অস্ট্রেলিয়া যত রানের লক্ষ্যই দিক, তাড়া করে ফেলার ‘বিশ্বাস’ আর ‘খুবই আত্মবিশ্বাস’ আছে বলে জানিয়েছিলেন ডেভিড বেডিংহাম। দক্ষিণ আফ্রিকার এই ব্যাটসম্যান যখন কথাটা বলেছেন, দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে তখনই অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে ২১৮ রানে।

আজ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের তৃতীয় দিনে অস্ট্রেলিয়া নিজেদের লিড নিয়ে গেছে ২৮১ রানে। যার অর্থ, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জিততে হলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে করতে হবে ২৮২ রান। আইসিসি টুর্নামেন্টে বারবার হোঁচট খাওয়া প্রোটিয়ারা কি এবার ট্রফি হাতে তুলতে পারবে?

লর্ডসে আজ ম্যাচের তৃতীয় দিনে অস্ট্রেলিয়া নেমেছিল দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেটে ১৪৪ রান নিয়ে। মিচেল স্টার্ক অপরাজিত ছিলেন ১৬ রানে, নাথান লায়ন ১ রানে। আজ দিনের তৃতীয় ওভারেই কাগিসো রাবাদার বলে ফেরেন লায়ন। তবে পরের উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকাকে খুব ভুগিয়েছেন স্টার্ক ও হ্যাজলউড।

এইডেন মার্করামের বলে হ্যাজলউড ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে অস্ট্রেলিয়ার দশম উইকেট জুটি ব্যাটিং করেছে ২২.

২ ওভার, যোগ করেছে ৫৯ রান। লর্ডসে অতিথি দলের দশম উইকেটে এটি পঞ্চম সর্বোচ্চ। হ্যাজলউড ৫৩ বলে ১৭ করে আউট হলেও স্টার্ক ১৩৬ বলে ৫৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন। এটি ছিল নয় নম্বরে নেমে তাঁর অষ্টম ফিফটি। টেস্ট ইতিহাসে নয় বা তার নিচে নামা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ (দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্টুয়ার্ট ব্রডের ৬) ফিফটির রেকর্ড।

প্রথম ইনিংসে ১৩৮ রানে অলআউট হয়ে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকাকে এখন নিজেদের পুরোনো কীর্তি ফেরাতে হবে। টেস্ট ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত পাঁচবার ২৫০ ‍+ রান তাড়া করে জেতার কীর্তি আছে দক্ষিণ আফ্রিকার, তিনবারই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। যার সর্বশেষটি ২০০৮ সালে পার্থের ওয়াকায়, ৪১৪ রান করে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

১৪ উইকেটের দিনটা কারোরই নয়

সঙ্গী ডেভিড বেডিংহামকে নিয়ে চুপচাপ বেরিয়ে গেলেন টেম্বা বাভুমা। দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়কের মুখে ছিল না হাসি। অস্ট্রেলিয়ার কারও কারও মুখে কিঞ্চিৎ হাসি লেগে ছিল। কিন্তু তা দেখে বোঝার উপায় নেই তাঁরা নির্ভার–চাপমুক্ত।

বরং কাগিসো রাবাদার তোপে প্রথম ইনিংসে ২১২ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর পাল্টা জবাব যে দিতে শুরু করেছে, অস্ট্রেলিয়ানদের অভিব্যক্তিতে সেটাই প্রকাশ পেয়েছে। তিন পেস ব্যাটারি মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজলউড ও প্যাট কামিন্স মিলে শেষ সেশনে তুলে নিয়েছেন প্রোটিয়াদের ৪ উইকেট।

ক্রিকেট–তীর্থ লর্ডসে তাতে যেন টেস্ট ক্রিকেটের সেকেলে দিনই ফিরে এল। তবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের প্রথম দিনে ১৪ উইকেট পড়লেও নির্দিষ্ট করে কাউকেই এগিয়ে রাখা গেল না। হাতে ৬ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা এখনো ১৬৯ রানে পিছিয়ে। আগামীকাল দ্বিতীয় দিনে দুই দলেরই লক্ষ্য থাকবে প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ার।

আজ টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠান বাভুমা। তাঁকে সঠিক প্রমাণ করতে দলের বোলাররা খুব বেশি সময় নেননি। রাবাদা–ইয়ানসেনের দারুণ বোলিংয়ে প্রথম সেশনেই ৪ উইকেট নেই অস্ট্রেলিয়ার। মধ্যাহ্ন বিরতির পর তবু স্বস্তিতে ছিল না প্রোটিয়ারা। কারণ, ‘লর্ডসের লর্ড’ হয়ে ওঠা স্টিভেন স্মিথ যে আরেকবার দেয়াল তুলে দাঁড়িয়েছিলেন!

কিন্তু খণ্ডকালীন স্পিনার এইডেন মার্করাম এসে পথের কাঁটা সরিয়েছেন। মার্করামের বলে তিনবারের চেষ্টায় ইয়ানসেন ক্যাচ নেওয়ার আগে স্মিথ করেছেন ৬৬ রান। আজ ইনিংসটি খেলার পথে একাধিক কীর্তি ছুঁয়ে ও ছাড়িয়ে গেছেন স্মিথ। লর্ডসে বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে এখন তিনিই সবচেয়ে বেশি রানের মালিক। ইংল্যান্ডের মাটিতে বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফিফটিও এখন তাঁর।

তবে টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৭তম বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে স্মিথের এসব কীর্তি ভুলিয়ে দিয়েছেন রাবাদা। টেস্টে এখন তাঁর উইকেট সংখ্যা ৩৩২। ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণে দক্ষিণ আফ্রিকার চতুর্থ শীর্ষ উইকেট শিকারি এখন তিনি। ছাড়িয়ে গেছেন কিংবদন্তি পেসার অ্যালান ডোনাল্ডকে (৩৩০)।

৭২ রান করে দিনের সেরা ইনিংস উপহার দিয়েছেন বো ওয়েবস্টার। তাঁর ইনিংসটির সুবাদেই অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ দুইশর ওপারে পৌঁছায়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৫৬.৪ ওভারে ২১২ অলআউট (ওয়েস্টার ৭২, স্মিথ ৬৬, ক্যারি ২৫, লাবুশেন ১৭; রাবাদা ৫/৫১, ইয়ানসেন ৩/৪৯, মার্করাম ১/৫, মহারাজ ১/১৯)।
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ২২ ওভারে ৪৩/৪ (রিকেলটন ১৬, বেডিংহাম ৮*, মুল্ডার ৬, বাভুমা ৩*, স্টাবস ২, মার্করাম ০; স্টার্ক ২/১০, হ্যাজলউড ১/১০, কামিন্স ১/১৪)।
* প্রথম দিন শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার ১৬৯ রানে পিছিয়ে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৪ উইকেটের দিনটা কারোরই নয়