রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের হামলায় যুক্তরাজ্য ১০০ শতাংশ জড়িত: ম
Published: 10th, June 2025 GMT
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ অভিযোগ করে বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের ‘সন্ত্রাসী হামলায়’ যুক্তরাজ্য ১০০ শতাংশ জড়িত।
সোমবার (৯ জুন) মস্কোর ফিউচার ফোরাম-২০৫০-এ ভাষণ দিতে গিয়ে ল্যাভরভ বলেন, “যুক্তরাজ্যের সমর্থন ছাড়া ইউক্রেন অসহায় থাকত।” খবর আনাদোলুর।
তিনি রাশিয়ান নাগরিকদের ওপর ক্রমবর্ধমান হুমকির বিষয়ে সতর্ক করে বলেন, “এই হুমকিগুলো যথেষ্ট গুরুতর। স্পষ্টতই, সবগুলো হামলা সরাসরি ইউক্রেন চালিয়েছে, কিন্তু যুক্তরাজ্যের সমর্থন ছাড়া ইউক্রেন অসহায় হত।”
আরো পড়ুন:
আবারো রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে সফল হামলার দাবি ইউক্রেনের
ইউক্রেনে আবারো ব্যাপক হামলা রাশিয়ার, নিহত ৫
মন্ত্রী আরো বলেন, “সন্ত্রাসী হামলা আরো বৃদ্ধির ঝুঁকি রয়েছে। শক্রদের দমন করতে আমরা সবকিছু করবো। আমরা তাদেরকে আমাদের নাগরিকদের ক্ষতি করতে দেব না।”
রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক প্রসঙ্গে ল্যাভরভ বলেন, “জো বাইডেন যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সেই সময়ের তুলনায় মস্কো ও ওয়াশিংটন ইতিমধ্যেই ভালো অবস্থানে রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “একই সময়ে এটা স্পষ্ট যে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রস্তাবিত মধ্যবর্তী ও স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ওপর স্থগিতাদেশ ওয়াশিংটন গ্রহণ করবে না।” ক্রেমলিনের প্রস্তাবটি প্রত্যাখান করায় তিনি হোয়াইট হাউজের সমালোচনা করেন।
মধ্যবর্তী-পাল্লার পারমাণবিক বাহিনী চুক্তি (আইএনএফ চুক্তি) ছিল ১৯৮৭ সালের ডিসেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি যুগান্তকারী শীতল যুদ্ধ চুক্তি। এটি ৫০০ কিলোমিটার থেকে ৫,৫০০ কিলোমিটারের মধ্যে পাল্লার সমস্ত ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়ন, পরীক্ষা এবং মোতায়েনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।
চুক্তিটি ইউরোপে দুর্ঘটনাজনিত পারমাণবিক সংঘাতের ঝুঁকি হ্রাসে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিল।
২০১৯ সালে, যুক্তরাষ্ট্র আইএনএফ চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়, যার ফলে চুক্তিটি বাতিল হয়ে যায়। তারপর থেকে ন্যাটোর অব্যাহত ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ এবং পশ্চিমাদের কাছ থেকে পারস্পরিক সহযোগিতার অভাব নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে রাশিয়া ইউরোপে মাঝারি ও স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের উপর একতরফা স্থগিতাদেশ বজায় রেখেছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ য ক তর জ য ইউক র ন য ক তর জ য ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ