বজ্রপাত থেকে ভয়াবহ আগুন, পুড়লো ৮ দোকান
Published: 11th, June 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে বজ্রপাতের পর এক মিনি মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ওই মার্কেটের ৮টি দোকান পুড়ে গেছে। স্থানীয়দের সহায়তা এবং ফায়ার সার্ভিসের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলেও, এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
মঙ্গলবার (১০ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৌর এলাকার ছাপিলাপাড়া হ্যামস কারখানার সামনে অবস্থিত একটি মিনি মার্কেটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মার্কেটটির মালিক স্থানীয় মৃত ইজ্জত আলী মুন্সির ছেলে ইলিয়াস আলী।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দিনব্যাপী প্রচণ্ড তাপদাহের পর রাত সাড়ে এগারোটার দিকে বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হয়। এসময় হঠাৎ মার্কেটের পাশে বিকট শব্দে বজ্রপাত ঘটে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি হোটেলের পেছনের দিক থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে এবং মুহূর্তেই তা পাশের কাপড়ের দোকান, ট্রেনিং সেন্টার ও অন্যান্য দোকানে ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। খবর পেয়ে শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মাহমুদুল হাসান বলেন, “বজ্রপাতের পর মার্কেটের একটি হোটেল থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এতে হোটেল, কাপড়ের দোকান, ট্রেনিং সেন্টার ও ইলেকট্রনিক দোকানের মালামাল পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।”
মার্কেটের মালিক ইলিয়াস আলী বলেন, “বৃষ্টির মধ্যেই হঠাৎ বজ্রপাতে একটি দোকানে আগুন ধরে যায়। পরে তা আশপাশের দোকানে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়দের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতায় বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে।”
এ ঘটনায় ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানা গেছে। আগুন লাগার প্রকৃত কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
ঢাকা/রফিক/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।