Samakal:
2025-06-18@01:22:46 GMT

মজার চার পদ

Published: 17th, June 2025 GMT

মজার চার পদ

কোরবানি ঈদের পর প্রায় প্রতিটি ঘরেই মাংসের পর্যাপ্ত মজুত থাকে। এই মাংস দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন মুখরোচক   খাবার, রেসিপি দিয়েছেন মিতা আজহার 

মগজ ভুনা 
উপকরণ: খাসির মগজ ১টি, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদা বাটা ১ চা চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, জিরা গুঁড়া ১ চা চামচ, দারচিনি ২-৩ টুকরা, এলাচ ৪টি, তেজপাতা ২টি, লবণ স্বাদমতো, তেল ৪ টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে মগজ পানিতে ভিজিয়ে রেখে রগগুলো বেছে নিন। চুলায় ফ্রাইপ্যান বসিয়ে তেল দিন। গরম হলে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে বাদামি রং করে ভেজে নিন। সামান্য পানি দিয়ে নেড়েচেড়ে মগজ বাদে বাকি সব উপকরণ দিয়ে কষিয়ে রান্না করুন। মগজ একটু ভাঙা ভাঙা করে দিন। ভুনা ভুনা হলে নামিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার মগজ ভুনা। ভাত ও পোলাওয়ের সঙ্গে খেতে খুব মজা।

খাসির 
কলিজা ভুনা
উপকরণ: খাসির কলিজা ১টি,  পেঁয়াজ কিউব করে কাটা ১ কাপ, আস্ত মেথি ১ চা চামচ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, গরম মসলা গুঁড়া ১ চা চামচ, জিরা বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, ধনিয়া গুঁড়া ১ চা চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া আধা চা চামচ, তেল আধা কাপ, লবণ স্বাদমতো, পানি পরিমাণ মতো। 
প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে একটি হাঁড়িতে পানি ফুটিয়ে কলিজা টুকরা করে কেটে সেদ্ধ (অল্প সময়) করে নিন। ময়লা বের হলে ছাকনিতে ঢেলে নিন। এবার চুলায় প্যান বসিয়ে তেল দিন। গরম হলে আস্ত মেথি ফোড়ন দিন। এরপর পেঁয়াজ কাটা দিয়ে নেড়েচেড়ে কলিজা বাদে  একে একে সব উপকরণ দিয়ে কষিয়ে রান্না করুন। পরে অল্প পানি দিয়ে ঢেকে দিন। মাখা মাখা হলে নামিয়ে নিন। পরোটা-পোলাওয়ের  সঙ্গে পরিবেশন করুন।

মাটন রোগান জোস
উপকরণ: খাসির মাংস ১ কেজি, পেঁয়াজ বেরেস্তা আধা কাপ, আদা গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, শুকনা মরিচ ৪টি টকটকে লাল, দারচিনি ২ টুকরা, এলাচ ৪টি, লবঙ্গ ৫টি, হিং ১ চা চামচ, কাশ্মীরি মরিচ গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, ধনিয়া গুঁড়া ১ চা চামচ, মৌরি গুঁড়া ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, টকদই এক কাপ, লবণ স্বাদমতো, পানি পরিমাণমতো, সরিষার তেল ১ কাপ, গোলমরিচ গুঁড়া আধা চা চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে চুলায় হাঁড়ি বসিয়ে সরিষার তেল দিন। গরম হলে দারচিনি, এলাচ, লবঙ্গ ও হিং দিয়ে নেড়েচেড়ে সুঘ্রাণ বের হলে খাসির মাংস দিয়ে একটু কষিয়ে আদার গুঁড়া, রসুন বাটা, ধনিয়া গুঁড়া,  কাশ্মীরি মরিচ গুঁড়া, লবণের সঙ্গে অল্প পানি দিয়ে কষিয়ে নিয়ে ঢেকে রাখুন ১৫ মিনিট। শুকনা মরিচ ব্লেন্ডারে ব্ল্যান্ড করে নিন। দই ও মৌরি গুঁড়া মিশিয়ে কষানো মাংসের মধ্যে ঢেলে দিয়ে নেড়েচেড়ে গোলমরিচের গুঁড়া দিন। পরে মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে তেল ওপরে উঠে এলে নামিয়ে নিন। এবার সার্ভিং ডিশে পরিবেশন করুন মজাদার রোগান জোস। ভাত,  পোলাও এবং পরোটার সঙ্গে খেতে দারুণ মজা।

বিফকারি 
উপকরণ: গরুর মাংস ১ কেজি, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদা বাটা ১ টেবিলে চামচ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, ধনিয়া গুঁড়া ১ চা চামচ, জিরা বাটা ১ চা চামচ, দারচিনি ৪ টুকরা, এলাচ ৪টি, লবঙ্গ ৪টি, তেজপাতা ২টি, টকদই ৩ টেবিল চামচ, তেল আধা কাপ, লবণ স্বাদমতো, চিনি সামান্য, পানি পরিমাণ মতো।
প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে মাংস ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। একটি হাঁড়িতে মাংস, পেঁয়াজ, আদা, রসুন বাটা একে একে সব উপকরণ দিয়ে ভালোভাবে মেখে রেখে দিন আধা ঘণ্টা। এবার চুলায় আগুন দিয়ে মেখে রাখা মাংস হাঁড়িসহ ঢেকে জ্বাল দিন। মাঝেমধ্যে নেড়েচেড়ে দিন। কষানো হলে ২ কাপ পানি দিয়ে ঢেকে দিন। সেদ্ধ হয়ে তেল ভেসে উঠলে নামিয়ে নিন। পোলাও, পরোটা ও ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন মজাদার বিফকারি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: লবণ স ব দমত রস ন ব ট ন কর ন হল দ গ প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

‘লিচুর বাগানে’ যে কারণে ‘পিরিতের বেড়া’ দিতে হয়

‘তাণ্ডব’ সিনেমার গান ‘লিচুর বাগানে’ প্রকাশের পর রীতিমতো হইচই পড়ে গেছে। কফি শফ থেকে বাস, মেট্রোরেল আশপাশে কান পাতলে গানটা শোনা যাচ্ছে। কেউ না কেউ শুনছেন। সামাজিক মাধ্যমের স্টোরি ও রিলসেও গানটি ভেসে বেড়াচ্ছে। চরকি ও এসভিএফের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত গানটির আজ পর্যন্ত (১২ এপ্রিল ২০২৫) ভিউ হয়েছে যথাক্রমে ১২ মিলিয়ন ও ৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন।

উচ্ছ্বসিত অনেক দর্শক গানটি নিয়ে মন্তব্যও করেছেন। তাহসিন নামের এক শ্রোতা লিখেছেন, ‘গানটির প্রতিটি সুর, দৃশ্য ও পরিবেশনায় বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অপূর্ব রূপ ফুটে উঠেছে। যাত্রাপালার ফিল্মের আবহে তৈরি এই গানটি যেন গ্রামীণ বাংলার প্রাণস্পন্দন তুলে ধরেছে। লোকেশন থেকে শুরু করে কস্টিউম, প্রতিটি ডিটেইলে আছে নিখুঁত যত্ন।’

গানটি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বন্ধুদের মধ্যে খুনসুটিও চলছে। বন্ধুকে মেনশন দিয়ে কেউ যেমন প্রশ্ন করছেন, ‘কী রে, বেড়া ডিঙাতে পারলি?’ আবার কেউ জিজ্ঞেস করছেন বল তো, ‘“লিচুর বাগানে” কেন “পিরিতের বেড়া” দিতে হয়?’

প্রশ্নটির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা যাক। শুরুতেই ‘লিচুর বাগানে’ গানটি দিয়ে আলোচিত, ‘কে এই ছত্তার পাগলা’ শীর্ষক প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক। গবেষক সরোজ মোস্তফার মতে ‘কে দিল পিরিতের বেড়া লিচুরও বাগানে’ পঙ্‌ক্তির রচয়িতা ও সুরকার ছত্তার পাগলা। তবে সংগীতগবেষক গৌতম কে শুভর মত ভিন্ন। তাঁর মতে, ‘এটি মূলত প্রচলিত ঘেটু গান। “কে দিল পিরিতির বেড়া লিচুর বাগানে?” অংশটি মূল গানের অংশ। ছত্তার পাগলা নিজের মতো করে এর সঙ্গে কথা সংযোজন করেছেন। নেত্রকোনায় ছত্তার পাগলার লেখা রূপটিই বিখ্যাত হয়েছে।’ ২০১৪ সালের এপ্রিলে মারা গেছেন ছত্তার পাগলা। জীবদ্দশায় রচনা ও সুরারোপ করেছেন কয়েক শ গান। মৃত্যুর বছর তিনেক আগে তাঁর কাছ থেকে গানটি শুনে হাতে লিখে রেখেছিলেন আল মামুন চৌধুরী।

আল মামুন চৌধুরীর লেখা অনুযায়ী গানটির কথা:
কে দিল পিরিতের বেড়া, লিচুরও বাগানে
লিচুরও বাগানে গো সই…লিচুরও বাগানে …(ঐ)
পাখি খাইছ না লিচু, বন্দে খাইবো
বন্দে লিচু খাইয়া, খুশি হইবো
আমার কাছে আইসা কইবো
কত শান্তি দিবো আমার মনেপ্রাণে (ঐ)
ছোট ছোট লিচুগুলি, বন্দে তুলে আম্বো তুলি
বন্দে দেয় গো আমার মুখে,
আমি দিতে চাই বন্ধুর মুখের পানে…(ঐ)
মিষ্টি লিচু খাইয়া বন্দে, বাঁশি বাজায় মন আনন্দে
আমার মনে লাগে সন্দে বন্ধু সম্ভব জাদু জানে (ঐ)
বাঁশি হাতে পলায় মালা, তারে চায় ছত্তার পাগলা,
করব লইয়া উলামেলা, (২) প্রাণবন্ধুর সনে…(ঐ)

সরল অর্থে ‘বেড়া’ হচ্ছে  প্রতিবন্ধকতা তথা বাধা তৈরির উপকরণ। আর ‘পিরিতের বেড়া’ মানে ভালোবাসায় বাধা। কিন্তু ভালোবাসার এই বাধা তথা প্রতিবন্ধকতা ‘লিচুর বাগানে’ কেন? কবিতা তথা গানে অর্থের তারতম্য অর্থের অনুগত না হয়ে বোধ কিংবা ভাবনার পরবশে প্রস্ফুটিত হয়। ব্যক্তিবিশেষে তা ভিন্ন ভিন্ন অর্থ লাভ করে, ভিন্ন ভিন্ন মূল্য পায়।

আরও পড়ুন‘লিচুর বাগানে’ গানটি দিয়ে আলোচিত, কে এই ছত্তার পাগলা ০৬ জুন ২০২৫

‘কে দিল পিরিতের বেড়া, লিচুরও বাগানে’ একটি ‘ঘাটু গান’ বা ‘ঘেটু গান’। এই গান প্রসঙ্গে জানা যায়, এই গানের অন্যতম অনুষঙ্গ ছিল নৃত্য। অল্প বয়সী একটি ছেলেকে মেয়ে সাজিয়ে তার নৃত্যের মধ্য দিয়ে ঘেটু গান পরিবেশিত হতো। সঙ্গে থাকত ঢোল, হারমোনিয়াম, বাঁশি ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র। কয়েকটি ‘ঘেটু গানে’র দৃষ্টান্ত দেখা যাক।
(১)
‘তুই আমারে চিনলে নারে
আমি তো রসের কমলা।
বন্ধুর বাড়ি আমার বাড়ি
মধ্যে নলের বেড়া।’
(২)
ঘুমাইলা ঘুমাইলারে বন্ধু
পান খাইলায়না
এক বালিশে দুইটি মাথা
সুন্দর কইরা কওরে কথা।
গানগুলো থেকে উপলব্ধি করতে কষ্ট হয় না যে ‘ঘেটু গানে’ যেমন ভাষার সারল্য আছে, তেমনিভাবে রূপকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে যাপিত জীবনের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে থাকা নানা উপকরণ। আর এ ক্ষেত্রে গান রচনার সময় রচয়িতা তাঁর আশপাশ থেকেই গান নির্মাণের উপকরণগুলো যে নিয়ে থাকবেন, সেই ধারণাও পাওয়া যায়। ‘লিচুর বাগানে’ গানের ক্ষেত্রেও বোধ করি এটা ঘটেছে। তাই এই গানে যেমন ‘লিচু বাগানে’র কথা আছে, একইভাবে আছে ‘পাখি’, ‘বাঁশি’ ও ‘লিচু’র কথাও। পাখিকে লিচু না খাওয়ার অনুরোধ করলেও পাখি যেন খেতে না পারে সে কারণেই যে বেড়া দেওয়া হয়েছে; সেই ব্যথাও গানটিতে ফুটে উঠেছে। সব মিলিয়ে ‘লিচুর বাগান’ শেষ পর্যন্ত ‘লিচুর বাগানে’ সীমাবদ্ধ থাকেনি। হয়ে উঠেছে ভালোবাসার প্রতীক।

কথায় আছে, ভালোবাসা জয় করে নিতে হয়। জিতে নেওয়ার মধ্যেই আছে অপার আনন্দ। ভালোবাসায় প্রতিবন্ধকতা থাকাটা মোটেও দোষের নয়। বরং বাধা না থাকাটাই যেন আশ্চর্যের। একইভাবে ভালোবাসা জিতে নেওয়ার পরও পেয়ে গেছি বলে হাল ছেড়ে দিলে চলে না। ‘লিচুর বাগান’কে এ ক্ষেত্রে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করলে, ‘লিচুর বাগানে’ ‘পিরিতের বেড়া’ তথা ভালোবাসার বেষ্টনী দেওয়াটাই যুক্তিযুক্ত। কেননা ‘ভালোবাসা’কে ভালোবাসা দিয়েই আগলে রাখতে হয়। প্রবল যত্নে আঁকড়ে রাখতে হয়। যেন কোনো কৌতূহলেই তা দুলে না ওঠে, হারিয়ে না যায়।

আরও পড়ুনসাবিলা তো ‘লিচুর বাগানে’ দিয়ে কী যে আগুন লাগিয়ে দিল...০৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মজাদার ডেজার্ট রেভানির রেসিপি
  • পেশোয়ারি বিফের রেসিপি
  • চিকেন বটি মাসালার রেসিপি
  • ‘লিচুর বাগানে’ যে কারণে ‘পিরিতের বেড়া’ দিতে হয়