ক্রিকেট নিয়ে সুগভীর ভাবনা ও জ্ঞানের জন্য তাঁকে কেউ কেউ ডাকেন ‘বিজ্ঞানী’ (সায়েন্টিস্ট)। এবার ক্রিকেটের সেই ‘বিজ্ঞানী’র বিরুদ্ধেই উঠেছে বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগ। অভিযুক্তের নাম রবিচন্দ্রন অশ্বিন।

তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগে (টিএনপিএল) গত শনিবার মাদুরাই প্যান্থার্সের বিপক্ষে ৯ উইকেটে জেতে দিন্দিগুল ড্রাগনস। দিন্দিগুলের হয়ে ৪ ওভারে ২৭ রানে কোনো উইকেট পাননি ভারত জাতীয় দলের সাবেক এ স্পিনার। এ ম্যাচে অশ্বিন এবং তাঁর দলের বিরুদ্ধে টুর্নামেন্টের আয়োজক কর্তৃপক্ষের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগ করেছে মাদুরাই প্যান্থার্স। ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ জানিয়েছে, আয়োজকেরা অভিযোগের পক্ষে তথ্য–প্রমাণ দিতে বলেছেন মাদুরাই প্যান্থার্সকে।

আরও পড়ুনমিরাজ কি কাল খেলতে পারবেন১ ঘণ্টা আগে

টিএনপিএলের কাছে করা অভিযোগনামায় মাদুরাই দাবি করেছে, এই টুর্নামেন্টের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দিন্দিগুল ম্যাচে রাসায়নিক তরলে ভেজানো তোয়ালে ব্যবহার করে বল মুছেছিল, যে কারণে বল অপেক্ষাকৃত ভারী হয়েছে এবং ব্যাটের আঘাতে ধাতব শব্দ হয়েছে।

টিএনপিএলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রসন্ন কানন এ বিষয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘তারা (মাদুরাই) অভিযোগ দায়ের করেছে, যেটা আমরা জানি। যদিও নিয়মটা হলো ম্যাচের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগ করতে হবে, তবু অভিযোগটি আমলে নিয়ে তাদের তথ্য–প্রমাণ দিতে বলেছি।’

প্রসন্ন যোগ করেন, ‘অভিযোগের সত্যতা মিললে আমরা স্বাধীন একটি কমিটি তৈরি করব। পর্যাপ্ত তথ্য–প্রমাণ ছাড়া একজন খেলোয়াড় ও ফ্র্যাঞ্চাইজির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করাটা ভুল হয়। কোনো প্রমাণ দাখিল করতে না পারলে মাদুরাইকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।’

আরও পড়ুনভারতের ক্রিকেটে নতুন বিস্ময়, সূর্যবংশীর বন্ধু ২২ ছক্কা ও ৪১ চারে করলেন ৩২৭৩ ঘণ্টা আগে

টিএনপিএলকে পাঠানো চিঠিতে মাদুরাই ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এস মহেশ বলেছেন, ‘দিন্দিগুল ড্রাগনসের বিপক্ষে আমাদের সাম্প্রতিক ম্যাচে বল টেম্পারিংয়ের মারাত্মক ঘটনা ঘটেছে। কয়েকবার সতর্ক করার পরও দিন্দিগুল দল বল টেম্পারিং করেছে। তারা তোয়ালে ব্যবহার করেছে, যেটিতে রাসায়নিক মাখানো ছিল।’

বর্ষা মৌসুমে টিএনপিএল চলায় বৃষ্টিতে ম্যাচে বিঘ্ন ঘটছে। গত শনিবার মাদুরাই-প্যান্থার্স ম্যাচও বৃষ্টির কারণে শুরু হতে দেরি হয়। মাদুরাই আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৫০ তোলে। তাড়া করতে নেমে ১২.

৩ ওভারে জেতে দিন্দিগুল। ওপেন করতে নেমে ২৯ বলে ৪৯ করেন অশ্বিন।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, ভেজা মাঠের কন্ডিশনের জন্য প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি দলকে তোয়ালে সরবরাহ করে তামিলনাড়ু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। খেলোয়াড়েরা আম্পায়ারের সামনে তোয়ালে দিয়ে বল মুছে শুকনা করতে পারবেন। প্রসন্ন এ নিয়ে বলেছেন, ‘শুধু টিএনপিএলের সরবরাহ করা তোয়ালে দিয়েই তাঁরা বল মুছে শুকনা করতে পারবেন। প্রতি ছক্কার পর কিংবা আউটের পর আম্পায়াররা নিয়মিত বল পরীক্ষা করেন এবং তাঁরা ওই ম্যাচে কোনো সমস্যা খুঁজে পাননি।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বল ট ম প র য গ কর বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

৭৭ মেট্রিক টন চাল তুলে নিয়েছেন ডিলার, উপকারভোগীরা জানেন ‘বরাদ্দ হয়নি’

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় গত জুলাই মাসে ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশের (টিসিবি) উপকারভোগীদের জন্য ৭৭ দশমিক ৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রক্রিয়া অনুযায়ী উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এ চাল খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (ওএমএস) একজন ডিলার (পরিবেশক) তুলেও নেন। তবে ওই মাসে টিসিবির অন্য পণ্য পেলেও চাল পাননি বলে অভিযোগ করেছেন উপকারভোগীরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মহম্মদপুরের ৮ ইউনিয়নে টিসিবির উপকারভোগী কার্ডধারী আছেন ১৫ হাজার ৫৬৭ জন। এসব উপকারভোগী নিজেদের কার্ড দেখিয়ে প্রতি মাসে একবার ইউনিয়নের টিসিবির নিয়োগ করা ডিলারের কাছ থেকে বাজারের চেয়ে কম মূল্যে তেল, চিনি, ডাল ও চাল কিনতে পারেন। গত জুলাইয়ে ডিলারদের কাছ থেকে তেল, চিনি ও ডালের একটি প্যাকেজ কিনতে পেরেছেন তাঁরা। ওই মাসে চালের বরাদ্দ আসেনি বলে জানানো হয় কার্ডধারীদের।

মহম্মদপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে পাওয়া নথিতে দেখা গেছে, গত ৩০ জুলাই উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মজনুর রহমান স্বাক্ষরিত দুইটি বিলি আদেশে (ডিও) উপজেলার হোসেনিয়া কান্তা ঋতু নামে একজন ওএমএস ডিলারের অনুকূলে ৭৭ দশমিক ৮৩৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই দিনই মহম্মদপুর ও বিনোদপুর খাদ্যগুদাম থেকে এ চাল তুলেও নেওয়া হয়।

সেখানে ৩০ টাকা কেজিতে চাল পাওয়া যায়। বাজার থেকে ওই চাল কিনতে কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা লাগে। জুলাই মাসে চাল না পাওয়ায় কিছুটা কষ্টই হইছে।শরিফা, টিসিবির কার্ডধারী, রাজাপুর ইউনিয়ন

টিসিবি ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন টিসিবি উপকারভোগীদের চাল ছাড়া অন্য পণ্য সরাসরি তাঁদের নিয়োগ করা ডিলারদের কাছে সরবরাহ করে। চালের বরাদ্দ দেওয়া হয় খাদ্য বিভাগ থেকে। এ অনুযায়ী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে প্রথমে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগ করা ওএমএস বা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলারদের অনুকূলে ২৬ টাকা কেজি দরে চাল বরাদ্দ দেয়। সেই চাল ওই ডিলারদের কাছ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে নেন টিসিবির ডিলাররা। এরপর তাঁরা ৩০ টাকা কেজি দরে ওই চাল উপকারভোগীদের কাছে বিক্রি করেন।

উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পারুল নামে টিসিবির এক উপকারভোগী ১ সেপ্টেম্বর জানান, আগস্ট মাসে চাল, ডাল, তেল ও চিনির প্যাকেজ পেলেও জুলাই মাসে তাঁদের চাল ছাড়া অন্য তিন ধরনের পণ্যের প্যাকেজ দেওয়া হয়েছিল। জুলাই মাসে তাঁদের জানানো হয় চাল বরাদ্দ হয়নি।

বিষয়টি জানতে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে টিসিবির নিয়োগ করা ৮ জন ডিলারের সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। তাঁদের মধ্যে মহম্মদপুর সদর, নহাটা, পলাশবাড়ীয়া, বালিদিয়া, রাজাপুর ও বাবুখালী ইউনিয়নের ডিলার জানিয়েছেন, জুলাই মাসে তাঁদেরকে চাল দেওয়া হয়নি। নহাটা ও রাজাপুর ইউনিয়নের ডিলার মিলন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মিলন ঘোষ ৪ সেপ্টেম্বর বলেন, ‘জুলাই মাসে আমাদের বলা হইছিল চাল বরাদ্দ নেই। এ কারণে চাল ছাড়া অন্য পণ্যগুলো বিক্রি করেছি। তবে অ্যাপে দেখাইছিল চাল। কিন্তু আমরা পাইনি।’

হোসনিয়া কান্তা উপজেলার বিনোদপুর এলাকার ওএমএস ডিলার। গত ২৫ জুলাই লটারির মাধ্যমে তিনিসহ তিনজন উপজেলায় ওএমএস ডিলার হিসেবে নিয়োগ পান

অবশ্য বিনোদপুর ও দীঘা ইউনিয়নের দুই ডিলার দাবি করেছেন তাঁরা অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে চালও কার্ডধারীদের কাছে বিক্রি করেছেন। তবে দুই ইউনিয়নের অন্তত ১০ জন উপকারভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তাঁরা কেউই চাল পাননি। এর মধ্যে বিনোদপুর বাজারের একজন ফল ব্যাবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘জুলাই মাসে ডিলার জানাইছিল চাল ফুরায় গেছে।’

হোসনিয়া কান্তা উপজেলার বিনোদপুর এলাকার ওএমএস ডিলার। গত ২৫ জুলাই লটারির মাধ্যমে তিনিসহ তিনজন উপজেলায় ওএমএস ডিলার হিসেবে নিয়োগ পান বলে খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে হোসেনিয়া কান্তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে সরবরাহ করা তাঁর মুঠোফোনে সোমবার যোগাযোগ করা হলে একজন ধরে জানান, ওই নম্বর হোসেনিয়া কান্তা ঋতু নামে কেউ ব্যবহার করেন না।

জানতে চাইলে টিসিবির ঝিনাইদহ ক্যাম্প অফিসের উপপরিচালক আকরাম হোসেন সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘টিসিবির চাল খাদ্য বিভাগ থেকে সরবরাহ করা হয়। আর বিতরণ কার্যক্রম তদারকির জন্য প্রতিটি উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি কমিটি রয়েছে। যেখানে প্রতি ইউনিয়নে একজন ট্যাগ অফিসার আছেন, যিনি এগুলো তদারকি করেন।’

জেলার কয়েকজন চাল ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৬ টাকা কেজি দরে কেনা এসব চাল বাজারে প্রায় ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। উপকারভোগীদের কাছে তা ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার কথা। এ হিসাবে উপকারভোগীদের ফাঁকি দিয়ে এ চাল বাজারে বিক্রি করতে পারলে কেজিতে ২২ থেকে ২৪ টাকা লাভ হয়।

চাল না পাওয়ার বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি বলে জানিয়েছেন মহম্মদপুরের ইউএনও শাহীনুর আক্তার। সোমবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘চাল দেওয়া হয়নি এখন পর্যন্ত এমন অভিযোগ কেউ দেয়নি। খাদ্য অফিস থেকে আমি যত দূর জানতে পেরেছি তাতে সবকিছু দেওয়া হয়ে গেছে। বরাদ্দ থাকলে তা আটকে রাখার সুযোগ নেই। তারপরও কোনো অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখব।’  

হঠাৎ এক মাসে চাল না পাওয়ায় বিপাকে পড়েন উপকারভোগীরা। রাজাপুর ইউনিয়নের শরিফা নামের টিসিবি কার্ডধারী এক নারী বলেন, ‘সেখানে ৩০ টাকা কেজিতে চাল পাওয়া যায়। বাজার থেকে ওই চাল কিনতে কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা লাগে। জুলাই মাসে চাল না পাওয়ায় কিছুটা কষ্টই হইছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রথম চালানে ৩৭ হাজার ৪৬০ কেজি ইলিশ গেল ভারতে
  • তুরস্কের সঙ্গে উত্তেজনা: সাইপ্রাসকে ‘এস–৩০০’–এর চেয়েও ভয়ংকর ‘বারাক এমএক্স’ দিল ইসরায়েল
  • গুদামে খাওয়ার অনুপযোগী চাল নিয়ে রাজশাহী খাদ্য বিভাগে তোলপাড়, ৮ তদন্ত কমিটি
  • ‘কেনতো পারমু না, হেইতে ইলশার সুরতটা দেইখ্যা যাই’
  • ৭৭ মেট্রিক টন চাল তুলে নিয়েছেন ডিলার, উপকারভোগীরা জানেন ‘বরাদ্দ হয়নি’
  • বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিনে ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ডলার কিনল কেন
  • নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
  • যুক্তরাজ্য থেকে আসছে মাদক এমডিএমএ, গ্রেপ্তার ৫
  • চাপে পড়ে নয়, অনুরোধে ভারতে ইলিশ পাঠানোর অনুমোদন: ফরিদা আখতার
  • ভোটের সরঞ্জাম আসছে ইসিতে