৪৫ রানে তিন উইকেটের পতন, তখন মাত্র ১৭ ওভারের খেলা শেষ। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর টস জিতে ব্যাটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া কি তবে ভুল? দিনের শুরুতে তা মনে হলেও শেষে এসে সঠিকই মনে হচ্ছে। 

মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে শান্ত নিজেই যে দলের বৈঠা চালালেন। দুজনের সেঞ্চুরিতে ভর করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্টের প্রথম দিন শেষে হাসছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২৯২। শান্ত ১৩৬ ও মুশফিক ১০৫ রানে অপরাজিত আছেন। 

প্রথম সেশন থেকে দুজনের পথচলা শুরু। কেউই ছাড়েননি হাল। শেষ সেশনে এসে শান্ত-মুশফিক দুজনেই পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা। ২০২ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন শান্ত। চার দিকে সমালোচনা চলতে থাকা এই ব্যাটার মেতে ওঠেন বুনো উল্লাসে। এটি তার ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। ১১টি চার ও ১টি ছয়ের মারে সাজানো ছিল দুর্দান্ত ইনিংসটি। 

আরো পড়ুন:

তিন-তিনটি সুপার ওভারের এক বিরল ও শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ

জোড়া সেঞ্চুরির ভেলায় উদ্ভাসিত বাংলাদেশ

শান্তকে অনুসরণ করে যেন মুশফিকও তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বাদশ শতক। ১৭৬ বলে পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা। মাত্র ৫টি চারে মুশফিকের সেঞ্চুরি বলে দিচ্ছে কতটা দৃঢ়তার সঙ্গে খেলছেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া শান্ত-মুশফিকের জুটি থেকে আসে ৪৪৩ বলে ৪৭ রান। 

অথচ দিনের শুরুটা ছিল বাজে। এনামুল হক বিজয় ফেরেন ১০ বলে শূন্য রানে। তার আউটের পর ক্রিজে ওপেনার সাদমান ইসলামের সঙ্গী হন মুমিনুল হক। দুজনে আভাস দেন ঘুরে দাঁড়ানোর। কিন্তু বেশিদূর যেতে পারেননি। দেখে শুনে খেলতে থাকা সাদমান ৫৩ বলে ১৪ রানে বিদায় নিলে ভাঙে ৩৪ রানের জুটি। 

সাদমানের বিদায়ের পরই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। এবার বিদায় নেন ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং করতে থাকা ব্যাটার মুমিনুল হক। চারটি চারের মারে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৩ বলে ২৯ রান। এরপরের গল্প শুধু শান্ত-মুশফিকের। 

লঙ্কান পেসারদের মুভমেন্টকে মামুলি বানিয়ে প্রথম সেশনে আর কোনো উইকেট দেননি দুজনে। প্রথম সেশনে বাংলাদেশ পায় ৩ উইকেটে ৯০ রান। দ্বিতীয় সেশনে বিনা উইকেটে ৯২ রানের পর তৃতীয় ও সেশনে আসে ১১০ রান তোলে। লংকানদের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন তারিন্দু রত্নায়েকে। ১ উইকেটের দেখা পান আসিথা ফার্নান্দো।

ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে ২ বছর কারাদণ্ড

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। মঙ্গলবার রাতে এ অধ্যাদেশের গেজেট জারি করা হয়। প্রতারণার মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা নিলে এতে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে। এর আগে গত ১৫ মে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।

অধ্যাদেশের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা যে কোনো শ্রেণির আহত জুলাইযোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা জ্ঞাতসারে কোনো মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন করে বা বিভ্রান্তিকর কাগজাদি দাখিল করে নিজেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত জুলাইযোদ্ধা দাবি করে কোনো চিকিৎসা সুবিধা বা আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন সুবিধা দাবি করেন বা গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া সুবিধা বা আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে।’

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ, পুনর্বাসনসহ গণঅভ্যুত্থানের মর্ম ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। যেহেতু সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে এটি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে– আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে, তাই সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন।’

পুনর্বাসনের বিষয়ে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে শহীদ হয়েছেন এমন ব্যক্তির পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য এবং আহত জুলাইযোদ্ধাদের অনুকূলে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক উপার্জনমুখী কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সহজ শর্তে ঋণ বা এমন সুবিধাদি প্রদান এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা প্রদান।

এরই মধ্যে গঠন করা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ এ অধ্যাদেশের অধীনে আনা হয়েছে। জুলাই শহীদ ও আহতদের তালিকাও এই অধ্যাদেশের অধীনে প্রকাশ করা হয়েছে বলে ধরা হবে। অধ্যাদেশে আহতদের তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের যথাক্রমে ‘জুলাই শহীদ’ এবং ‘জুলাইযোদ্ধা’র স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ