ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক অনেকের মনে জ্বালা ধরিয়েছে: রিজভী
Published: 14th, June 2025 GMT
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস ও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠক অনেকের মনে জ্বালা ধরিয়ে দিয়েছে। অনেকেই এটা মেনে নিতে পারছেন না। কেন এই জ্বালা ভাই আপনাদের? আপনাদের উদ্দেশ্যে কী?
শনিবার বিকেলে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর বীর মুক্তিযোদ্ধা কলেজ মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, দেশের বিরুদ্ধে সব সময়ই ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা কেউই এই ষড়যন্ত্রের বাইরে নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, ছাত্র-জনতার আন্দোলন এবং বিএনপি’র ১৫-১৬ বছরের এক রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গঠিত হয়েছে।
গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলন এর সভাপতিত্বে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রিয়াজুল হান্নানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় গবেষণা বিষয়ক শামীমুর রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা.
একটি রাজনৈতিক দলকে উদ্দেশ্য করে রুহুল কবীর রিজভী বলেন, আজকে আমাদের কিছু রাজনৈতিক বন্ধু উষ্মা প্রকাশ করেছেন, লন্ডনের বৈঠককে তারা বলেছেন নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ হবে। ভাই আপনাদের ইতিহাসটা বলুন তো দেখি। আপনারা কখন নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন? পাকিস্তান আন্দোলনে আপনারা সমর্থন করেননি। আপনারা ’৭১ সালে বিরোধিতা করেছেন। আপনারা ৮৬ সালে শেখ হাসিনার সঙ্গে নির্বাচন করেছেন। ৯৫ সালে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে হাসিনার সঙ্গে এক হয়ে আন্দোলন করেছেন। আপনারা এই বার ৫ আগস্টের পর বলেছেন আওয়ামী লীগকে মাপ করে দেব, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করব। তাহলে আপনাদের রাজনীতিটা কিসের রাজনীতি? রাজনীতি মানেই জনগণের কাছে ওয়াদা, জনগণের কাছে অঙ্গীকার।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ড ইউন স ত র ক রহম ন ব এনপ র আপন দ র র জন ত কর ছ ন আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
জামায়াতের তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন, জাপা ও চৌদ্দ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ ৫ দফা দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মগবাজার আল-ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
আরো পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধ না মানলে বাংলাদেশকে অস্বীকার করা হবে: জামায়াত নেতা আযাদ
জনগণ রায় দিলে দেশকে ৫ বছরেই দারিদ্র্যমুক্ত করা সম্ভব: শফিকুর রহমান
তিনি ৫ দফা দাবি তুলে ধরে বলেন, “জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করতে হবে, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে, ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করতে হবে এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।”
এসব দাবি বাস্তবায়নে তিন দিনে কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
কর্মসূচি হলো:
১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানী ঢাকায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল, ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের সব বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ মিছিল এবং ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের সব জেলা উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, অ্যাডভোকেট মোয়াযযম হোসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুর রব ও মোবারক হোমাইন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আবদুর রহমান মুসা, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ইয়াসিন আরাফাত এবং প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি আতাউর রহমান সরকার প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সরকার জুলাই জাতীয় ঘোষণা ও জুলাই জাতীয় সনদ প্রস্তুত করেছেন। একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জুলাই জাতীয় ঘোষণা ও জুলাই জাতীয় সনদের প্রয়োজনীয় সংশোধনীসহ তাদের পরামর্শ সরকারের নিকট উপস্থাপন করে। জামায়াতে ইসলামী বরাবরই জুলাই জাতীয় সনদকে আইনগত ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। জাতির ক্রান্তিলগ্নে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’ হিসেবে অতীতের বিভিন্ন নজির ও উদাহরণ তুলে ধরে জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তির বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান বারবার ব্যক্ত করে আসছে। আমরা মনে করি, জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তি প্রদান ব্যতীত ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অভ্যুত্থান ও তার অর্জন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে।
সরকার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সরকারের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ভয়ভীতিমুক্ত গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে আসছে। অতীত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ, ভোটকেন্দ্র দখল, পেশিশক্তি প্রদর্শন ও ভোটের বিভিন্ন অনিয়ম ও অপতৎপরতা বন্ধ, কোয়ালিটি-সম্পন্ন পার্লামেন্ট এবং দক্ষ আইনপ্রণেতা তৈরিসহ প্রতিটি ভোট মূল্যায়নের লক্ষ্যে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য জোর দাবি জানানো হয়েছে। এমনকি দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, কলামিস্ট, লেখক, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবির সাথে একমত পোষণ করেছেন। কিন্তু তারপরও জনগণের দাবিসমূহ কার্যকর করার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। এমতাবস্থায় জনগণের দাবি আদায়ের জন্য গণআন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। তাই জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও জবাবদিহিতামূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্ররূপে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৫-দফা গণদাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ