বাংলাদেশে কবিগুরুর কাছারি বাড়িতে হামলার ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে মোদিকে অনুরোধ মমতার
Published: 12th, June 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছারি বাড়িতে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি এ ব্যাপারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে লেখা চিঠিতে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার চিঠিতে মমতা ব্যানার্জি লেখেন, “বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঐতিহাসিক পৈতৃক বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনায় আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। কবি তাঁর জীবদ্দশায় বারবার এই স্থানে ভ্রমণ করেছেন এবং সেখানে থাকার সময়েই তাঁর অনেক শ্রেষ্ঠ রচনা বা লেখা হয়েছিল। কবির সৃজনশীলতা তাদের এই পৈতৃক সম্পত্তির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিল। যেটা ভাঙচুর করা হয়েছে তা কেবল একটি বাড়িই ছিল না, বরং আমাদের উপমহাদেশে সৃজনশীলতার এক বিশাল কর্মকান্ড।”
মমতার অভিমত “ভাঙচুরের ঘটনা কেবল মর্মান্তিকই নয়, বরং আমাদের জাতীয় গর্ব এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্যও দুর্ভাগ্যজনক। এটি আমাদের সংবেদনশীলতা, আমাদের লালিত সম্পদ এবং অতীতের জন্য আমাদের সাধারণ স্মৃতির উপর একটি জঘন্য আক্রমণ। স্বদেশী আন্দোলনের সময়, কবি সব মানুষের কাছে বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে তার সূক্ষ্ম কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে পেরেছিলেন। বাংলার মানুষের কাছে, এই হামলা কবির সাধারণভাবে প্রচলিত ঐতিহ্যের উপর একটি আক্রমণ। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অমূল্য ভান্ডার সৃষ্টির ক্ষেত্রে কবির মহৎ অবদানের কাছে উল্লেখযোগ্যভাবে ঋণী। আজ কবিগুরুর পূর্বপুরুষের সম্পর্কের শিখড়ে আঘাত করার অর্থ হলো মহান কবির অমর সৃষ্টির মূলে আঘাত করা- যা বিশ্বের ভাইবোনদের মধ্যে অন্তর্নিহিতভাবে বন্ধন তৈরি করেছিল।”
প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জানিয়ে মমতা লিখেছেন, “আমি আপনাকে অনুরোধ করব যে আপনি দয়া করে প্রতিবেশী দেশের সরকারের কাছে বিষয়টি অত্যন্ত জোরালোভাবে তুলে ধরুন, যাতে এই জঘন্য ও নির্বোধ কাজের জন্য দায়ীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে কোনো বিলম্ব না করা হয়। যদিও ইতিমধ্যেই অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তবুও ভবিষ্যতে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্মৃতিস্তম্ভগুলোর উপর যে কোনো হামলা রোধে একটি জোরালো আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ অত্যন্ত জরুরী। কারণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কেবল বাংলাতেই নয়, সমগ্র বিশ্বে খ্যাত।”
সুচরিতা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।
এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’
বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন
জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।
তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী