‘শ্রমজীবীদের’ ডেকে এনে বিপদে ফেলল ফিফা!
Published: 16th, June 2025 GMT
ক্লাব বিশ্বকাপে ১০-০ গোলের ম্যাচ আগে দেখেনি কেউ। নতুন ফরম্যাটের ক্লাব বিশ্বকাপে সেটাই দেখল ফুটবল ভক্তরা। অথচ বিশ্বকাপের মতো এক মাসের এই টুর্নামেন্টের লক্ষ্য আরও প্রতিযোগিতাপূর্ণ ম্যাচ আয়োজন করা এবং সকল মহাদেশের দলকে সুযোগ দেওয়া।
সুযোগ নিশ্চিত করতে গিয়ে নিউজিল্যান্ডের অপেশাদার ক্লাব অকল্যান্ড সিটি এফসিকে আমন্ত্রণ জানায় ফিফা। যে দলটির অধিকাংশই শখের বসে ফুটবল খেলেন। বাকি সময় তাদের কাজের মধ্যে থাকতে হয়।
বায়ার্ন মিউনিখের হ্যারি কেইন, জামাল মুসিয়ালা, টমাস মুলারদের সরাসরি দেখাই যাদের স্বপ্ন, তাদের বিপক্ষে খেলতে পারা স্বাদ মেটার মতো। তবে শখের তোলা আশি টাকার মতো ১০-০ গোলে হারের লজ্জায় ডুবতে হয়েছে তাদের। হেরে মাথা নিচু করে বলতে হয়েছে, ‘ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া আমরাই একমাত্র শ্রমজীবী দল।’
ক্লাব বিশ্বকাপের কোটা পূরণ করতে ওশেনিয়া অঞ্চল থেকে অকল্যান্ড সিটিকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ওই দলের সবাই শখের বশে ফুটবল খেলেন। কেউ মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ, কেউ ডেইরি ফার্মে খাবার সরবরাহ করেন, কেউ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। ফিফার টুর্নামেন্টে খেলতে অনেককেই চাকরি থেকে কিনা বেতনে ছুটি নিতে হয়েছে।
তারা এতোটাই শখের বশে ফুটবল খেলা দল যে ফুটবলাররা সপ্তাহে বেতন পান সর্বোচ্চ মাত্র ৯০ ডলার। যেখানে বায়ার্নের তারকা হ্যারি কেন সপ্তাহে ৫ লাখ ৩ হাজার ৪৮৪ ডলার বেতন পান।
নিউজিল্যান্ড আগামী বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়া দল হলেও ক্লাবের এমন বেহাল দশার কারণ আছে। দেশটির ফুটবল লিগ এখনও পেশাদার হয়নি। নিউজিল্যান্ড জাতীয় দলের ফুটবলাররা ইউরোপ নয়তো অস্ট্রেলিয়ার লিগে খেলেন। নিউজিল্যান্ডে তথাকথিত পেশাদার ক্লাবই দুটি। যার একটি অকল্যান্ড।
ওদিকে অস্ট্রেলিয়া ওশেনিয়া অঞ্চলের হলেও ফিফার হিসেবে তারা এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের অন্তর্ভূক্ত। যে কারণে ওশেনিয়া অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন অকল্যান্ড ক্লাব বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েছে। অতীতেও তারা এই টুর্নামেন্টে খেলেছে। কিন্তু কোন মতে অংশ নিয়ে একটা ম্যাচ খেলে চুপিসারে বিদায় নিয়েছে। এবার তাদের বায়ার্ন মিউনিখ, বেনফিকা আর বোকা জুনিয়ার্স দর্শনের মতো অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হচ্ছে। যার শুরুটা বায়ার্নের বিপক্ষে হলো লজ্জার।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ ফ ক ল ব ব শ বক প ক ল ব ব শ বক প অকল য ন ড ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।