২০ বছর পর সাংবাদিক মানিক সাহা হত্যা মামলার আসামির আত্মসমর্পণ
Published: 17th, June 2025 GMT
দীর্ঘ ২০ বছর পলাতক থাকার পর খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আব্দুস সাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার আত্মসমর্পণ করেছেন। সোমবার খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তিনি। ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো.
ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জিল্লুর রহমান খান সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা নুর মোহাম্মাদ ওরফে নুরুর ছেলে। হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি পলাতক ছিলেন।
জানা যায়, ২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি খুলনা প্রেসক্লাব অদূরে সন্ত্রাসীদের বোমার আঘাতে খুন হন সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা।
ট্রাইব্যুনালের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মাজাহারুল ইসলাম জানান, সোমবার দুপুরের পর আদালতে উপস্থিত হন ডিসকো সাত্তার। ওকালত নামায় তিনি উল্লেখ করেন, জীবন এবং জীবিকার তাগিদে খুলনার বাইরে থাকায় মামলার রায় প্রচারের সময়ে আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। তিনি রায়ের বিষয়টি অবগত ছিলেন না।
ট্রাইব্যুনাল থেকে জানা গেছে, সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা হত্যার দু’দিন পর ২০০৪ সালের ১৭ জানুয়ারি খুলনা সদর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) রণজিৎ কুমার দাস বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা সদর থানার তৎকালীন ওসি মোশাররফ হোসেন ২০০৪ সালের ২০ জুন হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিট দাখিলের পর থেকে ডিসকো সাত্তার পলাতক ছিলেন।
দীর্ঘ এক যুগ পর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ করে ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর আদালত মানিক চন্দ্র সাহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। মামলায় ৯ জন আসামিকে দোষী সাবস্ত করে যাবজ্জীবন কারদণ্ড প্রদান করেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- সুমন ওরফে নুরুজ্জামান, বুলবুল ওরফে বুলু, আকরাম হোসেন ওরফে আকরাম ওরফে বোমরু আকরাম ওরফে বোমা আকরাম ওরফে ফাটা, আলী আকবর সিকদার ওরফে শাওন, ছাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার, বেল্লাল, মিঠুন ওরফে মিটুল, সাকা ওরফে শওকাত হোসেন, সরো ওরফে সরোয়ার হোসেন।
মামলায় দু’জন খালাস পেয়েছিলেন। তারা হলেন হাই ইসলাম ও কচি ওরফে ওমর ফারুক।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব কারাগারে
ছেলের পরীক্ষার ফলাফল জালিয়াতির মামলায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন।
হাইকোর্ট থেকে নেওয়া চার সপ্তাহের আগাম জামিনের মেয়াদ শেষে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন নারায়ণ চন্দ্র নাথ। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চট্টগ্রাম কোর্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. শাহীন বলেন, জাল-জালিয়াতি মামলায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আসামি নারায়ণ চন্দ্র নাথকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। সেই মোতাবেক তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গত ২১ জানুয়ারি জালিয়াতির মাধ্যমে ছেলেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথসহ চারজনের বিরুদ্ধে নগরের পাঁচলাইশ থানায় মামলা হয়। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- নারায়ণের ছেলে নক্ষত্র দেবনাথ, শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খান ও সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুস্তফা কামরুল আখতার। শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক এ কে এম সামছু উদ্দিন আজাদ বাদী হয়ে থানায় এ মামলা করেন।
নারায়ণ শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সচিবের দায়িত্ব পালন কালে ২০২৩ সালে তার ছেলে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। পরে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। অভিযোগ ওঠার পর ২০২৪ সালের ৯ জুলাই তাকে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড থেকে মাউশি চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক পদে পদায়ন করা হয়। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) শৃঙ্খলা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব শতরূপা তালুকদারের সই করা নির্দেশনায় বলা হয়, তদন্তে নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ জন্য তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী মামলাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া ও নক্ষত্রের ফলাফল বাতিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়। তারপরই ২০২৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।