্বামী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ দম্পতির দেড় বছরের একটি মেয়ে আছে।

বরগুনা সদর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা দাবি করছেন, তাঁরা সাধ্যমতো চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। কিছুটা সুস্থবোধ করলে গতকাল সকালে চিকিৎসকদের কাছে অনুরোধ করে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় চলে যান আজমেরী। রাতে শ্বাসকষ্ট হলে আবার তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়। এর কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান।

আজমেরীর পরিবার জানায়, গত বুধবার বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির সময় আজমেরীর রক্তে ১ লাখ ৪৪ হাজার প্লাটিলেট থাকলেও এক দিনের ব্যবধানে তা কমে ৪৪ হাজারে নেমে আসে। পরে গতকাল দুপুরে তিনি হাসপাতাল থেকে বাসায় চলে যান। পরে সন্ধ্যার দিকে তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় পরীক্ষায় তাঁর রক্তে মাত্র ২৫ হাজার প্লাটিলেট পাওয়া যায়।

আজমেরীর বড় ভাই মঈনুল হাসান বলেন, ‘আমার বোনের রক্তের প্লাটিলেট যখন ১ লাখ ৪৪ হাজার থেকে কমে মাত্র ৪৪ হাজারে নামে, তখন উন্নত চিকিৎসার দাবি করলেও চিকিৎসকেরা তা শোনেননি। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভালো হাসপাতালে পাঠানো হলে এ ধরনের ঘটনা ঘটত না।’

এ বিষয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাজকিয়া সিদ্দিকীহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘চিকিৎসাব্যবস্থায় কোনো ঘাটতি ছিল না। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। বর্তমানে জেলায় ডেঙ্গুর পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ২৫০ শয্যা হাসপাতালে প্রায় চার শতাধিক রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে প্রায় এক থেকে দেড় শ রোগীই ডেঙ্গু আক্রান্ত। ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য আলাদা দল গঠন করা দরকার।’

জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর থেকে এখন পর্যন্ত বরগুনা জেলায় ১ হাজার ২২২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময়ে এ রোগে মারা গেছেন মোট ৩ জন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ৪৪ হ জ র আজম র বরগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিএসবির বাশার প্রতারণার আরও ৯ মামলায় গ্রেপ্তার

মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার ‘বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক’-এর চেয়ারম্যান খায়রুল বাশারকে আরও নয়টি প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর অনুমতি দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ বুধবার এই আদেশ দেন।

ঢাকার সিএমএম আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শামসুদ্দোহা সুমন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

১০ দিনের রিমান্ড শেষে খায়রুল বাশারকে আজ বুধবার দুপুরে আদালতে হাজির করা হয়। প্রতারণার পৃথক নয়টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। শুনানি নিয়ে আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।

মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় ১৪ জুলাই রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে খায়রুল বাশারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, তাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত খায়রুল বাশার তাঁর স্ত্রী খন্দকার সেলিমা রওশন ও ছেলে আরশ ইবনে বাশারকে সঙ্গে নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র গড়ে তোলেন। চক্রটি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ, স্কলারশিপ ও ভিসা প্রক্রিয়াকরণের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। ভুয়া ভিসা প্রসেসিং, মনগড়া প্রতিনিধিত্ব ও চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করা হতো। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের অনেকের নামে বিদেশি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনই করা হয়নি। আবার অনেকে বিদেশে গিয়ে নানাভাবে প্রতারিত হয়েছেন।

সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৪৪৮ জন ভুক্তভোগী প্রতারিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েকজন ভুক্তভোগী প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মামলা করেছেন।

আরও পড়ুনউচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ, বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান বাশার গ্রেপ্তার১৪ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ