ক্ষতিপূরণ দিয়ে বিচার থেকে পার পাওয়ার কয়েক সপ্তাহের মাথায় বড় দুর্ঘটনায় বোয়িং
Published: 13th, June 2025 GMT
ভারতের আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটি বোয়িং ৭৮৭ মডেলের, যা ড্রিমলাইনার হিসেবে পরিচিত। উড়োজাহাজটি ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো পরিষেবা শুরু করে। বোয়িংয়ের এই মডেলের আর কোনো উড়োজাহাজ এর আগে বিধ্বস্ত হয়নি।
তবে এর আগে বোয়িং ৭৮৭ মডেলের উড়োজাহাজে ইঞ্জিনজনিত নানা সমস্যা দেখা গেছে। এসব সমস্যার কারণে বিশ্বের অনেক এয়ারলাইনসকে নিজেদের বহর থেকে মডেলটির উড়োজাহাজ বসিয়ে রাখতে হয়েছে এবং ফ্লাইট কমাতে হয়েছে। তবে উড্ডয়নকালে এত দিন পর্যন্ত এর নিরাপত্তার রেকর্ড ভালোই ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এই মডেল নিয়ে গত কয়েক বছরে কিছু উদ্বেগজনক তদন্ত করতে বাধ্য হয়েছে। এর মধ্যে চিলির বহুজাতিক বিমান সংস্থা লাতামের একটি ফ্লাইটে মাঝ আকাশে আকস্মিক নিচে নামার ঘটনাও রয়েছে।
গত বছর এক গোপন তথ্য ফাঁসকারী (হুইসেলব্লোয়ার) মার্কিন কংগ্রেসে বলেছিলেন, নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি থাকায় ৭৮৭ মডেলের সব উড়োজাহাজ বন্ধ রাখা উচিত। বোয়িং তখন এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছিল, মডেলটির ওপর তাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ১ হাজার ১০০টির বেশি ৭৮৭ মডেলের উড়োজাহাজ চালু রয়েছে। বড় বড় আন্তর্জাতিক উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর কাছে মডেলটি জনপ্রিয়। কারণ, এটি আগের মডেলগুলোর তুলনায় অনেক কম জ্বালানি খরচ হয় এবং শব্দও কম করে।
এর আগে বোয়িংয়ের তৈরি উড়োজাহাজে দুটি বড় দুর্ঘটনা ঘটে। দুটি দুর্ঘটনাই ছিল মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটির ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের উড়োজাহাজে। একটি ইন্দোনেশিয়ায় ২০১৮ সালে, আরেকটি ইথিওপিয়ায় ২০১৯ সালে। মডেলটি তখন নতুন ছিল। কিন্তু এই দুই দুর্ঘটনার পর প্রায় এক বছর ৭৩৭ ম্যাক্স মডেল পরিষেবা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
আরও পড়ুনভারতে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত কী কারণে, বিশেষজ্ঞরা যা ভাবছেন২১ ঘণ্টা আগেগত মাসে বোয়িং যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সঙ্গে এক চুক্তিতে পৌঁছায়। এতে প্রতিষ্ঠানটি ১০১ কোটি ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৩ হাজার ৪৩৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা) ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়। এর মাধ্যমে তারা ওই দুটি দুর্ঘটনার জন্য ফৌজদারি বিচারের হাত থেকে রক্ষা পায়। তবে কিছু ভুক্তভোগী পরিবারের আইনজীবীরা এই চুক্তিকে ‘নৈতিকভাবে জঘন্য’ বলে মন্তব্য করেছেন।
ভারতের উড়োজাহাজ নিরাপত্তার অতীত অতটা ভালো ছিল না। তবে গত এক দশকে দেশটির উড়োজাহাজ পরিবহন খাত ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে। বেড়েছে যাত্রীসংখ্যাও। নিরাপত্তার দিক থেকেও এখন ভারতের রেকর্ড অনেক ভালো।
এয়ার ইন্ডিয়া বর্তমানে প্রায় ৩০টি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার পরিচালনা করে। তারা ২০১২ সাল থেকে মার্কিন কোম্পানিটির এই উড়োজাহাজ ব্যবহার করছে।
উড়োজাহাজ চলাচলের পরিসংখ্যান বলছে, ওঠানামার সময় বিমান দুর্ঘটনার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। ফ্লাইট রাডারের তথ্যমতে, ভারতে বোয়িংয়ের বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটি ৬২৫ ফুট উচ্চতায় পৌঁছেছিল।
এর আগে এয়ার ইন্ডিয়ার সর্বশেষ দুর্ঘটনা ঘটেছিল ২০২০ সালের আগস্টে। সেটি ছিল ছোট আকারের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের। সে সময় উড়োজাহাজটি খারাপ আবহাওয়ার কারণে কেরালার কালীকাট বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়েছিল।
আহমেদাবাদের দুর্ঘটনা সম্পর্কে বোয়িংয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক প্রতিবেদনের ব্যাপারে জানতে পেরেছি। আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছি।’
আরও পড়ুনআহমেদাবাদে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে১২ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের সাক্ষাৎ
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ।
রবিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরো পড়ুন:
‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’সহ ৩৮ দাবি সংবাদকর্মীদের
সাক্ষাৎকালে বিএসআরএফের সভাপতি মাসউদুল হক জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিবালয় বিটে কর্মরত অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের সচিবালয়ের ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে পত্র পাঠানো হলেও এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি।
তিনি অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের জন্য সচিবালয়ের ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা চালুর বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া সচিবালয়ের ১ নম্বর গেটের পাশাপাশি ৫ নম্বর গেট দিয়েও অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের সচিবালয়ে প্রবেশের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান।
এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বিএসআরএফের সভাপতির প্রস্তাব আন্তরিকভাবে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন।
সাক্ষাৎকালে বিএসআরএফের সহ-সভাপতি মাইনুল হোসেন পিন্নু, সাধারণ সম্পাদক উবায়দুল্লাহ বাদলসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এএএম/মেহেদী