‘চোকার্স’ শব্দটা আর শুনতে চায় না দক্ষিণ আফ্রিকা
Published: 15th, June 2025 GMT
দরকার মাত্র ৬৯ রান। হাতে উইকেট ৮টি, বাকি গোটা ২ দিন।
টেস্টে এমন সমীকরণে ব্যাটিং দলের পক্ষেই বাজি ধরবেন প্রায় সবাই। কিন্তু অন্য সব দল আর দক্ষিণ আফ্রিকার হিসাবটা এ ক্ষেত্রে ভিন্ন। বছরের পর বছর, টুর্নামেন্টের পর টুর্নামেন্ট গুরুত্বপূর্ণ সময়ে খেই হারিয়ে এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। যে কারণে নামের সঙ্গে জুড়ে গেছে ‘চোকার্স’ ট্যাগ। গতকাল বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের চতুর্থ দিন সকালে দক্ষিণ আফ্রিকা যখন জয়ের জন্য শেষ ৬৯ রান নিতে মাঠে নামে, তখন ওই ‘চোকার্স’ শব্দটিই কাজে লাগাতে চেয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
এইডেন মার্করাম আর টেম্বা বাভুমাকে কাবু করতে না পারা অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড়েরা দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ব্যাটসম্যানকে মনে করিয়ে দেন ‘তোমরা চোকার্স’, বাকি কয় রান তোলার আগেই অলআউট হয়ে যাবে। সৌভাগ্যবশত শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ২৭ বছরের মধ্যে প্রথমবার আইসিসির শিরোপা জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। জয়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের নায়ক মার্করাম বলেছেন, ‘চোকার্স’ শব্দটা তাঁর দল আর শুনতে চায় না।
দক্ষিণ আফ্রিকাকে ঘায়েল করতে অস্ট্রেলিয়া যে শেষ মুহূর্তে ‘চোকার্স’ অস্ত্র ব্যবহার করেছে, ফাইনালের পর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে সেটি বাভুমাই নিশ্চিত করেছেন। ৬৬ রানের ইনিংস খেলে দিনের প্রথম দিকে আউট হয়ে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক বলেন, ‘আমাদের ‘‘চোকার্স’’(চাপের মুখে ভেঙে পড়া দল) বলার ব্যাপারটা আজ (কাল) সকালে আবার উঠল। তাদের এক খেলোয়াড় বলেছিল, আমরা ৬০ রানের কমে ৮ উইকেট হারাতে পারি। আমি সেটা স্পষ্টভাবেই শুনেছি।’ তবে অস্ট্রেলিয়ানরা মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরি করলেও মার্করাম প্রতি ওভারের শেষে ‘আমাদের মনোযোগ ধরে রাখতে হবে’ বলে শক্ত থেকেছেন।
জয় থেকে ৬৫ রান দূরে থাকতে বাভুমা আউট হলেও মার্করাম এক প্রান্ত আগলে রেখেছেন দীর্ঘ সময়। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হওয়া এই ব্যাটসম্যান জয় থেকে ৬ রান দূরে আউট হয়েছেন অনবদ্য ১৩৬ রানের ইনিংস খেলে। হয়েছেন ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়ও।
৩০ বছর বয়সী মার্করাম জানান, ২০২৪ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্মৃতি তাঁকে তাড়িয়ে বেড়িয়েছে অনেক দিন। গত বছর জুনে বার্বাডোজে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ভারতের কাছে ৭ রানে হেরে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ নষ্ট করে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই ম্যাচে ৪ রানে আউট হওয়া মার্করাম এবার নিজের সেঞ্চুরি ও দলের সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘আগের রাতে আমি টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা অনেকবার ভেবেছি। সেদিন আউট হওয়ার পর কী অসহায় না লেগেছিল! তবে সেটা আমাকে একধরনের অনুপ্রেরণাও জুগিয়েছে যে আমাকে এবার ক্রিজে টিকে থাকতে হবে। খেলা শেষ করে আসতে হবে।’
১৯৯৮ সালে ঢাকায় আইসিসি নকআউট ট্রফি বাদ দিলে ১৯৯২ সাল থেকে প্রতিটি বড় টুর্নামেন্টেই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে চাপে ভেঙে পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং চ্যাম্পিয়নস ট্রফি মিলিয়ে মোট ১২ বার সেমিফাইনাল আর একবার ফাইনাল খেলেও ট্রফি জিততে পারেনি দলটি। এবার লর্ডসে সেই ‘ফাঁড়া’ কেটে যাওয়ার পর ‘চোকার্স’ শব্দটি আর শুনতে চান না মার্করাম, ‘অতীতে আমাদের নিয়ে যত প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, সৌভাগ্যবশত এখন সবকিছুরই উত্তর দেওয়া হয়ে গেছে। এটা (চোকার্স) আর না শুনলেই ভালো হয়, কথাটা জোর দিয়েই বলছি। এই তকমা ঝেড়ে ফেলা এই দলের জন্য অনেক বড় ব্যাপার।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র কর ম ব শ বক প ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে
৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।
প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।
আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।
প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।
পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।
আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’
আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫