ট্রাম্পকে ঘিরে ‘যৌন কেলেঙ্কারি’র ইঙ্গিত, মাস্কের সেই পোস্ট উধাও
Published: 8th, June 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ধনকুবের ইলন মাস্কের তীব্র বিবাদের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট মুছে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) ইলন মাস্কের দেওয়া একটি আলোচিত পোস্টও রয়েছে।
ওই পোস্টে মাস্ক দাবি করেছেন, প্রয়াত ধনকুবের ও যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টেইন-সংশ্লিষ্ট নথিতে ট্রাম্পের নাম রয়েছে। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, এ কারণেই এসব নথি এখনো পুরোপুরি প্রকাশ করা হয়নি। তবে তিনি এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।
বৃহস্পতিবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্সে এমন অভিযোগ তুলেছিলেন মাস্ক। কিন্তু শনিবার ভোর থেকে মাস্কের এপস্টেইন-সম্পর্কিত পোস্টটি আর দেখা যাচ্ছে না। এক্স ব্যবহারকারীরা পোস্টটির জায়গায় দেখতে পান, ‘দুঃখিত, এই পোস্টটি মুছে ফেলা হয়েছে।’
এটাই মাস্কের মুছে ফেলা একমাত্র পোস্ট নয়। ওই দিনই আরেকটি উসকানিমূলক পোস্টে তিনি ‘হ্যাঁ’ লিখে সমর্থন জানিয়েছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল, ‘ট্রাম্প অভিশংসিত হওয়া উচিত’ এবং ‘ভ্যান্সকে (ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স) তাঁর জায়গায় আসা উচিত’। তবে সে পোস্টটিও এখন আর এক্স-এ দেখা যাচ্ছে না।
এসব পোস্ট মুছে ফেলার ঘটনাকে অনেকে ট্রাম্প ও মাস্কের মধ্যে চলমান বিরোধ কিছুটা কমে আসার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।
মাস্কের পোস্টগুলো এমন সময় দেওয়া হয়েছিল, যখন ট্রাম্পও কটাক্ষ করেছেন এবং মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্সের সঙ্গে যুক্ত সরকারি অর্থায়ন ও চুক্তি বাতিল করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।
ট্রাম্প ও ইলন মাস্কের এই বিরোধের সূচনা হয় ট্রাম্পের ‘বিগ, বিউটিফুল বিল’ নিয়ে মাস্ক যখন ক্ষোভ উগরে দেন। বর্তমানে বিলটি সিনেটের বিবেচনায় রয়েছে। টেসলার প্রধান নির্বাহী এই বিলকে ‘জঘন্য’ হিসেবে অভিহিত করেন। নিজের কোটি অনুসারীকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনার সিনেটরকে ফোন করুন, কংগ্রেসম্যানকে ফোন করুন; এই বিল আটকে দিন।’
আরও পড়ুনমার্কিন ধনকুবের এপস্টেইন: আত্মহত্যা না খুন?১১ আগস্ট ২০১৯শুক্রবার রাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি মাস্কের সঙ্গে কথা বলবেন কি না, যিনি কিছুদিন আগেও তাঁর প্রশাসনের ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি’র (ডিওজিই) নেতৃত্বে ছিলেন।
এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বলেন, ‘না, আমার তেমন কোনো পরিকল্পনা নেই; আমি এ নিয়ে ভাবিও না। আমি আসলে এসবে আগ্রহী নই। আমি দেশের কথা ভাবছি, সমস্যা সমাধানের কথা ভাবছি।’
২০১৯ সালে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগে জেফরি এপস্টেইন গ্রেপ্তার হওয়ার পর ওভাল অফিসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাঁর (এপস্টেইনের) সঙ্গে আমার সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। গত ১৫ বছরে আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলিনি। আমি তাঁর ভক্ত ছিলাম না, এটুকু আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি।’
আরও পড়ুনএপস্টেইনের যৌন কেলেঙ্কারি: নথিতে এবার হিলারি ক্লিনটনের নাম০৭ জানুয়ারি ২০২৪.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার এ–সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে ব্রাজিলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা মোট শুল্ক ৫০ শতাংশে দাঁড়াল। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, ব্রাজিল সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দমন–পীড়ন, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হয়রানি, সেন্সরশিপ এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো ও তাঁর হাজার হাজার সমর্থকের বিরুদ্ধে বিচারিক ব্যবস্থা গ্রহণ মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন। এগুলো ব্রাজিলে আইনের শাসনকে দুর্বল করে দিয়েছে।
ঘোষণায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ব্রাজিলের অস্বাভাবিক ও ব্যতিক্রমী নীতি ও পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো, মার্কিন নাগরিকদের মতপ্রকাশের অধিকার, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি ও অর্থনীতির ক্ষতি করছে। ঘোষণায় বলসোনারোর বিচারে যুক্ত ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেকজান্দ্রে মোরায়েসের নামও আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শতাব্দীপ্রাচীন বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। ব্রাসিলিয়ার সঙ্গে ওয়াশিংটনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ২৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার। তবে ট্রাম্পের আরোপ করা শুল্ক কবে থেকে কার্যকর হবে, তা হোয়াইট হাউসের ঘোষণায় জানানো হয়নি। এর আগে ১ আগস্ট থেকে শুল্ক কার্যকরের কথা জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।