গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ও ঝালকাঠির নলছিটিতে পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া বাগেরহাটের মোল্লাহাটে মধুমতী নদীতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে মারা গেছেন এক বৃদ্ধ। শনিবার এসব ঘটনা ঘটে।

কোটালীপাড়ায় কুশলা ইউনিয়নের কান্দি আমবাড়ি গ্রামে পুকুরে ডুবে মারা যাওয়া শিশু সোহান শেখ (১৪) স্থানীয় হামিম শেখের ছেলে। শিশুর চাচা কামাল শেখ জানান, বেলা ১১টার দিকে সোহান বাড়ির উঠানে খেলছিল। কিছু সময় পর তাকে উঠানে না পেয়ে সবাই খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে সোহানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ দুধারিয়া গ্রামে খেলতে গিয়ে ঘরের পাশের পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায় রাফসান হাওলাদার (৫) নামের শিশুটি। রাফসান ওই গ্রামের আবু তালেব হাওলাদারের ছেলে। 

স্বজনরা জানান, দুপুরে রাফসানের মা রান্নার কাজ করছিলেন। রাফসান বাড়ির পাশে খেলছিল। এর ফাঁকে সে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। ছেলেকে না পেয়ে খুঁজতে শুরু করেন মা। একপর্যায়ে শিশুর স্বজনরা তাকে পুকুরের পানিতে ভাসতে দেখে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে এসে ঝরনায় পড়ে এক কিশোর নিহত হয়েছেন। শনিবার দুপুরে উপজেলার বারৈয়ারঢালা পাহাড়ি এলাকায় সহস্রধারা ঝরনায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তাহসিন আনোয়ার নোয়াখালীর লক্ষ্মীপুর থানার পাঁচপাড়া চন্দ্রগঞ্জ এলাকার আনোয়ার কবিরের ছেলে। সে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। বাবা-মায়ের সঙ্গে সে চট্টগ্রাম ডিওএইচএসে থাকত। 

এদিকে বাগেরহাটের মোল্লাহাটে মধুমতী নদীতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে মারা যান রতন মোল্লা (৭০)। দুপুরে উপজেলার গাফরা চরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রতন মোল্লা উপজেলার গাফরা এলাকার বাসিন্দা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত দ ই উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

জট কমাতে জাহাজ কমানোর উদ্যোগ

কনটেইনারভর্তি পণ্য নিয়ে একের পর এক জাহাজ আসছে। খালাস শেষে রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে বন্দর ছাড়ছে এসব জাহাজ। পণ্য পরিবহনের চাপ সামাল দিতে না পারায় বন্দরে কনটেইনার জাহাজের জট বাড়ছে। এই জট কমানোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের পথে চলাচলরত কনটেইনার জাহাজের সংখ্যা কমাতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

জাহাজ যাতে কম আসে সে জন্য বন্দরের নেওয়া পদক্ষেপ হতবাক করেছে শিপিং এজেন্টদের। শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, দুর্যোগের সময় ছাড়া কোনো বন্দরে চলাচলরত জাহাজের সংখ্যা কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার নজির বিশ্বে নেই। বরং বিশ্বের নানা বন্দর বা কনটেইনার টার্মিনালগুলোতে যাতে জাহাজ ভেড়ানো হয় সে জন্য শিপিং কোম্পানিগুলোকে উৎসাহ দেওয়া হয়। এ কাজের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বা টার্মিনাল পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলোর বিপণন বা বাণিজ্য দল রয়েছে। চট্টগ্রামে হচ্ছে উল্টোটা।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের পথে এখন ১১৮টি কনটেইনার জাহাজ নিয়মিত চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও চীনের বিভিন্ন বন্দরে এসব জাহাজ চলাচল করে। ২০ জুলাই বন্দরের এক সভায় বন্দরের পথে চলাচলরত ১৫টি জাহাজ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে ১৫টি জাহাজ কমানো হবে তার তালিকা শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনকে নিজ উদ্যোগে বন্দরকে দেওয়ার জন্য বলা হয় ওই সভায়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, জাহাজজটের কারণে বহির্বিশ্বে চট্টগ্রাম বন্দরের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান।

এ বিষয়ে জানতে বন্দর চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।

তবে শিপিং এজেন্টরা এখন পর্যন্ত কোনো জাহাজের নাম বন্দরকে দেয়নি, যেগুলো প্রত্যাহার করা হবে। তালিকা না দেওয়ায় গত মঙ্গলবার বন্দরের উপসংরক্ষক ক্যাপ্টেন মো. জহিরুল ইসলাম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে (বুধবারের মধ্যে) ১৫টি জাহাজের তথ্য দেওয়ার জন্য শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন, যেগুলো এই পথ থেকে প্রত্যাহার করা হবে।

শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, বন্দরের এ উদ্যোগ মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো। যেসব কারণে বন্দরে জাহাজজট হয়েছে, তা শনাক্ত করে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করা উচিত। জাহাজের সংখ্যা কমিয়ে জট কমবে না।

স্বাভাবিক সময় বন্দরের বহির্নোঙরে পাঁচ–ছয়টি জাহাজ অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু এখন জটের কারণে ক্রেনযুক্ত একেকটি জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর জন্য চার থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সাগরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

শিপিং ও বন্দর কর্মকর্তারা জানান, ঈদুল আজহার একটানা ১০ দিনের ছুটি, দুই দফায় পরিবহন ধর্মঘট, কাস্টমসের শাটডাউন কর্মসূচি ও কাস্টমসের শুল্কায়নের সফটওয়্যারের ধীরগতির কারণে বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এর জেরে কনটেইনার জাহাজের যে জট তৈরি হয়েছে, তা এখনো কমছে না। কারণ, কনটেইনারে পণ্য পরিবহন বাড়ছে।

এমন পরিস্থিতিতে বন্দরের নতুন উদ্যোগে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও শ্রীঙ্কার বন্দরগুলোতে বাংলাদেশমুখী কনটেইনারের জট তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন শিপিং এজেন্টরা। একইভাবে এসব বন্দর হয়ে ইউরোপ–আমেরিকামুখী রপ্তানি পণ্যের কনটেইনারের স্তূপ বাড়তে পারে ডিপোগুলোতে।

জানতে চাইলে কনটেইনার জাহাজ পরিচালনাকারী জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেডের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব অপারেশন মুনতাসীর রুবাইয়াত প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরের পথে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, চাহিদা বাড়লে কনটেইনার পরিবহনের ভাড়া বেড়ে যেতে পারে। এতে ভুক্তভোগী হতে পারেন ভোক্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ