১৬৫৯ দিন পর ঢাকায় ফিরছে আন্তর্জাতিক ফুটবল। এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের সেই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ সিঙ্গাপুর। ঈদের ছুটির আমেজে এই ম্যাচ ঘিরে উৎসাহী পুরো দেশ, বিশেষ করে ঢাকার ফুটবলপ্রেমীরা। মঙ্গলবার (১১ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মাঠে গড়াবে গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচ। সমর্থকদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে আয়োজক বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।

বাফুফে জানায়, ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়, তবে স্টেডিয়ামের গেট খুলে দেওয়া হবে দুপুর ২টায়। অর্থাৎ যারা মাঠে খেলা দেখতে আসবেন, তাদের অপেক্ষা করতে হতে পারে প্রায় সাত ঘণ্টা।

নিরাপত্তার স্বার্থে দর্শকদের সঙ্গে ব্যাগ, পানির বোতল বা অতিরিক্ত কোনো সামগ্রী না আনার অনুরোধ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, যাদের কাছে বৈধ টিকিট নেই, তাদের স্টেডিয়ামের আশপাশে ভিড় না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে বড় পর্দায় খেলা দেখার ব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছে বাফুফে।

জাল টিকিট বা টিকিট সংক্রান্ত অনিয়ম রোধে নেওয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। এ বিষয়ে কোনো অনিয়ম পেলেই তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্টেডিয়াম চত্বরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোতায়েন থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে তিন নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশকারীদের জন্য। দৈনিক বাংলা ও রাজউক মোড় থেকে দুটি পৃথক লেন থাকবে—একটি শুধু দর্শকদের হাঁটার জন্য, অন্যটি যানবাহনের চলাচলের জন্য নির্ধারিত।

দীর্ঘ সময় গ্যালারিতে অবস্থান করার কথা মাথায় রেখে খাবার বা পানীয়র বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি বাফুফে। তবে ম্যাচ শুরু হওয়ার দেড় ঘণ্টা আগে থেকেই স্টেডিয়ামে গান-বাজনার আয়োজন থাকবে, যা একক আন্তর্জাতিক ম্যাচে দেশের ফুটবলে এবারই প্রথম।

সব মিলিয়ে আজকের  ম্যাচ ঘিরে এক অন্যরকম প্রস্তুতি নিয়েছে আয়োজক সংস্থা। এবার দেখার পালা, মাঠে কেমন পারফরম্যান্স দেখাতে পারেন জামাল ভূঁইয়ারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ