পরিবারের সঙ্গে ঈদুল আজহা উদযাপন শেষে ঢাকায় ফিরছেন কর্মজীবী মানুষ। নৌ, সড়ক ও রেলপথে বেড়েছে যাত্রীর ভিড়। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার খবরেও তাদের অধিকাংশের মুখেই দেখা যায়নি মাস্ক। কিছু স্থানে যাত্রীর চাপ ঠেকাতে পরিবহন-সংশ্লিষ্টদের গলদঘর্ম হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কোথাও পরিবহন সংকটের অজুহাত দেখিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগও উঠেছে।
শুক্রবার সকালে কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে দেখা যায়, উত্তরবঙ্গের বেশির ভাগ মানুষ ট্রেনে ঢাকায় ফিরছেন। টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, লালমনিরহাট, সিরাজগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিনই কর্মজীবী মানুষ আসছেন। তবে এবারের ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় যাত্রীদের তেমন ভোগান্তি হয়নি।
সিলেট থেকে আসা রকিবুল ইসলাম বলেন, পরিবার নিয়ে ঈদের ছুটিতে সিলেট গিয়েছিলাম। যাতায়াতে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। ট্রেনেরও তেমন শিডিউল বিপর্যয় ছিল না।
কমলাপুর রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, ঈদ-পরবর্তী আমাদের যে কর্মসূচি ছিল তা এখনও অব্যাহত। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, যাতে সময়মতো ট্রেন আসা-যাওয়া নিশ্চিত করা যায়। এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেনি।
করোনা ঠেকাতে স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা যাত্রীদের বারবার অনুরোধ করছি মাস্ক পরে ট্রেনে ভ্রমণের জন্য। ঈদযাত্রার শুরু থেকেই এ সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে। তবে গতকাল সকাল থেকে যেসব ট্রেন ঢাকায় এসেছে, তার অধিকাংশ যাত্রীর মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। হাতেগোনা দু-একজন ছাড়া প্রায় সবাই মাস্ক ছাড়া এসেছেন।
গুলিস্তান, গাবতলী, ফুলবাড়িয়া, সায়েদাবাদ, দোলাইরপাড় ও রায়েরবাগ এলাকায় দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। কাপড়ের ব্যাগ ও কোরবানির মাংস হাতে ঢাকায় ফিরছেন চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। গুলিস্তানে দেখা গেছে, বাস ও মাইক্রোবাস থেকে শত শত মানুষ নামছে। তারপর রিকশা, অটোরিকশা বা লোকাল বাসে করে যাচ্ছে নিজ গন্তব্যে। যাত্রীরা বলেন, বাসে সিট পেতে কষ্ট হয়েছে। ভাড়াও আগের চেয়ে অনেক বেশি। ৩০০ টাকার বাস ভাড়া ৫০০ টাকা দিতে হয়েছে।
বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতির সদস্য তোফায়েল হোসেন বলেন, প্রতি ঈদের আগে-পরে বাসে মানুষের চাপ বাড়ে। এবার ছুটি লম্বা হওয়ায় অনেকেই দেরিতে ফিরছেন। অতিরিক্ত বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যাত্রীসংখ্যা এত বেশি, সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, যমুনা সেতুর পশ্চিম পারে সিরাজগঞ্জের ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের সয়দাবাদ গোলচত্বর থেকে কড্ডা পর্যন্ত থেমে থেমে ঢাকা অভিমুখে চাপ ছিল। দুপুর থেকে সন্ধা ৭টা পর্যন্ত যমুনা সেতুর পশ্চিম পারের সয়দাবাদ থেকে কড্ডা পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার অংশে থেমে থেমে ফিরতি যানবাহনের চাপ লক্ষ্য করা যায়। অন্যদিকে, যাত্রায় দুর্ভোগ ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করায় অনেক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি জানান, শুক্রবার দুপুর থেকে বিকেল নাগাদ যাত্রীদের ঢল নামে দৌলতদিয়া ঘাটে। মানুষের বাড়তি চাপ থাকলেও নেই কোনো ভোগান্তি নেই। যাত্রী হয়রানি বন্ধে ঘাট এলাকায় কাজ করছে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও ভ্রাম্যমাণ আদালত।
তবে পাটুরিয়া ও আরিচা ফেরি ঘাটে পরিবহন স্বল্পতায় কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে বলে জানান শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি। তিনি জানান, ঘাটে পরিবহন স্বল্পতার কারণ দেখিয়ে বাস মালিক ও শ্রমিকরা কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের কাছে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগণ ভাড়া বেশি নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন।
পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, শুক্রবারের ট্রেনগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। টিকিট কেটেও ট্রেনে উঠতে হিমশিম খান যাত্রীরা। এসি ও সাধারণ কোচ যাত্রী ভিড়ে একাকার। অনেকে ছাদে উঠে যান। ছাদে ওঠা
আটকাতে অভিযান চালানো হলেও সুযোগ পেলেই যাত্রীরা উঠে পড়ছেন বলে জানান পার্বতীপুর স্টেশনের নিরাপত্তা বাহিনীর চিফ ইনচার্জ হাসান শাহাবুল ইসলাম।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর বহন স
এছাড়াও পড়ুন:
নীল সমুদ্রে দক্ষিণ আফ্রিকার নীল বেদনা, ভারত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন
অনুমিত চিত্রনাট্যই যেন অনুসরণ করল মুম্বাইয়ের ফাইনাল ম্যাচ। ভারতের জার্সি গায়ে দর্শকে ঠাসা গ্যালারি রূপ নিল নীল সমুদ্রে। ২২ গজে আরও একবার ভারতের আধিপত্য, শাসন। যেন শিরোপার পায়চারি অনেক আগের থেকেই।
ব্যাটিংয়ে পর্বত ছুঁই-ছুঁই রান। এরপর স্পিনে ফুল ফোটালেন স্পিনাররা। দক্ষিণ আফ্রিকা লড়াই করল সাধ্যের সবটুকু দিয়ে। ব্যাটে-বলে সহজে হাল ছাড়ল না তারাও। হৃদয় জিতলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাত্তাই পেল না। ভারতের শক্তি-সামর্থ্যের গভীরতার কাছে হার মানতেই হলো প্রোটিয়া নারীদের।
আরো পড়ুন:
৪১১ রানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৯ রানে হারল জিম্বাবুয়ে
কেন বিপিএল থেকে বাদ পড়ল চিটাগং কিংস
মুম্বাইয়ের নাভি স্টেডিয়ামের নীল সমুদ্রে সব আতশবাজি আজ রাতে ফুটল ভারতের বিশ্বকাপ উদ্যাপনে। প্রথমবার ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডেতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। ৫২ রানের বিশাল জয় বুঝিয়ে দেয় হারমানপ্রীত কৌর, জেমিমা রদ্রিগেজ, দীপ্তি শর্মা কিংবা শেফালি বার্মা, স্মৃতি মান্ধানা, রিচা ঘোষরা ২২ গজকে কতটা আপন করে নিয়েছেন। শিরোপা জয়ের মঞ্চে ছাড় দেননি একটুও। ২০০৫ ও ২০১৭ বিশ্বকাপে যে ভুলগুলো হয়েছিল...সেগুলো আজ ফুল হয়ে ঝরল।
বৃষ্টি বাঁধায় বিঘ্ন ম্যাচে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ২৯৮ রানের স্কোর পায় ভারত। ৪৫.৩ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ২৪৬ রান করতে পারে প্রোটিয়া নারীরা। নাডিন ডি ক্লার্ক শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন আউট হলেন, স্টেডিয়ামের প্রায় ষাট হাজার ভারতীয় সমর্থকদের মুখে একটাই স্লোগান, চাক দে ইন্ডিয়া।
ওই জনসমুদ্রের স্লোগান, ‘ভারত মাতা কি জয়’, ‘বন্দে মাতরম’।
বিস্তারিত আসছে …
ঢাকা/ইয়াসিন