অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল যখন ঐতিহাসিক লর্ডসে ‘টেস্ট বিশ্বকাপ’ বা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে ব্যস্ত, তখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দল প্রস্তুতি নিচ্ছে শ্রীলঙ্কা সফরের। গলে ও কলম্বোতে দুই টেস্ট দিয়ে বাংলাদেশ ২০২৫-২৭ চক্রে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের যাত্রা শুরু করবে।

বাংলাদেশ কি কখনো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলতে পারবে? এরকম বড় মঞ্চে নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস কিংবা মুমিনুলররা কি যেতে পারবেন? টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে পা দেওয়ার আগে সেই প্রশ্নটাই গেল বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কোর্টে।

বৃহস্পতিবার মিরপুর শের-ই-বাংলায় সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অধিনায়ক এখনই অত বড় স্বপ্ন দেখছেন না বলেই জানালেন। নিজেদের সামর্থ্য এবং পারিপার্শ্বিক সব কিছু বিবেচনায় এনে অধিনায়ক মনে করছেন, ধীরে ধীরে এগোনোই ভালো।

আরো পড়ুন:

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে একদিনেই ১৪ উইকেটের পতন

টিভিতে আজকের খেলা 

তার ভাষ্য, ‘‘এটা (টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল) তো অনেক বড় স্বপ্ন। এত দূরে যদি আমি এখনই চিন্তা করি তাহলে আসলে বোকামি হবে আমার কাছে মনে হয়।’’

শেষ চক্রে বাংলাদেশ ১২ ম্যাচে মাত্র ৪টিতে জিতেছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ম্যাচের সিরিজ জিতেছিল। এছাড়া নিউ জিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছিল। এর আগের চক্রে সমান ম্যাচে মাত্র এক জয় এবং তারও আগের চক্রে সাত ম্যাচে কোনো জয় ছিল না বাংলাদেশের।

অধিনায়ক এই বাস্তবতাকেই সামনে এনে ছোট ছোট কদমে এগিয়ে যেতে চান, ‘‘ছোট ছোটভাবে যদি আমরা এগোতে পারি তাহলে খুব ভালো। কারণ, আপনি যদি দেখেন আমরা যখন শুরু করেছিলাম, এর আগের সার্কেলে মাত্র একটা ম্যাচ জিতেছিলাম। গত সার্কেলে আমরা চারটি ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। টার্গেট থাকবে যে, এবার আরও দুইটা তিনটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি। আমরা যদি এভাবে ছোট ছোট চিন্তা করে এগোতে পারি তাহলে কেন না? বাংলাদেশ দলও একদিন ফাইনাল খেলবে। কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ সামনের দুই বছরের মধ্যে গত বছরের থেকে কিভাবে ভালো রেজাল্ট করছি আমরা।’’

উন্নতির জন্য ঘরের মাঠে জেতার বিকল্প নেই। শেষ চক্রে যে চারটি জয় ছিল, বাংলাদেশের তিনটিই দেশের বাইরে। নিউ জিল্যান্ডকে দেশের মাটিতে হারিয়ে শুরু। এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্ট জয় এবং সবশেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে জয়। অথচ ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। ভারতের মাটিতে গিয়ে হয়েছে নাস্তানাবুদ। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বাইরে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও দেশের মাটিতে হেরেছে।

ঘরের মাঠে জয়ের বিকল্প নেই জানিয়ে শান্ত বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয় আমাদেরকে ঘরের মাঠে জিততে হবে। আমরা শেষ সার্কেলের ঘরের মাঠে খুবই বাজে ক্রিকেট খেলেছি। যদি ঘরের মাঠে জিততে পারতাম, তাহলে আমরা হয়তো আরও দুই-তিনটি ম্যাচ বেশি জিততে পারতাম। চিন্তা তো ওখানেই যে ঘরের মাঠে আমরা কিভাবে টেস্ট জিততে পারি। যখন ম্যাচ হবে তখন নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে খেলতে হবে। বাইরে ভালো হয়েছে—এই আত্মবিশ্বাসটা আমাদের কাজে দেবে। আমরা যদি এই বছর বাইরের মাটিতে রেজাল্ট করতে পারি তাহলে দেখা যাবে আমাদের এই বছরের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সার্কেলে আরও ভালো রেজাল্ট হবে।’’

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট স ট চ য ম প য়নশ প র ঘর র ম ঠ ফ ইন ল আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

সংক্রমণ রোধে এখনই পদক্ষেপ নিন

চীন, থাইল্যান্ড ও ভারতে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আমাদেরও চিন্তিত হওয়ার কারণ আছে বৈকি। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কিছু কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা যথেষ্ট নয় বলে মনে করি।

সরকারের পক্ষ থেকে সব স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জনপরিসরে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ঈদের ছুটি থেকে ফেরা যাত্রীদের মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু মাস্ক পরা বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি বিচ্ছিন্নভাবে দেখলে হবে না; প্রতিটি জনপরিসরে এটি কার্যকর করতে হবে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ গত রোববার সকাল আটটা থেকে গতকাল সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত চারজনের করোনা শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আর চলতি মাসে এ পর্যন্ত ২৬ জনের আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা গেছে। পুরো মে মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০। গত বৃহস্পতিবার দেশে করোনায় একজন মারা যান। করোনা সংক্রমণের কারণে স্বাস্থ্য বাতায়নের ১৬২৬৩ নম্বরে করোনাবিষয়ক কলের সংখ্যা বেড়ে গেছে। এটা করোনা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বাড়ারই নমুনা।

কিন্তু জনগণ সচেতন হলেই হবে না। করোনা পরীক্ষা ও টিকা সরবরাহের কাজটি করতে হবে সরকারকেই। জনস্বাস্থ্যবিদেরা করোনার সংক্রমণ রোধে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় পরীক্ষার কিটের মজুত থাকার কথা বললেও বাস্তবে তা নেই। প্রথম আলোর প্রতিবেদক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, সেখানে করোনা পরীক্ষার কিট নেই। রাজধানীর তিন বড় হাসপাতালের অবস্থা যখন এই, অন্যান্য হাসপাতালের চিত্র সহজেই অনুমেয়।

আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থা যে কত দুর্বল, সেটা বিগত করোনা মহামারির সময় হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া গেছে। করোনা পরীক্ষা থেকে চিকিৎসার প্রতিটি ধাপে রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। এবারও যাতে সে রকম পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে বিষয়ে সরকারের আগাম প্রস্তুতি প্রয়োজন। আর কাজটি একা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নয়; জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব সংস্থা ও বিভাগকে এ ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।

সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) প্রোগ্রাম ম্যানেজার এ এফ এম শাহাবুদ্দিন খান প্রথম আলোকে জানান, তাঁদের হাতে এখন ফাইজারের তৈরি ৩১ লাখ করোনার টিকা আছে। এর মধ্যে গত দুই মাসে ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৯০০ ডোজ ফাইজারের টিকা সব জেলায় পাঠানো হয়েছে, যার মেয়াদ শেষ হবে ৬ আগস্ট। এখন হাতে আছে আসলে ১৪ লাখ টিকা।

করোনার সম্ভাব্য বিস্তার রোধে অবিলম্বে পরীক্ষার সরঞ্জাম সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করার বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞদের মতে, যাঁরা বয়স্ক, অন্তঃসত্ত্বা, ভিন্ন কোনো জটিল রোগে ভুগছেন, তাঁদের জন্য তো বটেই, এমনকি যেসব ব্যক্তির সর্বশেষ টিকা নেওয়ার মেয়াদ ছয় মাস পার হয়ে গেছে, তাঁদেরও করোনার টিকা নেওয়া উচিত।

আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ করোনার বিস্তার ঘটার আগেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। আর জনসচেতনতার কাজটি করতে হবে সর্বস্তরে, সব খানে। প্রচারমূলক কাজে সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি ব্যবহার করতে হবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকেও।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফাইনাল খেলার স্বপ্নকে ‘বোকামি’ মনে হয় নাজমুলের
  • সংক্রমণ রোধে এখনই পদক্ষেপ নিন