পুঠিয়ায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগ
Published: 9th, June 2025 GMT
রাজশাহীর পুঠিয়ায় আওয়ামী লীগের সমর্থক আব্দুল হান্নানের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা ও ইউপি সদস্য রফিকের বিরুদ্ধে।
সোমবার দুপুরে পুঠিয়ার বানেশ্বর ইউনিয়নের হাতিনাদা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। অভিযুক্ত রফিক পুঠিয়ার বানেশ্বর ইউনিয়নের সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি।
আব্দুল হান্নানের ছেলে তরিকুল ইসলাম বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে রফিক মেম্বার। আজ দুপুরেও আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা দিতে রাজি না হলে রফিক ১০ থেকে ১২ জন সহযোগী নিয়ে আমাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ সময় আমরা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যাই।
তিনি আরও বলেন, আমার বাবা আওয়ামী লীগ সমর্থক হলেও আমি কোনো রাজনীতি করি না। আগুন দিতে এসে প্রথমে তারা লুটপাট করে। এ সময় স্বর্ণ ও ৫ লাখ টাকা নিয়ে যায়। আগুনে একটি ছাগল পুড়ে মারা গেছে, আরেকটি দগ্ধ হয়েছে।
আব্দুল হান্নান বলেন, রফিকের সঙ্গে আমার কোনো দ্বন্দ্ব নেই, তবুও কেন আমার বাড়ি পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে দিলো?
পলাতক থাকায় এ বিষয়ে রফিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তার ভাই নুরন্নবী বলেন, ‘‘আমার ভাইকে তরিকুল ‘ল্যাংড়া রফিক’ বলে কটূক্তি করে। প্রতিবাদ করলে নিজেরাই নিজেদের বাড়িতে আগুন দেয়। এখন রফিকের ওপর দোষ দিচ্ছে।’’
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ বলেন, রফিকের বিরুদ্ধে আগেও চাঁদাবাজির অভিযোগ পেয়েছি। যদি তিনি এ ঘটনায় জড়িত থাকেন, তাহলে আইনি ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুঠিয়া থানার তদন্ত (ওসি) দুলাল হোসেন বলেন, বিরালদহ হাতিনাদা গ্রামে একটি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। খবর পেয়ে পুলিশও সেখানে যায়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেব।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আগ ন ব এনপ ল টপ ট ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।