সাংবাদিক মানিক সাহা হত্যা মামলার আসামির ২০ বছর পর আত্মসমর্পণ
Published: 17th, June 2025 GMT
খুলনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আব্দুস সাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার আত্মসমর্পণ করেছেন।
সোমবার (১৬ জুন) খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হত্যাকাণ্ডের ২০ বছর পর আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি। বিচারক মো.
ডিসকো সাত্তার বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা নুর মোহাম্মাদ ওরফে নুরুর ছেলে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।
আরো পড়ুন:
কুলাউড়ায় স্কুলছাত্রী আনজুম হত্যার রহস্য উদঘাটন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চুলার ধোঁয়া ঘরে ঢোকায় বিতণ্ডা, স্বজনদের হামলায় যুবক খুন
খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মো. মাজাহারুল ইসলাম জানান, আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন আসামি ডিসকো সাত্তার।
খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি খুলনা প্রেস ক্লাব থেকে বাড়ির দিকে রওনা হন সাংবাদিক মানিক সাহা। ওই দিন দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করে। বোমার আঘাতে মানিক চন্দ্র সাহার মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দুই দিন পর ১৭ জানুয়ারি খুলনা সদর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) রণজিৎ কুমার দাস বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন।
দীর্ঘ এক যুগ পর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৬ সালে আদালত মানিক চন্দ্র সাহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। আদালত এ মামলায় ৯ জন আসামিকে দোষী সাবস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে প্রত্যেককে আরো এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। দুই আসামিকে মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৯ আসামি হলেন- আকরাম হোসেন হাওলাদার ওরফে আকরাম হাওলাদার ওরফে বোমারু হাওলাদার, আলী আকবর শিকদার ওরফে শাওন, নুরুজ্জামান, মিঠুন, সুমন, সাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার, বেলাল ওরফে বুলবুল, সাকা ওরফে সাকাওয়াত হোসেন ও সরোয়ার হোসেন ওরফে সরো।
মানিক চন্দ্র সাহা দৈনিক সংবাদ ও একুশে টেলিভিশনের খুলনা ব্যুরো প্রধান, বিবিসি বাংলা বিভাগের কন্ট্রিবিউটর ছিলেন। ২০০৯ সালে সরকার তাকে সাংবাদিকতায় মরণোত্তর একুশে পদক দেয়।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য আস ম র ওরফ
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব কারাগারে
ছেলের পরীক্ষার ফলাফল জালিয়াতির মামলায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন।
হাইকোর্ট থেকে নেওয়া চার সপ্তাহের আগাম জামিনের মেয়াদ শেষে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন নারায়ণ চন্দ্র নাথ। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চট্টগ্রাম কোর্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. শাহীন বলেন, জাল-জালিয়াতি মামলায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আসামি নারায়ণ চন্দ্র নাথকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। সেই মোতাবেক তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গত ২১ জানুয়ারি জালিয়াতির মাধ্যমে ছেলেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথসহ চারজনের বিরুদ্ধে নগরের পাঁচলাইশ থানায় মামলা হয়। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- নারায়ণের ছেলে নক্ষত্র দেবনাথ, শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খান ও সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুস্তফা কামরুল আখতার। শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক এ কে এম সামছু উদ্দিন আজাদ বাদী হয়ে থানায় এ মামলা করেন।
নারায়ণ শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সচিবের দায়িত্ব পালন কালে ২০২৩ সালে তার ছেলে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। পরে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। অভিযোগ ওঠার পর ২০২৪ সালের ৯ জুলাই তাকে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড থেকে মাউশি চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক পদে পদায়ন করা হয়। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) শৃঙ্খলা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব শতরূপা তালুকদারের সই করা নির্দেশনায় বলা হয়, তদন্তে নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ জন্য তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী মামলাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া ও নক্ষত্রের ফলাফল বাতিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়। তারপরই ২০২৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।