সীমান্ত দিয়ে ঠেলে পাঠানো ভারতীয় দম্পতিকে ফেরত নিল বিএসএফ
Published: 16th, June 2025 GMT
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার চাপসার সীমান্ত এলাকা দিয়ে গত শনিবার ২৩ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। পরে তাঁদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরিচয় যাচাইয়ে দেখা যায় আটক ব্যক্তিদের মধ্যে এক দম্পতি ভারতের নাগরিক।
এরপর আজ সোমবার ওই দম্পতিকে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বিজিবি।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে চাপসার সীমান্ত এলাকার ৩৪৭ নম্বর মূল পিলারের ১ নম্বর সাব–পিলার এলাকায় ২৩ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। পরে বিজিবি তাদের আটক করে। এর মধ্যে ৫ জন পুরুষ, ১২ জন নারী ও ৬টি শিশু ছিল। সবার পরিচয় যাচাই করতে গিয়ে বিজিবি এক দম্পতিকে ভারতীয় নাগরিক বলে শনাক্ত করে। তাঁরা হলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বাগদা থানার হরিহরপুর গ্রামের তাহাজুর মণ্ডলের ছেলে ফজের মণ্ডল (২১) ও উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বাগদা থানার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের ইসহাক মণ্ডলের মেয়ে তাছলিমা মণ্ডল (১৯)।
বিজিবি সূত্র আরও জানায়, পুশ ইন করা দুই ভারতীয়কে ফেরত পাঠানোর জন্য বিজিবি দিনাজপুর ৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ আল মঈন হাসান বিএসএফ ৮৭ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্টের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সীমান্তের ৩৪৯ নম্বর পিলারের ৫ নম্বর সাব–পিলার এলাকায় বিজিবি ও বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুনদিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও সীমান্ত দিয়ে ২০ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ১০ জুন ২০২৫বিজিবি দিনাজপুর ৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ আল মঈন হাসান বলেন, বৈঠক শেষে রাত সোয়া আটটার দিকে ভারতীয় দম্পতিকে বিএসফের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিজিবি বলছে, ফজের মণ্ডল স্ত্রী তাছলিমা মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে ভারতের কর্ণাটকে শ্রমিকের কাজ করতেন। পরে সেখান থেকে মহারাষ্ট্রে কাজ করতে যান। সম্প্রতি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের খোঁজে তল্লাশি অভিযানে কয়েকজন অনুপ্রবেশকারীর সঙ্গে তাঁদের আটক করা হয়েছিল।
আরও পড়ুনসীমান্ত পার হয়ে ভারতে যাওয়া ১৫ গরু ফেরত পাঠিয়েছে বিএসএফ১৫ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এসএফ
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ