১০ লাখ অ্যান্ড্রয়েড যন্ত্রে ছড়িয়েছে ‘ব্যাডবক্স ২.০’, সতর্ক করল এফবিআই
Published: 12th, June 2025 GMT
বিশ্বজুড়ে ১০ লাখের বেশি অ্যান্ড্রয়েড যন্ত্রে ছড়িয়ে পড়েছে ‘ব্যাডবক্স ২.০’ নামের একটি বিপজ্জনক ম্যালওয়্যার। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো এফবিআই বিষয়টি নিশ্চিত করে সতর্কতা জারি করেছে। ২০২৩ সালের শুরুর দিকে ম্যালওয়্যারটি প্রথম ধরা পড়ে ‘টি৯৫’ মডেলের একটি অ্যান্ড্রয়েড টিভি বক্সে, যা অ্যামাজনে বিক্রি হচ্ছিল। পরে দেখা যায়, চীনে তৈরি ব্র্যান্ডবিহীন স্মার্ট টিভি, স্ট্রিমিং যন্ত্র, ট্যাবলেট ও অন্যান্য ইন্টারনেট সংযুক্ত যন্ত্রেও এই ম্যালওয়্যার আগে থেকেই ইনস্টল করা অবস্থায় রয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান বিটসাইট জানায়, ম্যালওয়্যারটি এরই মধ্যে প্রায় ১৬ লাখ যন্ত্রে সংক্রমণ ঘটিয়েছে। এর মধ্যে কিছু যন্ত্র পরিচিত ব্র্যান্ড হিসেনস ও ইয়ানডেক্সের অ্যান্ড্রয়েড টিভিও রয়েছে। সংক্রমিত যন্ত্রগুলোর বেশির ভাগই পাওয়া গেছে ভারত, চীন, রাশিয়া, ব্রাজিল, ইউক্রেন ও বেলারুশে।
‘ব্যাডবক্স ২.
জার্মানির ফেডারেল ইনফরমেশন সিকিউরিটি অফিস জানায়, পুরোনো ফার্মওয়্যারচালিত স্ট্রিমিং যন্ত্র, মিডিয়া প্লেয়ার কিংবা ডিজিটাল ফটো ফ্রেমে এই ম্যালওয়্যার বেশি সক্রিয় থাকে। অনেক সময় এসব যন্ত্র আগে থেকেই ম্যালওয়্যারযুক্ত অবস্থায় বাজারে ছাড়া হয়। আবার ব্যবহারকারীরা নির্ভরযোগ্য নয়, এমন তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ ইনস্টল করলেও যন্ত্র সংক্রমিত হতে পারে। যন্ত্র হঠাৎ অতিরিক্ত গরম হওয়া, প্রসেসরের ব্যবহার বেড়ে যাওয়া, অস্বাভাবিক ধীরগতি কিংবা সেটিংসে পরিবর্তন—এসবই হতে পারে ব্যাডবক্স ম্যালওয়্যারের উপস্থিতির লক্ষণ।
ব্যাডবক্স ২.০ মূলত আগের ব্যাডবক্স বটনেটের উন্নত সংস্করণ। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা একাধিকবার এর বিরুদ্ধে অভিযান চালালেও ম্যালওয়্যারটির বিস্তার থামানো সম্ভব হয়নি। ২০২৪ সালে জার্মান কর্তৃপক্ষ একবার এর বটনেট পরিকাঠামো ধ্বংস করে দেয়। কিন্তু তার কয়েকদিন পরই এক নিরাপত্তা গবেষক জানান, ব্যাডবক্স আবারও সক্রিয় হয়েছে এবং দ্রুত সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। সে সময় জানা যায়, প্রায় ১ লাখ ৯২ হাজার যন্ত্র তখনো সংক্রমিত অবস্থায় ছিল।
সাইবার গোয়েন্দা সংস্থা হিউম্যানের সাটোরি থ্রেট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট জানায়, ২০২৫ সালের মার্চ মাস নাগাদ এই ম্যালওয়্যার বিশ্বজুড়ে ১০ লাখের বেশি ব্যবহারকারীর যন্ত্রে ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত এটি ২২২টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে বিস্তার ঘটিয়েছে।
সংক্রমিত যন্ত্রগুলো সাধারণত অ্যান্ড্রয়েড টিভি ওএস নয়, অ্যান্ড্রয়েড ওপেন সোর্স প্রকল্পভিত্তিক সফটওয়্যারে চালিত। যেহেতু এসব যন্ত্র গুগলের প্লে প্রটেক্ট সার্ভিসে অনুমোদিত নয়, সুরক্ষার দিক থেকেও তারা ঝুঁকিতে রয়েছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব য ডবক স ২ ০ ব যবহ র ম য লওয
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুতে এআই ব্যবহারে থাকবে শিথিলতা, তবে অপব্যবহার করা যাবে না: নির্বাচন কমিশন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ব্যবহারে শিথিলতা থাকবে। তবে এর অপব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য জুলফিকার মাহমুদ।
রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫-এর আচরণবিধিবিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদের এক দাবির জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধির ৭–এর ঘ ধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করা যাবে না। আমরা যারা ছোট সংগঠন, আমাদের তহবিল সীমিত। আমরা নির্বাচনী প্রচারের জন্য এআই ব্যবহার করে দু-এক মিনিটের ভিডিও বানিয়ে প্রচার কার্যক্রম চালাতে চাই। আমাদের দাবি, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন যেন শিথিল নীতি গ্রহণ করে।’
মুরাদ আরও বলেন, বিগত চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কিছু ত্রুটি লক্ষ করা গেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনকে স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও বিতর্কমুক্ত রাখার জন্য যতগুলো ভোটকক্ষ থাকবে, সব কটি সিসিটিভি ফুটেজের আওতায় রাখতে হবে। সবার জন্য সেই সিসিটিভি ফুটেজ উন্মুক্ত রাখতে হবে। ভোট গ্রহণকে স্বচ্ছ রাখার জন্য ভোটকক্ষের ভেতরে জাতীয় গণমাধ্যমকে সরাসরি সম্প্রচার করার অনুমতি দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জকসুর নির্বাচন কমিশনার জুলফিকার মাহমুদ বলেন, ‘এআই ব্যবহার করে বিভিন্নজনের চরিত্র হনন করা হয়, অপপ্রচার চালানো হয়। সেদিক থেকে চিন্তা করে এআই ব্যবহার নিষিদ্ধ রেখেছিলাম। তোমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এআই ব্যবহারে শিথিলতা থাকবে প্রচার–প্রসারে, তবে অপব্যবহার করা যাবে না। আর সরাসরি সম্প্রচারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আলোচনা করে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর নির্বাচন কমিশনার ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল সংগঠন ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা।