সূর্য
কাজলেন্দু দে
সোনালি মুহূর্তগুলি এমন অতীত
অদূরে হেতালবন
বালুচরে নিদ্রাতুর লাশ
মৃত জোনাকির পাশে দুর্লভ আতরের গন্ধ–
এইসব পার হয়ে মাঝে মাঝে
লাইভে এসে কথা বলে ঘাতক সময়।
তবু
সবুজ শ্যাওলা-ভেজা মাটির গভীরে
বীজ থেকে অঙ্কুরিত অসংখ্য উদ্ভিদ
অমোঘ সূর্যের টানে
উঠে আসছে ধীরে ধীরে মাটির উপরে–
একাকিত্ব
অদ্বৈত মারুত
শব্দহীন পথে প্রায় প্রতিদিন হাঁটি
পুড়িয়ে আমার আমিকে।
একটি প্রশ্ন– জন্মহীন, মৃত্যুহীন
অখণ্ড যৌবন-শিরায় ঢুকে পড়ে।
বিশ্বের সমস্ত স্পর্শ নীলোৎপল
হারিয়ে যাওয়া প্রার্থনার মতো!
নাকি আকাশভরা অনুপস্থিতি
বারবার নিজেকেই ঢেকে রাখে?
দুটি আত্মার নিঃশব্দ অভিসার
সমস্ত না-থাকার ভেতর তবু একা
নিঃসঙ্গতায় পরিপূর্ণ ভালোবাসা
ঘুমের আড়ালে কেবল দাঁড়িয়ে থাকে।
কবিতার বিছানা
ফেরদৌস নাহার
হেঁকেছে খিস্তি খেউড়
গলা চড়িয়ে বলেছে, কারাগারে এসেছ যখন, এই বেলা
কবিতার শত্রুতা দেখে নাও চোখে
রক্ত থেকে বের হয়ে রক্তকণিকারা হেসে ওঠে
সে বছর আসামি বাতাস এসে কারাগারের কাছাকাছি পৌঁছে
দিয়ে গেল কোমর ডুবে থাকা জলপিপির আর্তনাদ
জানালার চোখজুড়ে কাজল আঁকা। সেদিকে মুগ্ধতা নিয়ে
তাকাবার নেই সময়। প্রহরী এগিয়ে এসে তুলে নিয়ে যায়
ফটকের ওপারে। ওপারের আকাশ ঠিক নীল আছে কিনা
সে হিসাব কষতে কষতে মনচোখ খুঁজে বেড়ায় অদ্ভুত
উচ্চারণ, নির্জন আঁকিয়ে এঁকে যায় ছবি। তার কাছে
রং চাইতেই সেও বলে– কবিতা লেখা ছেড়ে দাও বাপু!
অবাক হয়নি, শুধু চলে গেছি করতল শূন্য কোরে
আঁধারের লীলাবালি ঘাটে, রঙ্গিণী নাচ দেখি
বাজি পোড়ার গন্ধ লাগে নাকে
এত যে উৎসব, এত যে ঘনঘটা বিমূর্ত নহবত
কিছুই তো পারছে না ঢেকে দিতে ঘোলাটে পরিচয়
আসামি বাতাস হাত ধরে পৌঁছে দেয় জীবাশ্ম ধসে
ঘন ধোঁয়া তপ্ত রোদ কবিতার বিছানায় পড়ে থাকে
একমুঠো রং
নাসিমা খান বকুল
ভালোবাসার একমুঠো রং নিয়ে
চল-না হারাই ব্যস্ত শহর ছেড়ে।
থামলি কেন চঞ্চল এই মন?
চল-না হেসে বাড়িয়ে দিয়ে হাত,
বাতাস না হয় নাচুক আমায় ঘিরে।
রঙিন ফুলে মরুক শহর ভিড়ে।
আমরা শুধু আঁকব স্বপ্ন চোখে,
ফুলের পরাগ হেসেছে দেখ চোখে–
একটা জীবন তোকে ভালোবেসে।
আমরা না হয় হবো বুনোফুল,
উঠব বেড়ে মেঠোপথের পাশে।
না হয় হবো রাজহাঁসেরই জোড়া
পুকুর ঘিরে থাকবে আলাপন।
হবি নাকি ভোরের দোয়েল পাখি
ডাকবি কেবল আমার জানলা ধারে।
শোন না তবে বুকের পাঁজর নাচে,
যেমন নাচে জলের ওপর ঢেউ।
পদ্মফুলের মাথায় খেলে কে সে
তুই নয়তো এ কোন গোখরো ফুল!
ভালোবাসা টলমল জল নয় গো
এ যে আমার সাধন ভারে পাওয়া
প্রতীক্ষিত চাতক পাখির চোখে
ছটফটানো নীরব জলের ছাওয়া।।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
উৎসব ঘুরে প্রেক্ষাগৃহে ‘বাড়ির নাম শাহানা’
কৈশোর পেরোনোর আগেই শাহানাবাড়ির মেয়ে দীপার বিয়ে হয়ে যায়। স্বামীর নির্যাতনের জাল ছিঁড়ে নিজের মতো করে বাঁচতে চেয়েছেন তিনি। নব্বইয়ের দশকের পটভূমিতে দীপার বেঁচে থাকার লড়াইয়ের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে বাড়ির নাম শাহানা।
সত্য কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত বাড়ির নাম শাহানায় দীপা চরিত্রে অভিনয় করেছেন আনান সিদ্দিকা। ছবিটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে কমলা কালেক্টিভ ও গুপী বাঘা প্রোডাকশন্স লিমিটেড।
নির্মাণের বাইরে লীসা গাজী লেখক, নাট্যকর্মী হিসেবে পরিচিত