ক্রেতা কম, ব্রয়লার মুরগির কেজি এখন ১৫০ টাকা
Published: 16th, June 2025 GMT
ঈদের পর রাজধানীর বাজারে এখনো ক্রেতা উপস্থিতি কম। আবার ঈদুল আজহার কোরবানি মাংসও রয়েছে বেশির ভাগ ঘরে। এ কারণে বাজারে কমেছে মুরগির দাম। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা দরে। ঈদের আগে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। সেই হিসাবে ঈদের ছুটির আগে–পরে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের লম্বা ছুটি শেষে এখনো অনেক মানুষ ঢাকায় ফেরেননি। আবার যাঁরা ফিরেছেন, তাঁদের অনেকের বাসাতেই কোরবানির মাংস রয়েছে। ফলে মুরগির মাংসের চাহিদা এখন কম। এ কারণে বিক্রেতারা সীমিত লাভেই মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন।
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের আগে বাজারে অনেকটা স্থিতিশীল ছিল মুরগির দাম। তবে ঈদের বন্ধের সময় হঠাৎ করে মুরগির দাম বেড়ে যায়। সেই দাম এখন অনেকটাই কমে গেছে। গত চার-পাঁচ দিনের মধ্যে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
আজ সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, এই বাজারের মুরগির দোকানগুলোতে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। একসঙ্গে কয়েক কেজি কিনলে প্রতি কেজি ১৫০ টাকাতেও বিক্রি করছেন এই বাজারের বিক্রেতারা। আর কারওয়ান বাজারের মুরগির দোকানে কোনো ধরনের দামাদামি ছাড়াই ১৫০ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে। অথচ চার দিন আগেও প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
ব্রয়লারের পাশাপাশি সোনালি মুরগির দামও কমেছে। আজ বাজারে প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়। হাইব্রিড ধরনের সোনালি মুরগির দাম আরও কিছুটা কম; কেজি ২৪০-২৫০ টাকা। চার-পাঁচ দিন আগে প্রতি কেজি সোনালি মুরগির ২৮০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
এদিকে মুরগির দাম কমা নিয়ে ক্রেতারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। মিজানুর রহমান নামের একজন গতকাল রোববার তাঁর ফেসবুক ওয়ালে লেখেন, ‘বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম ১৫০ টাকা কেজি দেখলাম। এটা কি কোরবানির ঈদের প্রভাব, নাকি সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার ফল।’
মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে মুরগি কিনতে আসা খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই ১৮০-২০০ টাকার মধ্যে ব্রয়লার মুরগি কিনছি। এখন হঠাৎ করে অনেক কম দামে (১৫০ টাকা) মুরগি কেনার সুযোগ পেয়েছি।’
তবে বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের দীর্ঘ ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফেরা মানুষের বড় অংশই এখনো বাজারে আসতে শুরু করেনি। আবার ঘরে ঘরে এখন কোরবানির মাংস রয়েছে। ফলে বাজারে মুরগির ক্রেতা একাবারেই কম। এ কারণে সীমিত লাভে বিক্রি করছেন তাঁরা।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের মুরগি বিক্রেতা আরশাদ মিয়াজি বলেন, ‘আমি গতকাল ও আজ প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৪০-১৪৫ টাকায় কিনে ১৫০-১৬০ টাকায় বিক্রি করেছি। সাধারণ সময়ে এই মুরগিই ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতাম।’ আরশাদ মিয়াজি আরও জানান, সাধারণ সময়ে তাঁর দোকানে ১৫০ থেকে ২০০টি মুরগি বিক্রি হয়। এখন বিক্রি কমে ৬০-৭০টিতে নেমেছে। এ কারণে গ্রাহক পেলেই মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন তিনি।
মুরগির পাশাপাশি ডিমের দামও সামান্য কমেছে। বাজারে প্রতি ডজন ডিম এখন ১২০-১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগে এই দাম ডজনপ্রতি ৫ টাকা বেশি ছিল।
দাম কমার তালিকায় আরও রয়েছে গরু, খাসির মাংস ও ইলিশ মাছ। কোরবানির পর দোকান থেকে গরুর মাংস কেনার চাহিদা একেবারেই কমে গেছে। এ কারণে বাজারে গরুর মাংস বিক্রির বেশির ভাগ দোকানই বন্ধ দেখা গেছে। যেসব দোকান খোলা রয়েছে, তারা মূলত বিভিন্ন পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য অর্ডার করা মাংস সরবরাহের কাজ করছে। খাসির মাংস বিক্রিতেও অনেকটা একই চিত্র দেখা গেছে।
গ্রাহক কম থাকায় গরু ও খাসির মাংসের দাম কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা কম রাখছেন বিক্রেতারা। তাতে প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা এবং গরুর মাংস ৭০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের খাসির মাংস বিক্রেতা মো.
বাজারে ইলিশ মাছের দামও ঈদের আগের তুলনায় কেজিতে ২০০-৪০০ টাকা কম দেখা গেছে। ৮০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০-১৬০০ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, ইলিশের ক্রেতারা এখনো বাজারমুখী হননি। ফলে গ্রাহক কম, সে তুলনায় সরবরাহ বেশি। এ কারণে দাম কমিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে তাঁদের। তবে বাজারে অন্যান্য চাষের মাছ মোটামুটি আগের দামেই বিক্রি হতে দেখা গেছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম হ ম মদপ র ম রগ র দ ম র ম রগ র দ ক রব ন র ১৫০ ট ক
এছাড়াও পড়ুন:
ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ
বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।
এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।
জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদবৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’
‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’