ঈদের পর রাজধানীর বাজারে এখনো ক্রেতা উপস্থিতি কম। আবার ঈদুল আজহার কোরবানি মাংসও রয়েছে বেশির ভাগ ঘরে। এ কারণে বাজারে কমেছে মুরগির দাম। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা দরে। ঈদের আগে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। সেই হিসাবে ঈদের ছুটির আগে–পরে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের লম্বা ছুটি শেষে এখনো অনেক মানুষ ঢাকায় ফেরেননি। আবার যাঁরা ফিরেছেন, তাঁদের অনেকের বাসাতেই কোরবানির মাংস রয়েছে। ফলে মুরগির মাংসের চাহিদা এখন কম। এ কারণে বিক্রেতারা সীমিত লাভেই মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন।

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের আগে বাজারে অনেকটা স্থিতিশীল ছিল মুরগির দাম। তবে ঈদের বন্ধের সময় হঠাৎ করে মুরগির দাম বেড়ে যায়। সেই দাম এখন অনেকটাই কমে গেছে। গত চার-পাঁচ দিনের মধ্যে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

আজ সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, এই বাজারের মুরগির দোকানগুলোতে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। একসঙ্গে কয়েক কেজি কিনলে প্রতি কেজি ১৫০ টাকাতেও বিক্রি করছেন এই বাজারের বিক্রেতারা। আর কারওয়ান বাজারের মুরগির দোকানে কোনো ধরনের দামাদামি ছাড়াই ১৫০ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে। অথচ চার দিন আগেও প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

ব্রয়লারের পাশাপাশি সোনালি মুরগির দামও কমেছে। আজ বাজারে প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়। হাইব্রিড ধরনের সোনালি মুরগির দাম আরও কিছুটা কম; কেজি ২৪০-২৫০ টাকা। চার-পাঁচ দিন আগে প্রতি কেজি সোনালি মুরগির ২৮০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

এদিকে মুরগির দাম কমা নিয়ে ক্রেতারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। মিজানুর রহমান নামের একজন গতকাল রোববার তাঁর ফেসবুক ওয়ালে লেখেন, ‘বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম ১৫০ টাকা কেজি দেখলাম। এটা কি কোরবানির ঈদের প্রভাব, নাকি সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার ফল।’

মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে মুরগি কিনতে আসা খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই ১৮০-২০০ টাকার মধ্যে ব্রয়লার মুরগি কিনছি। এখন হঠাৎ করে অনেক কম দামে (১৫০ টাকা) মুরগি কেনার সুযোগ পেয়েছি।’

তবে বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের দীর্ঘ ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফেরা মানুষের বড় অংশই এখনো বাজারে আসতে শুরু করেনি। আবার ঘরে ঘরে এখন কোরবানির মাংস রয়েছে। ফলে বাজারে মুরগির ক্রেতা একাবারেই কম। এ কারণে সীমিত লাভে বিক্রি করছেন তাঁরা।

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের মুরগি বিক্রেতা আরশাদ মিয়াজি বলেন, ‘আমি গতকাল ও আজ প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৪০-১৪৫ টাকায় কিনে ১৫০-১৬০ টাকায় বিক্রি করেছি। সাধারণ সময়ে এই মুরগিই ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতাম।’ আরশাদ মিয়াজি আরও জানান, সাধারণ সময়ে তাঁর দোকানে ১৫০ থেকে ২০০টি মুরগি বিক্রি হয়। এখন বিক্রি কমে ৬০-৭০টিতে নেমেছে। এ কারণে গ্রাহক পেলেই মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন তিনি।

মুরগির পাশাপাশি ডিমের দামও সামান্য কমেছে। বাজারে প্রতি ডজন ডিম এখন ১২০-১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগে এই দাম ডজনপ্রতি ৫ টাকা বেশি ছিল।

দাম কমার তালিকায় আরও রয়েছে গরু, খাসির মাংস ও ইলিশ মাছ। কোরবানির পর দোকান থেকে গরুর মাংস কেনার চাহিদা একেবারেই কমে গেছে। এ কারণে বাজারে গরুর মাংস বিক্রির বেশির ভাগ দোকানই বন্ধ দেখা গেছে। যেসব দোকান খোলা রয়েছে, তারা মূলত বিভিন্ন পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য অর্ডার করা মাংস সরবরাহের কাজ করছে। খাসির মাংস বিক্রিতেও অনেকটা একই চিত্র দেখা গেছে।

গ্রাহক কম থাকায় গরু ও খাসির মাংসের দাম কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা কম রাখছেন বিক্রেতারা। তাতে প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা এবং গরুর মাংস ৭০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের খাসির মাংস বিক্রেতা মো.

শাহাবুদ্দিন বলেন, কোরবানি ঈদের পর গরু-খাসির মাংসের চাহিদা এ রকমই কম থাকে। এ কারণে আমরাও লাভ কমিয়ে বিক্রি করছি।

বাজারে ইলিশ মাছের দামও ঈদের আগের তুলনায় কেজিতে ২০০-৪০০ টাকা কম দেখা গেছে। ৮০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০-১৬০০ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, ইলিশের ক্রেতারা এখনো বাজারমুখী হননি। ফলে গ্রাহক কম, সে তুলনায় সরবরাহ বেশি। এ কারণে দাম কমিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে তাঁদের। তবে বাজারে অন্যান্য চাষের মাছ মোটামুটি আগের দামেই বিক্রি হতে দেখা গেছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম হ ম মদপ র ম রগ র দ ম র ম রগ র দ ক রব ন র ১৫০ ট ক

এছাড়াও পড়ুন:

উৎসব ঘুরে প্রেক্ষাগৃহে ‘বাড়ির নাম শাহানা’

কৈশোর পেরোনোর আগেই শাহানাবাড়ির মেয়ে দীপার বিয়ে হয়ে যায়। স্বামীর নির্যাতনের জাল ছিঁড়ে নিজের মতো করে বাঁচতে চেয়েছেন তিনি। নব্বইয়ের দশকের পটভূমিতে দীপার বেঁচে থাকার লড়াইয়ের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে বাড়ির নাম শাহানা।

সত্য কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত বাড়ির নাম শাহানায় দীপা চরিত্রে অভিনয় করেছেন আনান সিদ্দিকা। ছবিটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে কমলা কালেক্টিভ ও গুপী বাঘা প্রোডাকশন্স লিমিটেড।

নির্মাণের বাইরে লীসা গাজী লেখক, নাট্যকর্মী হিসেবে পরিচিত

সম্পর্কিত নিবন্ধ