নিখোঁজের এক দিন পর নদ থেকে একজনের লাশ উদ্ধার
Published: 13th, June 2025 GMT
রাজশাহীর বাগমারায় নিখোঁজের এক দিন পর নদ থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার হাসনিপুর টাটা ইটভাটার নিচে বারনই নদে লাশটি পাওয়া যায়।
মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম নাজমুল হক (৪৩)। তিনি বাগমারার গণিপুর ইউনিয়নের হাসনিপুর গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে। গত বুধবার সকাল থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি ছিলেন।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি নাজমুল। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাঁকে পাননি পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে বারনই নদের তীরে অবস্থিত টাটা ইটভাটার নিচে নদের পানিতে একজনের লাশ ভাসতে দেখেন শ্রমিকেরা। পরে তাঁরা অন্যদের জানালে লোকজন ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে ইটভাটার সামনে রাখেন। রাত আটটার দিকে নাজমুলের বাবা ঘটনাস্থলে এসে লাশ শনাক্ত করেন। তাঁর শরীরে জার্সি, হাতঘড়ি ও প্যান্টের পকেটে হেডফোন ছিল। তবে তাঁর মুঠোফোন পাওয়া যায়নি। শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না।
নাজমুলের বাবা আফজাল হোসেন বলেন, বুধবার ছেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর ছেলের লাশ পাওয়ার খবর পেয়ে ছুটে এসেছেন। কীভাবে মারা গেলেন তাঁর ছেলে তা বলতে পারেননি তিনি।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থলে লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। পুলিশের তথ্য সংগ্রহ চলছে। পরে এ বিষয়ে জানানো হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লাইলীকে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান আনোয়ার
বরগুনার বিষখালী নদীর পাড়ে বেড়ে উঠেছেন লাইলী বেগম। বাবার মৃত্যুর পর ভাইয়েরা অসুস্থ মায়ের দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানান, তখন কন্যা হয়েও লাইলী সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। অভাব, ক্ষুধা আর সমাজের অবহেলা তার নিত্যসঙ্গী হয়। তারপরও থেমে যাননি লাইলী।
জীবনের চাকা ঘুরাতে, মাছ ধরা থেকে বর্গাচাষ—সবই করেছেন লাইলী। গত ২১ বছর ধরে নদী ও সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বরগুনা জেলার সরকারিভাবে নিবন্ধিত একমাত্র নারী জেলে তিনি। এই লাইলীকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্যচিত্র ‘উত্তরের বৈঠা’। এটি নির্মাণ করেছেন আনোয়ার হোসেন।
পরিচালক আনোয়ার হোসেন
আরো পড়ুন:
জসীমের কবরে রাতুলকে সমাহিত করে দুই ভাইয়ের আবেগঘন পোস্ট
নীনার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরে কী বলেছিলেন ক্রিকেটার ভিভ?
এ নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেন পরিচালক আনোয়ার হোসেন। তরুণ এই নির্মাতা বলেন, “এই চলচ্চিত্র শুধু একজন নারী জেলের গল্প নয়, এটি একজন মানুষের বেঁচে থাকার অদম্য চেষ্টা, একাকিত্বে গড়ে ওঠা সাহসিকতার প্রতিচ্ছবি। লাইলী বেগম যখন নদীতে জাল ছুঁড়ে দেন, সেই মুহূর্তে তিনি শুধু মাছ খোঁজেন না—তিনি খুঁজে ফেরেন নিজের অবস্থান, নিজের সম্মান, আর অস্তিত্বের উত্তর।”
লাইলীর চোখ দিয়ে বাস্তবতা দেখাতে চেয়েছেন নির্মাতা। তার ভাষায়, “এই ফিল্মে আমি কোনো কৃত্রিম কণ্ঠ বা নাটকীয় ভাষা ব্যবহার করিনি। কারণ আমি চেয়েছি দর্শক যেন লাইলীর চোখ দিয়েই এই বাস্তবতা দেখেন। তার নীরবতা, তার কথাবার্তা, তার দৃষ্টি—সবই যেন একেকটি দৃশ্যপট হয়ে ওঠে। একজন নির্মাতা হিসেবে আমার দায়িত্ব ছিল শুধু একটি ফ্রেম তৈরি করে দেওয়া, বাকিটা বলে গেছেন লাইলী নিজেই—তার জীবনযাত্রা, নদী এবং অব্যক্ত যন্ত্রণা দিয়ে।”
‘লাইলী’-কে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান পরিচালক। তা জানিয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, “এই ফিল্মটি তাদের জন্য, যারা নিঃশব্দে লড়াই করেন এবং যারা কখনো আলোয় আসেন না। এখানে আমি সংক্ষিপ্ত আকারে প্রামাণ্য চিত্রটি তৈরি করেছি, পূর্ণদৈর্ঘ্য আকারে তৈরি করার প্রস্তুতি চলছে। আপনাদের সহযোগিতা ও আগ্রহ আমাকে অনুপ্রাণিত করবে। এই জীবন সংগ্রামের কথা বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চাই।”
সমাজের বাঁকা চোখ উপেক্ষা করে লাইলী প্রমাণ করেছেন, নারীর স্থান কেবল ঘরে নয়, সাহস আর সংগ্রামেও। লাইলী কেবল একজন নারী জেলে নন, এক অনুপ্রেরণার নাম। নারী চাইলে সব পারে—লাইলী তা নিঃশব্দে প্রমাণ করেছেন বলেও মনে করেন নির্মাতা।
ঢাকা/শান্ত