কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌর এলাকায় ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তারে প্রাণ হারিয়েছেন তিন নারী। আক্রান্ত হওয়ার পর ঢাকার পৃথক তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে তাদের মৃত্যু হয়। মৃত্যু ও আক্রান্তের হার উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় পৌরসভার ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডকে ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

দাউদকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম জানান, “ডেঙ্গু সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। বিশেষ করে ছয় নম্বর ওয়ার্ডে এক মাসের ব্যবধানে তিন নারীর মৃত্যু হওয়ায় তা এখন অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই দুই ওয়ার্ডে নিয়োজিত রয়েছে একটি বিশেষায়িত টিম, চলছে ওষুধ ছিটানো এবং জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি।”

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.

হাবিবুর রহমান বলেন, “মারা যাওয়া নারীরা হলেন দোনারচর গ্রামের সালমা বেগম (৫৬), শাহীনূর আক্তার (২৪) এবং সবজিকান্দি গ্রামের জ্যোৎস্না বেগম (৬০)। তাদের সবাই দাউদকান্দিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন এবং পরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।”

আরো পড়ুন:

ভগ্নিপতির বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া যুবকের মরদেহ পড়েছিল রাস্তায় 

বিয়ের তিন দিন পর সড়কে প্রাণ গেল প্রবাসীর

তিনি আরো বলেন, “চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৮ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। উপজেলার বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন আরো ২৫৮ জন।”

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পাঁচ ও ছয় নম্বর ওয়ার্ডের দোনারচর, সবজিকান্দি, সাহাপাড়া, বলদাখাল ও তুজারভাঙ্গা এলাকায় প্রায় প্রতিটি পরিবারে কেউ না কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন। শুধু এই দুটি ওয়ার্ডেই আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে।

দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম বলেন, “মশার প্রজনন স্থল ধ্বংস এবং সংক্রমণ রোধে ফগার মেশিনের মাধ্যমে উচ্চমাত্রার ওষুধ প্রয়োগসহ মশক নিধন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সব ধরনের উদ্যোগ চলমান রয়েছে।”

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ উদক ন দ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি

‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে ‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।

এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’

‎বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন

‎জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।

‎তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।

‎কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।

‎পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”

‎গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”

‎অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, ‎যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ