সিরাজগঞ্জে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক বাড়িতে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক বাড়ি যেভাবে ভাঙচুর করা হয়েছে; তার তীব্র নিন্দা জানিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন মমতা। 

আজ বৃহস্পতিবার চিঠিতে মমতা ব্যানার্জি লেখেন, ‘বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঐতিহাসিক পৈতৃক বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনায় আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। কবি তার জীবদ্দশায় বারবার এই স্থানে ভ্রমণ করেছেন এবং সেখানে থাকাকালীন সময়েই তার অনেক শ্রেষ্ঠ রচনা বা লেখা হয়েছিল। কবির সৃজনশীলতা তাদের এই পৈতৃক সম্পত্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিল। যেটা ভাঙচুর করা হয়েছে; তা কেবল একটি বাড়িই ছিল না, বরং আমাদের উপমহাদেশে সৃজনশীলতার এক বিশাল কর্মকাণ্ড। 

মমতার অভিমত, ‘ভাঙচুরের ঘটনা কেবল মর্মান্তিকই নয়, বরং আমাদের জাতীয় গর্ব এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্যও দুর্ভাগ্যজনক। এটি আমাদের সংবেদনশীলতা, আমাদের লালিত সম্পদ এবং অতীতের জন্য আমাদের সাধারণ স্মৃতির উপর একটি জঘন্য আক্রমণ। স্বদেশী আন্দোলনের সময়, কবি সব মানুষের কাছে বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে তার সূক্ষ্ম কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে পেরেছিলেন।’ 

বাংলার মানুষের কাছে, এই হামলা কবির সাধারণভাবে প্রচলিত ঐতিহ্যের ওপর একটি আক্রমণ। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অমূল্য ভান্ডার সৃষ্টির ক্ষেত্রে কবির মহৎ অবদানের কাছে উল্লেখযোগ্যভাবে ঋণী। আজ কবিগুরুর পূর্বপুরুষের সম্পর্কের শিখড়ে আঘাত করার অর্থ হলো- মহান কবির অমর সৃষ্টির মূলে আঘাত করা, যা বিশ্বের ভাইবোনদের মধ্যে অন্তর্নিহিতভাবে বন্ধন তৈরি করেছিল।

প্রধানমন্ত্রীকে আর্জি জানিয়ে মমতা লেখেন, ‘আমি আপনাকে অনুরোধ করব যে, আপনি দয়া করে প্রতিবেশী দেশের সরকারের সঙ্গে বিষয়টি অত্যন্ত জোরালোভাবে তুলে ধরুন, যাতে এই জঘন্য ও নির্বোধ কাজের জন্য দায়ীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে কোনো বিলম্ব না করা হয়। যদিও ইতিমধ্যেই অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তবুও ভবিষ্যতে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্মৃতিস্তম্ভগুলির ওপর যে কোনও হামলারোধে একটি জোরালো আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ অত্যন্ত জরুরি। কারণ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কেবল বাংলাতেই নয়, সমগ্র বিশ্বে খ্যাত।’

গত মঙ্গলবার (১০ জুন) এক দর্শনার্থীর সঙ্গে নিরাপত্তাকর্মীদের বাকবিতণ্ডার জেরে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে হামলা চালিয়ে অডিটোরিয়ামের জানালা দরজা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। এদিন দুপুরের দিকে শাহজাদপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে বিক্ষোভ মিছিলটি শাহজাদপুরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে ঢুকে পড়ে। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির কাস্টোডিয়ানের অফিস, লাইব্রেরী ও অডিটোরিয়ামের জানালা ও দরজা ভাঙচুর করে। এ সময় অডিটোরিয়াম, বিদ্যুৎ ও বাগান পরিচারক সিরাজুল ইসলামকে মারধর করে। 

প্রসঙ্গত, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি। ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলীতে নির্মাণ করা দোতলা ভবনটি এখন পরিচিত রবীন্দ্র স্মৃতি জাদুঘর নামে। ১৮৪০ সালে শাহজাদপুরের জমিদারি কিনে নেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। জমিদারির সঙ্গে তাদের মালিকানায় আসে কাছারি বাড়িটিও। শাহজাদপুর জমিদারি দেখাশোনার কাজে মাঝেমধ্যে এই বাড়িতে আসতেন রবীন্দ্রনাথ। ১৯৬৯ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বাড়িটিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কলক ত রব ন দ র ক ছ র ব ড় স র জগঞ জ আম দ র র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

নীল সমুদ্রে দক্ষিণ আফ্রিকার নীল বেদনা, ভারত বিশ্ব চ‌্যাম্পিয়ন

অনুমিত চিত্রনাট্যই যেন অনুসরণ করল মুম্বাইয়ের ফাইনাল ম্যাচ। ভারতের জার্সি গায়ে দর্শকে ঠাসা গ্যালারি রূপ নিল নীল সমুদ্রে। ২২ গজে আরও একবার ভারতের আধিপত‌্য, শাসন। যেন শিরোপার পায়চারি অনেক আগের থেকেই। 

ব‌্যাটিংয়ে পর্বত ছুঁই-ছুঁই রান। এরপর স্পিনে ফুল ফোটালেন স্পিনাররা। দক্ষিণ আফ্রিকা লড়াই করল সাধ‌্যের সবটুকু দিয়ে। ব্যাটে-বলে সহজে হাল ছাড়ল না তারাও। হৃদয় জিতলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাত্তাই পেল না। ভারতের শক্তি-সামর্থ‌্যের গভীরতার কাছে হার মানতেই হলো প্রোটিয়া নারীদের।

আরো পড়ুন:

৪১১ রানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৯ রানে হারল জিম্বাবুয়ে

কেন বিপিএল থেকে বাদ পড়ল চিটাগং কিংস

মুম্বাইয়ের নাভি স্টেডিয়ামের নীল সমুদ্রে সব আতশবাজি আজ রাতে ফুটল ভারতের বিশ্বকাপ  উদ্‌যাপনে। প্রথমবার ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডেতে বিশ্ব চ‌্যাম্পিয়ন। ৫২ রানের বিশাল জয় বুঝিয়ে দেয় হারমানপ্রীত কৌর, জেমিমা রদ্রিগেজ, দীপ্তি শর্মা কিংবা শেফালি বার্মা, স্মৃতি মান্ধানা, রিচা ঘোষরা ২২ গজকে কতটা আপন করে নিয়েছেন। শিরোপা জয়ের মঞ্চে ছাড় দেননি একটুও। ২০০৫ ও ২০১৭ বিশ্বকাপে যে ভুলগুলো হয়েছিল...সেগুলো আজ ফুল হয়ে ঝরল। 

বৃষ্টি বাঁধায় বিঘ্ন ম‌্যাচে আগে ব‌্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ২৯৮ রানের স্কোর পায় ভারত। ৪৫.৩ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ২৪৬ রান করতে পারে প্রোটিয়া নারীরা। নাডিন ডি ক্লার্ক শেষ ব‌্যাটসম‌্যান হিসেবে যখন আউট হলেন, স্টেডিয়ামের প্রায় ষাট হাজার ভারতীয় সমর্থকদের মুখে একটাই স্লোগান, চাক দে ইন্ডিয়া।

ওই জনসমুদ্রের স্লোগান, ‘ভারত মাতা কি জয়’, ‘বন্দে মাতরম’। 

বিস্তারিত আসছে …

 

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ