ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক, গোয়েন্দা থ্রিলার লেখক ফ্রেডেরিক ফোরসাইথ মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

ফ্রেডেরিক ফোরসাইথের মুখপাত্র জনাথন লয়েড এর বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা ও দ্য গর্ডিয়ান জানায়, ফোরসাইথ সোমবার (৯ জুন) বাকিংহামশায়ারের জর্ডানস গ্রামে নিজ বাড়িতে মারা যান।

জনাথন লয়েড বলেন, “আমরা বিশ্বের সেরা থ্রিলার লেখকদের একজনকে হারালাম। ‘দ্য ওডেসা ফাইল’ এবং ‘দ্য ডগস অব ওয়ার’-এর মতো ২৫টিরও বেশি বই (যার অধিকাংশ বই থ্রিলার) লিখেছেন তিনি, যা বিশ্বজুড়ে ৭৫ মিলিয়নেরও বেশি বিক্রি হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

আসছে অরুন্ধতী রায়ের নতুন বই ‘মাদার মেরি কামস টু মি’

নোবেলজয়ী লেখক হান ক্যাং এর সাহিত্য নিয়ে কালির বৈঠক

ফ্রেডেরিক ফোরসাইথ সর্বাধিক বিক্রিত ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক। ফোরসাইথ একসময় সংবাদ প্রতিবেদক এবং যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই সিক্সের তথ্যদাতা হিসেবে কাজ করেছেন। পরে তিনি ‘দ্য ডে অব দ্য জ্যাকেল’-এর মতো বিশ্ববিখ্যাত উপন্যাস রচনা করেন।

ফ্রেডেরিক ফোরসাইথের প্রকাশক বিল স্কট-কের বলেন, “লক্ষাধিক পাঠকের হৃদয়ে আজো অমলিন ফ্রেডির থ্রিলারগুলো। এই ধারাকে তিনি নতুন সংজ্ঞা দিয়েছেন, যা সমকালীন লেখকদের জন্য অনুপ্রেরণা।”

কেন তিনি লিখতেন
ঋণমুক্ত হওয়ার জন্য উপন্যাস লেখা শুরু করেছিলেন ফোরসাইথ। তখন তার বয়স ছিল ত্রিশের কোঠায়। পরে তার লেখা বইয়ের ৭ কোটি ৫০ লাখের বেশি কপি বিক্রি হয়।

২০১৫ সালে প্রকাশিত আত্মজীবনীতে ফোরসাইথ লিখেছিলেন, ‘দ্রুত অর্থ উপার্জনের অনেক উপায় আছে। কিন্তু সাধারণ তালিকায় উপন্যাস লেখার অবস্থান ব্যাংক ডাকাতির চেয়েও নিচে।’

প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি
তার প্রথম উপন্যাস ‘দ্য ডে অব দ্য জ্যাকাল’ (১৯৭১) লিখেই খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি বলেছিলেন, “আমি অর্থাভাবে, ঋণে ডুবে, বাসহীন, গাড়িহীন-কিছুই ছিল না। ভেবেছিলাম, এই সংকট থেকে কীভাবে বের হবো? তখনই সবচেয়ে পাগলাটে সমাধান মাথায় এলো-একটি উপন্যাস লিখব।”

এই উপন্যাসটি ১৯৬৩ সালের পটভূমিতে লেখা। যেখানে একজন ইংরেজকে ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট চার্লস দ্য গলকে হত্যার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। এটি একটি কাল্পনিক গল্প। ফোরসাইথ মাত্র ৩৫ দিনে দ্য ডে অব দ্য জ্যাকাল’ উপন্যাসটি লিখেছেন।

১৯৭১ সালে উপন্যাসটি প্রকাশের পরপরই ব্যাপক সাফল্য পান তিনি। পরবর্তী সময়ে এ গল্প অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। এর মধ্য দিয়েই ভেনেজুয়েলার বিপ্লবী ইলিচ রামিরেজ সানচেজ ‘কার্লোস দ্য জ্যাকাল’ উপাধি পান।

তার প্রথম উপন্যাস ‘দ্য ডে অব দ্য জ্যাকাল’ (১৯৭১) লিখেই খ্যাতি অর্জন করেন

এরপর ফোরসাইথ একের পর এক সর্বাধিক বিত্রিত উপন্যাস লিখেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘দ্য ওডেসা ফাইল’, ‘দ্য ডগস অব ওয়ার’। ২০১৮ সালে তার ১৮তম উপন্যাস ‘দ্য ফক্স’ প্রকাশিত হয়।

জন্ম ও কর্মজীবন 
১৯৩৮ সালে কেন্টে জন্মগ্রহণ করেন। ফোরসাইথ বিমানবাহিনীর পাইলট হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। বিভিন্ন ভাষায় তার অসাধারণ পারদর্শিতা ছিল। তিনি ফরাসি, জার্মান, স্প্যানিশ ও রুশ ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। ভাষার ওপর দক্ষতা থাকার কারণে ১৯৬১ সালে তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সে যোগ দেন। স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে তিনি রয়টার্সের হয়ে প্যারিস ও বার্লিনে নিয়োজিত ছিলেন।

ফোরসাইথ রয়টার্স ছেড়ে বিবিসিতে যোগ দেন। তবে প্রতিষ্ঠানটির আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই হতাশ হয়ে পড়েন। তার দাবি, নাইজেরিয়া নিয়ে সঠিকভাবে সংবাদ পরিবেশন করতে ব্যর্থ হয়েছে বিবিসি। তার মতে, বিবিসির প্রতিবেদনে আফ্রিকা সম্পর্কে ব্রিটিশ সরকারের উপনিবেশ–পরবর্তী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন দেখা গেছে।

জীবনের পরবর্তী পর্যায়ে ফ্রেডেরিক ফোরসাইথ রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেছিলেন। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নবিরোধী সংবাদপত্র ডেইলি এক্সপ্রেসে কলাম লিখতেন।

১৯৮৮ সালে ক্যারোল কানিংহ্যামের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর ফ্রেডেরিক ফোরসাইথ ১৯৯৪ সালে স্যান্ডি মলয়কে বিয়ে করেন। 

সূত্র: আল জাজিরা, গার্ডিয়ান

ঢাকা/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ বস হ ত য অব দ য জ য ক ল উপন য স ল খ প রক শ

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লা পুলিশের সহায়তায় আপন ঠিকানায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারী

নারায়নগঞ্জের জেলার ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের সহায়তায় আমেনা বেগম (৩৮) নামের এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারী ফিরে গেলো তার আপন ঠিকানায়। 

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে উদ্ধার মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  পরিবারের লোকজন কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। মানসিক প্রতিবন্ধী নারী কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার লনেস্বর গ্রামের জহিরুল হকের স্ত্রী। 

ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ জানায়, সোমবার রাত ১১ টার দিকে ফতুল্লা বাজার এলাকায় অস্বাভাবিক আচরন করতে থাকা মানসিক প্রতিবন্ধী নারীকে ঘিরে লোকজনের ভীড় উপস্থিতি দেখতে পেয়ে এগিয়ে যায় পুলিশ।

নারীটির আচরন ও কথাবার্তা শুনে মানসিক প্রতিবন্ধী  মনে হওয়ায় তাকে ফতুল্লা মডেল থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রতিবন্ধী নারীর বিচ্ছিন্নভাবে প্রদত্ত তথ্যের সমন্বয়ে থানা পুলিশ ধারণা করেন যে তার বাড়ী কুমিল্লা জেলার কোন এক জায়গায়।

মঙ্গলবার সকালে মানসিক প্রতিবন্ধী নারী নানা কথাবার্তার এক পর্যায়ে তার বাড়ী এবং পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে বিস্তারিত জানায়।পরবর্তীতে পুলিশ বেলা ১১ টার দিকে 

ঐ নারীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে। পরে কুমিল্লা থেকে বিকেল ৪ টার ঐ নারীর ভাই সহ পরিবারের অপর সদস্যরা থানায় এলে মানসিক প্রতিবন্ধী নারী আমেনা বেগম কে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে তুলে দেয়।

আমেনা বেগমের ভাই মোঃ মানিক জানায়,তার বোন মানসিক রুগী। বোন জামাই প্রবাসী। সোমবার সকাল ১০ টার দিকে নিজ বাসা থেকে পরিবারের সকলের অগোচরে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। তারা তাকে খুঁজে পেতে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ ও করতেছিলো।

মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে ফতুল্লা থানা পুলিশ তাদের কে মোবাইল ফোনে ফোন করে তার বোনকে পাওয়ার বিষয়টি জানায়। পরে চারটার দিকে তারা ফতুল্লা থানায় এসে তার বোনকে পায়।

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক গাজী শামীম জানান,নারীটি রাতে ঠিকমতো কিছু বলতে পারছিলোনা। সকালে তার সাথে দীর্ঘক্ষণ কথাবার্তার ফলে বাসার ঠিকানা জানতে পারেন। তখন সেখানকার থানার সাথে যোগাযোগ করেন।

থানা থেকে স্থানীয় মহিলা মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করেন। পরবর্তীতে ঐ মহিলার ইউপি সদস্যের মাধ্যমে নারীর পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ হয়। বিকেল চারটার দিকে ঐ নারীর পরিবারের সদস্যরা ফতুল্লা থানায় এলে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতিআগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন টিআইবির
  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • ডাকসুর ব্যালট পেপারে ২ ভোট নিয়ে যা বলছে নির্বাচন কমিশন
  • নরসিংদীতে ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি স্থগিত
  • দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা: দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • গাজায় পাগলের মতো বোমা ফেলছে ইসরায়েল
  • ফতুল্লা পুলিশের সহায়তায় আপন ঠিকানায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারী
  • শিবিরের এই সাফল্য জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতকে সুবিধা দেবে কি?
  • ফতুল্লায় প্রতারণা করে ১৫ লাখ টাকার রড নিলো প্রতারক চক্র, কুমিল্লায় গ্রেপ্তার ৩