Prothomalo:
2025-06-17@11:16:21 GMT

ভালোবাসার শহরে মেহজাবীন

Published: 17th, June 2025 GMT

২ / ৭ভালোবাসার শহরে তোলা অভিনেত্রীর ছবিগুলো বেশ পছন্দ করছেন তাঁর ভক্ত–অনুসারীরা। এ পর্যন্ত ছবিগুলোতে প্রতিক্রিয়া এসেছে প্রায় ৬০ হাজার। অভিনেত্রীর ফেসবুক থেকে

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আলজাজিরার বিশ্লেষণ: ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের বৈশ্বিক প্রভাব

ইসরায়েল ও ইরান চতুর্থ দিনের মতো পাল্টাপাল্টি প্রাণঘাতী হামলায় জড়ানোর ফলে বিশ্বব্যাপী অন্যতম প্রধান তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী অঞ্চলে এই সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে। শুক্রবার ইসরায়েলের আচমকা হামলার পর শেয়ারবাজারে প্রথমে ধস নামলেও এখন তা কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে।

শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ও পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যা এবং কিছু পারমাণবিক স্থাপনায় ক্ষতির এক দিন পর শনিবার ইসরায়েল ইরানের জ্বালানিখাতে হামলা চালায়। 

ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হয়, সাউথ পার্স গ্যাসক্ষেত্রে আগুন ধরে গেছে। ইরানি কর্তৃপক্ষের বরাতে হতাহতের সংখ্যা প্রায় ৩০০, যাদের মধ্যে ১০০ জনের কাছাকাছি নারী ও শিশু রয়েছে।

আরো পড়ুন:

ইউক্রেনের রাজধানীতে রাশিয়ার ভয়াবহ হামলা

প্যারিস এয়ার শো-তে ইসরায়েলি অস্ত্র নির্মাতারা নিষিদ্ধ

ইরান পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়, যার একটি ছোট অংশ ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেদ করে অন্তত ২৪ জনের প্রাণহানি ঘটায়; অবশ্য সংখ্যাটি ক্রমেই বাড়ছে।

নিজের ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেহরানকে সতর্ক করে বলেন, “আগামী হামলাগুলো, যেগুলো ইতোমধ্যে পরিকল্পিত, আরো ভয়াবহ হবে।” 

“ইরানের উচিত পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চুক্তি করা, নইলে কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না,” যোগ করেন তিনি। 

সর্বশেষ সোমবার ট্রাম্পের ‘তেহরান খালি করার আহ্বান’ উত্তেজনায় ঘি ঢেলেছে। ইরান-ইসরায়েল সংঘাত পরিস্থিতি বৈশ্বিক পর্যায়ে কোন মাত্রায় বিপর্যয় সৃষ্টি করবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী দুটি সামরিক শক্তির মধ্যে এই সংঘাত যখন পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে পরিণত হওয়ার দিকে যাচ্ছে, তখন এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে আর্থিক বাজার ও বিমান চলাচল খাতে।

বিশ্লেষকরা তেলের দামের গতিপথ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। তবে বিদ্যমান অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ বিকল্প হিসেবে স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছেন।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ পরিস্থিতি বৈশ্বিক অর্থনীতিকে আরো খারাপ, এমনকি অনেক বেশি খারাপ করে তুলতে পারে।

তেলের দামে কী পরিবর্তন এসেছে?
সোমবার সকালেই বৈশ্বিক মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪ দশমিক ৬০ ডলারে। এই মূল্যবৃদ্ধি প্রায় ৭ শতাংশ।

বিশ্বের বিপুল পরিমাণ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পণ্য মধ্যপ্রাচ্যের ব্যস্ত সমুদ্রপথ দিয়ে পরিবাহিত হয়, যার মধ্যে অন্যতম হলো হরমুজ প্রণালি।

এই প্রণালিটি একটি সরু জলপথ, যা ইরানকে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো থেকে আলাদা করে এবং আরব সাগরকে ভারত মহাসাগরের সঙ্গে যুক্ত করে। এটি বিশ্ব জ্বালানি বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত কৌশলগত ও গুরুত্বপূর্ণ একটি পথ।

বিশ্বের সমুদ্রপথে পরিবাহিত মোট তেলের এক-তৃতীয়াংশই হরমুজ প্রণালির মধ্য দিয়ে যায়, যার পরিমাণ প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ ব্যারেল।

এই জলপথটির সবচেয়ে সরু অংশ মাত্র ৩৩ কিলোমিটার (২১ মাইল) প্রশস্ত। এর মধ্যে চলাচলের নির্দিষ্ট পথ আরো সরু, যা একে হামলার জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে।

ইসরায়েল-ইরান সংঘাত হরমুজ প্রণালি বন্ধ করার প্রশ্নটিকে আবার সামনে এনেছে, যা ইরান অনেক বছর ধরেই রাজনৈতিকভাবে ইঙ্গিত দিয়ে আসছে। এই প্রণালি বন্ধ হয়ে গেলে তেলের দামে ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটতে পারে।

ইরানের রক্ষণশীল শীর্ষ আইনপ্রণেতা এসমাইল কোসারির বরাত দিয়ে ইরানি বার্তা সংস্থা আইআরআইএনএন জানিয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাত তীব্র হওয়ায় তেহরান এখন হরমুজ প্রণালি বন্ধের বিষয়টি বিবেচনা করছে।

গোল্ডম্যান স্যাসের মতে, যদি প্রণালি অবরুদ্ধ হয়, তবে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারের ওপরে চলে যেতে পারে। তবে ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ইরান-ইরাক যুদ্ধেও হরমুজ প্রণালি পুরোপুরি কখনো বন্ধ হয়নি, যদিও দুই পক্ষই উপসাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করেছিল।

হরমুজ প্রণালি বন্ধের যেকোনো প্রচেষ্টা ইরানের নিজস্ব তেল রপ্তানিও বাধাগ্রস্ত করবে, বিশেষ করে চীনের মতো বড় গ্রাহকদের কাছে; ফলে তাদের রাজস্ব ক্ষতির মুখে পড়বে।

টিএস ল্যামবার্ডের অর্থনৈতিক বিশ্লেষক হামজাহ আল গাওদ বলেন, “এই প্রণালি বন্ধের প্রভাব ইরানের ওপরই সবচেয়ে বেশি পড়বে।”

বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতিতে কী প্রভাব পড়েছে?
তেলের দাম বাড়লে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। এর প্রভাব শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের ওপর পড়ে, বিশেষত যেসব পণ্য শক্তিনির্ভর, যেমন খাদ্য, পোশাক ও রাসায়নিক দ্রব্য।

যেসব দেশ তেল আমদানি করে, তারা যদি এই সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে আরো বেশি মুদ্রাস্ফীতি এবং ধীর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মুখে পড়তে পারে।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, এতে করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর নীতিনির্ধারণের সুযোগ কমে যাবে; মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করাও কঠিন হয়ে পড়বে।

টিএস ল্যামবার্ডের আল গাওদ আলজাজিরাকে বলেন, “জি-৭ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো বর্তমানে সুদের হার কমানোর পথে রয়েছে। এ অবস্থায় হঠাৎ করে জ্বালানির দামে বড় ধরনের ঝাঁকুনি তাদের জন্য উদ্বেগের কারণ।”

এদিকে, যুক্তরাজ্যের ব্যাংক অব ইংল্যান্ড সম্প্রতি তাদের সুদের হার কমিয়ে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশে এনেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ এখনো সুদহার কমায়নি, কারণ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে প্রায় সব দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছেন।

বাজারে কী ধরনের প্রভাব পড়েছে?
ওয়াল স্ট্রিটে বড় ধাক্কা লেগেছে। শুক্রবার মার্কিন শেয়ারবাজারের দুই প্রধান সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ও নাসদাক কম্পোজিট যথাক্রমে ১ দশমিক ১ শতাংশ এবং ১ দশমিক ৩ শতাংশ কমে গেছে।

মধ্যপ্রাচ্যেও বাজারে ব্যাপক পতন দেখা গেছে। রবিবার (১৫ জুন) মিসরের ইজিএক্স-৩০ সূচক এক দিনেই ৭ দশমিক ৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

ইসরায়েলের তেলআবিব স্টক এক্সচেঞ্জের টিএ-৩৫ সূচকও ১ দশমিক ৫ শতাংশ পড়ে গেছে।

এই পতনগুলো ইঙ্গিত দেয় যে, ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং তারা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ থেকে সরে এসে নিরাপদ বিনিয়োগমুখী হচ্ছেন।

ইউরোপীয় বাজারেও পতন, তবে প্রতিরক্ষা ও জ্বালানি খাতে উত্থান
ইসরায়েলের হামলার খবরে ইউরোপীয় শেয়ারবাজারেও পতনের ধারা দেখা গেছে। জার্মানির ডিএএক্স ও ফ্রান্সের সিএসি ৪০ গত সপ্তাহের শেষে ১ দশমিক ১ শতাংশের একটু বেশি হারিয়েছে। যুক্তরাজ্যের এফটিএসই ১০০ সূচক শুক্রবার শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কমে শুক্রবারে বন্ধ হয়ে যায়।

তবু যুক্তরাজ্যের কিছু কোম্পানি উল্টো বেড়েছে। বিএই সিস্টেটেমস একটি প্রতিরক্ষা ঠিকাদার কোম্পানি, যেটির দাম বেড়েছে প্রায় ৩ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রেও প্রতিরক্ষা সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে লকহিড মার্টিন, নর্থরোপ গ্রুম্যান ও আরটিএস্কের শেয়ারদর বেড়েছে।

তেল কোম্পানিগুলোরও শেয়ার মূল্য বেড়েছে। বিপির দাম প্রায় ২ শতাংশ, শেলের দাম ১ শতাংশের একটু বেশি বেড়েছে।

স্বর্ণের দাম শুক্রবারে ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৪২৬ ডলার প্রতি আউন্সে, যা এপ্রিলের রেকর্ড ৩ হাজার ৫০০ ডলারের কাছাকাছি।

সোমবারের পরিস্থিতি কিছুটা স্থির
সোমবার (১৬ ‍জুন) বিনিয়োগকারীরা কিছুটা ঝুঁকি হ্রাসের অবস্থান থেকে সরে আসে। তেল ও স্বর্ণের দাম কিছুটা কমেছে। শেয়ারবাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। 

টিএস ল্যামবার্ডের বিশ্লেষক হামজাহ আল গাওদ বলেন, “বাজার এখনো মনে করছে এই সংঘাত তুলনামূলকভাবে সীমিত থাকবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, ইরান এখনো যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সামরিক স্থাপনায় আক্রমণ করেনি।”

বিমান চলাচলে কী প্রভাব পড়েছে?
মধ্যপ্রাচ্যে আকাশপথ বন্ধ এবং যুদ্ধাবস্থা বৃদ্ধির ফলে বিমান চলাচলে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। অনেক এয়ারলাইন্স ফ্লাইট স্থগিত বা বাতিল করেছে এবং কয়েকটি দেশ তাদের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।

আমিরাত এয়ারলাইন্সের ইরাক, জর্ডান, লেবানন ও ইরানের সব গন্তব্যে ৩০ জুন পর্যন্ত ফ্লাইট স্থগিত রাখা হয়েছে। 

আবুধাবিভিত্তিক ইতিহাদ এয়ারওয়েসের আবুধাবি-তেলআবিব রুটের সব ফ্লাইট বন্ধ রাখা হয়েছে। একাধিক রুটে ফ্লাইট রিশিডিউল করা হয়েছে; যাত্রীদের ফ্লাইট অবস্থা জানতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

কাতার এয়ারওয়েজের ইরান, ইরাক ও সিরিয়াগামী সব ফ্লাইট সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়েছে। যাত্রীদের যাত্রার আগে ফ্লাইট অবস্থা যাচাই করতে বলা হয়েছে।

আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা
ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ জানায়, ইরানি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে।

ইরাক তাদের আকাশসীমা বন্ধ ও সব বিমানবন্দর কার্যক্রম স্থগিত করেছে। পূর্ব ইরাক বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত আকাশপথ, যেখানে একসঙ্গে বহু ফ্লাইট চলাচল করে; বিশেষত এশিয়া থেকে ইউরোপগামী বিমানগুলো।

জর্ডানের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘আঞ্চলিক উত্তেজনার কারণে সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায়’ তারা সাময়িকভাবে আকাশসীমা বন্ধ করেছে।

পর্যটন ও আর্থিক বাজারে প্রভাব
বিশ্লেষক হামজাহ আল গাওদ বলেছেন, “মধ্যপ্রাচ্যের পর্যটন খাতে কিছু স্বল্পমেয়াদি বিঘ্ন ঘটবে, তবে সেটা এক মাসের বেশি স্থায়ী হবে না। পর্যটন আবার ঘুরে দাঁড়াবে বলে আমার ধারণা।”

আর্থিক বাজার নিয়েও তিনি আশাবাদী। হামজাহ আল গাওদ বলেছেন, “যতক্ষণ সংঘাত সীমিত পর্যায়ে থাকে, ততক্ষণ আমি মনে করি শেয়ারবাজার গত সপ্তাহের ধস থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করবে।”

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ