‘ক্যাশবাক্সে যা আছে বের কর, নইলে গুলি করে মাইরা ফালব’
Published: 13th, June 2025 GMT
দুই কিশোর হঠাৎ ‘খেলনা পিস্তল’ নিয়ে এল একটি দোকানে। এরপর পিস্তলটি টেবিলের ওপর রেখে দোকানের গ্লাসে একটি লাথি দেয়। বলতে থাকে, ‘ক্যাশবাক্সে যা আছে বের কর, নইলে গুলি করে মাইরা ফালব।’ এমন পরিস্থিতিতে আশপাশের দোকানিরা এগিয়ে এসে দুই কিশোরকে আটকে ফেলেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই কিশোরকে আটক করে এবং খেলনা পিস্তলটি উদ্ধার করে।
আজ শুক্রবার সকালে এমন ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের জামিরদিয়া বাদশা টেক্সটাইল মিল এলাকায়। স্থানীয় এক ডাকাতের কাছ থেকে তারা খেলনা পিস্তলটি নিয়ে দোকানটিতে গিয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর নাম মেহেদী হাসান। তিনি জামিরদিয়া বাদশা টেক্সটাইল মিলের ২ নম্বর গেট–সংলগ্ন এলাকায় মেসার্স খান হার্ডওয়্যার অ্যান্ড ইলেকট্রনিকসের দোকান পরিচালনা করেন। ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান বলেন, ‘কিশোরদের আমি আগে কখনো দেখিনি। হঠাৎ দুজন এসে কিছু না বলেই কোমর থেকে পিস্তল বের করে হুমকি দিতে থাকে। পিস্তলটি দেখে আসল পিস্তলের মতো মনে হয়। তখন আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। টাকা দাবি করে আমার সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা চলার সময় অন্য ব্যবসায়ীরা জড়ো হলে কিশোরদের আটকে ফেলা হয়।’
পুলিশ জানায়, আজ সকাল ১০টার দিকে মেহেদী হাসানের দোকানে দুই কিশোর এসে দাঁড়ায়। দুই কিশোরের একজনের বয়স ১৬ এবং একজনের বয়স ১৭ বছর। তারা দুজনই গফরগাঁও উপজেলার বাসিন্দা। দুই কিশোর দোকানটিতে গিয়ে মেহেদী হাসানের সামনে কোমর থেকে পিস্তলটি বের করে টেবিলে রাখে। ওই সময় একজন দোকানের একটি গ্লাসে লাথি দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। কিশোরেরা দোকানি মেহেদী হাসানকে বলতে থাকে, ‘ক্যাশবাক্সে যা আছে বের কর, নইলে গুলি করে মাইরা ফালব।’ ওই অবস্থায় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে দুই কিশোরকে আটকে ফেলে। খবর দেওয়া হয় সেনাবাহিনী ও পুলিশকে। পরে পুলিশ এসে দুই কিশোরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ ই ক শ রক ব যবস য় ব র কর
এছাড়াও পড়ুন:
লাইলীকে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান আনোয়ার
বরগুনার বিষখালী নদীর পাড়ে বেড়ে উঠেছেন লাইলী বেগম। বাবার মৃত্যুর পর ভাইয়েরা অসুস্থ মায়ের দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানান, তখন কন্যা হয়েও লাইলী সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। অভাব, ক্ষুধা আর সমাজের অবহেলা তার নিত্যসঙ্গী হয়। তারপরও থেমে যাননি লাইলী।
জীবনের চাকা ঘুরাতে, মাছ ধরা থেকে বর্গাচাষ—সবই করেছেন লাইলী। গত ২১ বছর ধরে নদী ও সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বরগুনা জেলার সরকারিভাবে নিবন্ধিত একমাত্র নারী জেলে তিনি। এই লাইলীকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্যচিত্র ‘উত্তরের বৈঠা’। এটি নির্মাণ করেছেন আনোয়ার হোসেন।
পরিচালক আনোয়ার হোসেন
আরো পড়ুন:
জসীমের কবরে রাতুলকে সমাহিত করে দুই ভাইয়ের আবেগঘন পোস্ট
নীনার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরে কী বলেছিলেন ক্রিকেটার ভিভ?
এ নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেন পরিচালক আনোয়ার হোসেন। তরুণ এই নির্মাতা বলেন, “এই চলচ্চিত্র শুধু একজন নারী জেলের গল্প নয়, এটি একজন মানুষের বেঁচে থাকার অদম্য চেষ্টা, একাকিত্বে গড়ে ওঠা সাহসিকতার প্রতিচ্ছবি। লাইলী বেগম যখন নদীতে জাল ছুঁড়ে দেন, সেই মুহূর্তে তিনি শুধু মাছ খোঁজেন না—তিনি খুঁজে ফেরেন নিজের অবস্থান, নিজের সম্মান, আর অস্তিত্বের উত্তর।”
লাইলীর চোখ দিয়ে বাস্তবতা দেখাতে চেয়েছেন নির্মাতা। তার ভাষায়, “এই ফিল্মে আমি কোনো কৃত্রিম কণ্ঠ বা নাটকীয় ভাষা ব্যবহার করিনি। কারণ আমি চেয়েছি দর্শক যেন লাইলীর চোখ দিয়েই এই বাস্তবতা দেখেন। তার নীরবতা, তার কথাবার্তা, তার দৃষ্টি—সবই যেন একেকটি দৃশ্যপট হয়ে ওঠে। একজন নির্মাতা হিসেবে আমার দায়িত্ব ছিল শুধু একটি ফ্রেম তৈরি করে দেওয়া, বাকিটা বলে গেছেন লাইলী নিজেই—তার জীবনযাত্রা, নদী এবং অব্যক্ত যন্ত্রণা দিয়ে।”
‘লাইলী’-কে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান পরিচালক। তা জানিয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, “এই ফিল্মটি তাদের জন্য, যারা নিঃশব্দে লড়াই করেন এবং যারা কখনো আলোয় আসেন না। এখানে আমি সংক্ষিপ্ত আকারে প্রামাণ্য চিত্রটি তৈরি করেছি, পূর্ণদৈর্ঘ্য আকারে তৈরি করার প্রস্তুতি চলছে। আপনাদের সহযোগিতা ও আগ্রহ আমাকে অনুপ্রাণিত করবে। এই জীবন সংগ্রামের কথা বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চাই।”
সমাজের বাঁকা চোখ উপেক্ষা করে লাইলী প্রমাণ করেছেন, নারীর স্থান কেবল ঘরে নয়, সাহস আর সংগ্রামেও। লাইলী কেবল একজন নারী জেলে নন, এক অনুপ্রেরণার নাম। নারী চাইলে সব পারে—লাইলী তা নিঃশব্দে প্রমাণ করেছেন বলেও মনে করেন নির্মাতা।
ঢাকা/শান্ত