ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন, ইরানকে দোষারোপ জি-৭ জোটের
Published: 17th, June 2025 GMT
ইরানের সঙ্গে চলমান সংঘাতে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন জি-৭ জোটের নেতারা। তাঁরা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার উৎস হিসেবে ইরানকে দায়ী করেছেন।
গতকাল সোমবার রাতে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে জি-৭ জোটের নেতারা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনারও আহ্বান জানিয়েছেন।
গত শুক্রবার ভোরে ইরানে হামলা চালিয়ে দেশটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এর পর থেকে দুই দেশের মধ্যে আকাশপথে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর মধ্যে ইসরায়েল-ইরান পাল্টাপাল্টি হামলার জেরে অঞ্চলটির পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
এ বছর কানাডায় বসে ৫১তম জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাতের কারণে এবারের সম্মেলন অনেকটা আড়ালে পড়ে যায়।
সম্মেলন ছেড়ে আগেভাগেই দেশে ফিরে যান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তিনি ঠিক কী কারণে সম্মেলন শেষে না করেই যুক্তরাষ্ট্র ফিরে গেলেন, তা স্পষ্ট নয়।
ট্রাম্প শুধু বলেছেন, তিনি গুরুত্বপূর্ণ কারণে ওয়াশিংটনে ফিরে যাচ্ছেন। তবে তাঁর ফিরে যাওয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতির সম্পর্ক থাকার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন।
জি-৭ সম্মেলন শেষে সাধারণত সদস্যদেশগুলো একটি যৌথ বিবৃতি দেয়। ট্রাম্প সম্মেলন শেষ না করেই দেশে ফিরে গেলেও যৌথ বিবৃতিতে সই করে গেছেন। বিবিসি এ খবর দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। আর ইরান হলো সন্ত্রাসবাদের উৎস। ইরানের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র থাকা উচিত নয়।
মধ্যপ্রাচ্যে সহিংসতার বিস্তার রোধে সংকট নিরসনের আহ্বানও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
ট্রাম্প কানাডা ছেড়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তাঁর আগেভাগে ফিরে যাওয়ার সুনির্দিষ্ট কারণ আছে।
আরও পড়ুনইরানে সরকার উৎখাতের চেষ্টা হবে একটি কৌশলগত ভুল: মাখোঁ৫ ঘণ্টা আগেট্রাম্পের আগেভাগে সম্মেলন ত্যাগের বিষয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ বলেছিলেন, ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখন এমন একটি পর্যায়ে আছে, যেখান থেকে আরও বিস্তৃত পরিসরের আলোচনা শুরু হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র যদি যুদ্ধবিরতির ব্যবস্থা করতে পারে, তবে সেটা খুব ভালো একটি বিষয়। ফ্রান্স তা সমর্থন করবে।
পরে ট্রাম্প নিজেই জানান, মাখোঁর এমন কথা ঠিক নয়। মাখোঁ জানেনই না ট্রাম্প এখন কেন ওয়াশিংটনের পথে। তবে এটা নিশ্চয়ই কোনো যুদ্ধবিরতির কারণে নয়। তাঁর ফেরাটা এর চেয়েও অনেক বড় কোনো কারণে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
কার্যালয় ভবনে হামলা: অক্ষত আছেন রেডিও তেহরানের ৮ বাংলাদেশি
ইরানের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান ব্রডকাস্টিং (আইআরআইবি) কার্যালয় ভবনে গতকাল সোমবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই ভবনে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও রেডিও তেহরানেরও দপ্তর রয়েছে। সেখানে বাংলা বিভাগে কাজ করেন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি। ওই হামলায় তিনজন নিহত ও কয়েকজন আহত হলেও ঘটনার সময় উপস্থিত বাংলাদেশের আটজন নাগরিক অক্ষত রয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী এ তথ্য জানান। ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা বিষয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব জানান, আইআরআইবি কার্যালয় ভবনে হামলার সময় ইরানের রেডিও (রেডিও তেহরান) দপ্তরে আট বাংলাদেশি ছিলেন। তবে সৌভাগ্যবশত তাঁদের কোনো ক্ষতি হয়নি। তাঁরা ভালো আছেন। তাঁরা রেডিওর বাংলা বিভাগে কাজ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সব মিলিয়ে এখন দুই হাজারের বেশি বাংলাদেশি ইরানে অবস্থান করছেন। এর মধ্যে দেশটিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতসহ দূতাবাসে ২ জন কর্মকর্তা, ৫ জন কর্মচারী এবং তাঁদের পরিবারসহ প্রায় ৪০ জন রয়েছেন। রেডিও তেহরানের ৮ জন বাংলাদেশি ও তাঁদের পরিবারসহ রয়েছেন ২৭ জন। তেহরানে শিক্ষার্থী রয়েছেন ১০ থেকে ১২ জন। পেশাজীবী আছেন প্রায় ১০ জন। সব মিলিয়ে তেহরানে ৪০০ বাংলাদেশি রয়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরানের অন্যান্য জায়গায় প্রায় ৬০০ বাংলাদেশি আছেন, তাঁরা ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে সে দেশে বসবাস করছেন। সেখানে বিয়ে করে তাঁরা স্থায়ী হয়েছেন। প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন। এর বাইরে আরও প্রায় ৮০০ বাংলাদেশি ১০ বছরের বেশি সময় ধরে অবৈধভাবে ইরানে বিভিন্ন সেক্টরে চাকরি করছেন। এ ছাড়া মানব পাচারের ট্রানজিট দেশ হিসেবে ইরানে সব সময় ৩০০ থেকে ৫০০ বাংলাদেশি অবস্থান করেন অন্য দেশে পাচার হওয়ার অপেক্ষায়।