প্রবাসী ভাইকে ফাঁকি দিতে মহাফেজখানায় দলিল ঘষামাজার অভিযোগ, দুজনকে নোটিশ
Published: 17th, June 2025 GMT
বড় ভাই আহমেদ সাদাত কামাল থাকেন অস্ট্রেলিয়া। ছোট ভাই আহমেদ ওয়াসিফ কামাল ঝিনাইদহে আইন পেশায় নিয়োজিত। আইনজীবী বাবা আহমেদ মাসুদ কামাল মৃত্যুর আগে দুই ভাইয়ের নামে বিপণিবিতানসহ ৮৫ শতক জমি লিখে দিয়ে যান বলে দাবি সাদাত কামালের। কিন্তু এই জমি থেকে বঞ্চিত করতে ছোট ভাই ওয়াসিফ কামাল সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগসাজশে মহাফেজখানায় রাখা দলিল ঘষামাজা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রবাসী সাদাত কামালের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহাফেজখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সাবরেজিস্ট্রার মোস্তাক হোসেন একজন দলিল লেখক ও একজন নকলনবিশকে ৩ জুন কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছেন। নকলনবিশ বাবুল আক্তার ও দলিল লেখক মো.
আহমেদ সাদাত কামাল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা দুই ভাই এক বোন। তাঁদের বাবা ঝিনাইদহে আইন পেশায় ছিলেন। আইনজীবী হিসেবে তাঁর যথেষ্ট সুনামও রয়েছে। তিনি ২০২৪ সালের ২৮ আগস্ট মারা যান। সাদাত কামাল জানান, তাঁদের গ্রামের বাড়ি হাটফাজিলপুর বাজারে। এই বাড়ির সঙ্গে তাঁদের একটি বিপণিবিতান রয়েছে। যেটা ৮৫ শতক জমির এক প্রান্তে রয়েছে। বাবার মৃত্যুর আগে ২০১৫ সালের ১৭ নভেম্বর গ্রামের বাজারের ওই বিপণিবিতানসহ জমিটি তাঁদের দুই ভাইয়ের নামে কবলা দলিল মূলে রেজিস্ট্রি করে দেন। বিষয়টি তাঁর বাবা দুই ভাইকে জানিয়ে গিয়েছিলেন।
সাদাত কামাল আরও বলেন, বাবার রেখে যাওয়া অন্যান্য জমি ভাগাভাগি করতে গেলে ছোট ভাই ওয়াসিফ কামাল দাবি করেন, বিপণিবিতানসহ জমি বড় ভাই সাদাত কামালের নেই। বাবা ছোট ছেলে ও মেয়ে দিশা কামালের নামে দিয়ে গেছেন। এটি জানার পর সাদাত কামাল বিভিন্ন ব্যক্তির সহযোগিতায় নিশ্চিত হন দলিল ঘষামাজা করা হয়েছে। এই খবর নিশ্চিত হয়ে তিনি মহাফেজখানায় একটি অভিযোগ দেন।
এ বিষয়ে দিশা কামাল বলেন, তিনি এই সব বিষয়ে কিছুই জানেন না। বড় ভাই অভিযোগ করার পর বিষয়টি বাবার বাড়ি বেড়াতে গিয়ে জানতে পেরেছেন। দলিল ঘষামাজা হয়েছে কি না, এটা তাঁর জানা নেই।
সাদাত কামাল বলেন, ওয়াসিফ কামাল একজন দলিল লেখক ও একজন নকলনবিশের যোগসাজশে মহাফেজখানায় থাকা দলিল বের করে ঘষামাজা করে তাঁর নামের স্থলে বোনের নাম বসিয়েছেন। তিনি এই অপরাধের বিচার দাবি করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনজীবী আহমেদ ওয়াসিফ কামাল বলেন, বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে। যে কারণে এ বিষয়ে তিনি বেশি কিছু বলতে চাচ্ছেন না।
সদর মহাফেজখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সাবরেজিস্ট্রার মোস্তাক হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়ায় এই কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দলিল লেখক মো. আল মামুন ও নকলনবিশ মো. বাবুল আক্তারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্ত চলছে। তদন্ত প্রতিবেদন ও কারণ দর্শানো নোটিশ পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্তা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল
বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।
তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।
চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল