ঢাকার দুই সিটিতে সাড়ে ১৯ হাজার টন কোরবানির বর্জ্য অপসারণ
Published: 7th, June 2025 GMT
রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন (ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ) এলাকায় সাড়ে ১৯ হাজার টন কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। ঈদের দিন শনিবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত এ পরিমাণ বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দুই সিটি কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে বেলা একটার দিকে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। পরবর্তী ছয় ঘণ্টায় (সন্ধ্যা সাতটা) দক্ষিণ সিটির ৭৫টি ওয়ার্ড এলাকা থেকে মোট ১১ হাজার ৮৬৬ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগ।
এদিকে বর্জ্য অপসারণ নিয়ে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাটটার দিকে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। এতে তিনি জানান, সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ঢাকা উত্তর সিটির ৫৪টি ওয়ার্ড এলাকা থেকে ৭ হাজার ৮০০ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। ঢাকা উত্তরে এ পরিমাণ বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে পাঁচ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে। বেলা দুইটার দিকে ঢাকা উত্তর সিটি এলাকায় বর্জ্য অপসারণের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয়েছিল।
এ বছর ঈদুল আজহায় দুই সিটিতে ২০ হাজার টন করে মোট প্রায় ৪০ হাজার টন কোরবানির বর্জ্য অপসারণে প্রস্তুতির কথা জানানো হয়েছে। দক্ষিণ সিটি জানিয়েছিল, তারা কাজ শুরুর ১২ ঘণ্টার মধ্যে ঈদের দিনের কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করবে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্তৃপক্ষ রাতের মধ্যেই কোরবানির সব বর্জ্য অপসারণের ঘোষণা দিয়েছিল।
সন্ধ্যার সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘সন্ধ্যা পর্যন্ত যে পরিমাণ কোরবানির বর্জ্য উৎপাদিত হয়েছে, এর প্রায় ৮৫ শতাংশের বেশি অপসারণ করা হয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেক এলাকায় গরু-খাসি কোরবানি দেওয়া হয়েছে, যা বর্জ্য অপসারণে অনেকটাই চ্যালেঞ্জের মতো। তবে বর্জ্য অপসারণের কাজ চালিয়ে যাওয়া হবে। তবে এ বছর ঢাকাবাসীর আচরণগত অনেক পরিবর্তন এসেছে। অনেক এলাকায় নিজেরা বর্জ্য সংগ্রহ করে করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাছে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে এগিয়ে আসার জন্য ঢাকাবাসীকে ধন্যবাদ জানাই।’
প্রশাসক বলেন, গুরুত্ব দিয়ে পচনশীল কোরবানির বর্জ্য অপসারণের কাজ করা হয়েছে। আজ রোববার রাস্তাগুলো জীবাণুনাশক ছিটিয়ে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা হবে; যাতে ঈদে নগরবাসীর বেড়ানো স্বাচ্ছন্দ্যের হয়।
মোহাম্মদ এজাজ আরও বলেন, শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করা বা পরিষ্কার করার কথা বলা যাবে না। তবে এটা বলা যায় যে রাস্তার কোথাও কোরবানির বর্জ্য পড়ে থাকবে না। এ ছাড়া হাটের বর্জ্য ঈদের দুই দিন পর পরিষ্কারের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে ঈদের দিনই কিছু কিছু হাটের বর্জ্য প্রায় অপসারণ করে শেষ করা হয়ে গেছে।
সর্বশেষ কত পরিমাণ বর্জ্য অপসারণ করা করেছে, এ নিয়ে রাত আটটা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্তৃপক্ষ। তাদের দেওয়া ১২ ঘণ্টায় বর্জ্য অপসারণের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক রাত একটার মধ্যেই বর্জ্য অপসারণের কাজ শেষ করার কথা। সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে প্রথম আলোকে মুঠোফোনে জানান, তাঁদের হিসাবে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ১১ হাজার ৮৬৬ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। রাতে কাজ চলমান রয়েছে।
এদিকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির অনেক এলাকায় ঘুরে দেখেছেন প্রথম আলোর এই প্রতিবেদক। এ সময় রাজধানীর মালিবাগ, মগবাজার, কমলাপুর, আরামবাগ, মতিঝিল, টিকাটুলী, ওয়ারী, গুলিস্তান, বকশীবাজার, আজিমপুর, নিউমার্কেট, সায়েন্স ল্যাব, জিগাতলা, ধানমন্ডি, শংকর, মোহাম্মদপুর, আদাবর, শ্যামলী, টেকনিক্যাল, মিরপুর পাইকপাড়া, মিরপুর-৬ ও মিরপুর-১১ ঘুরে দেখা হয়।
এ সময় প্রধান ও বড় সড়কগুলোর পাশে কিছু স্থানে কোরবানির বর্জ্য জমে থাকতে দেখা যায়। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার অলিগলি রাস্তাতেও বর্জ্য ফেলে রাখতে দেখা গেছে। অনেক জায়গায় বর্জ্য জমে না থাকলেও পশুর রক্ত, পয়োবর্জ্য জমে থাকতে দেখা গেছে। মালিবাগ, ওয়ারী, নিউমার্কেট, মোহাম্মদপুর ও মিরপুর-৬ নম্বর বাজারসংলগ্ন জায়গায় বড় রাস্তার পাশেও কোরবানির বর্জ্য জমে থাকতে দেখা গেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ জ র টন ক য় বর জ য পর ম ণ এল ক য় ঈদ র দ
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসুর বিবৃতি: বিএনপি তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে
জুলাই সনদে সই করলেও বিএনপি ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে, এমন বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। রোববার বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই বিপ্লব ছিল বৈষম্য, অবিচার ও ফ্যাসিবাদী শাসনকাঠামোর বিরুদ্ধে এ দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার সম্মিলিত বিপ্লব। শুধু সরকার পরিবর্তন নয়, বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ ও একটি বৈষম্যহীন-ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল বিপ্লবের মূল ভিত্তি। নতুন প্রজন্ম চেয়েছিল এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে কোনো প্রকার বৈষম্য ও রাজনৈতিক একচেটিয়া কর্তৃত্বের জায়গা থাকবে না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে জুলাই সনদে সই করলেও বিএনপি ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।
ডাকসুর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশেষত বিএনপি এমন সব মৌলিক সংস্কারের বিরোধিতা করেছে, যা সরাসরি ছাত্র-জনতার স্বপ্নের সঙ্গে জড়িত। পিএসসি, দুদক, ন্যায়পাল ও মহাহিসাব নিরীক্ষকের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগ নিশ্চিত করার সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়। কোনো রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব রাষ্ট্রগঠনমূলক সংস্কারের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে ছাত্র-জনতা সেই বাধা অতিক্রমে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেবে।