‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। মঙ্গলবার রাতে এ অধ্যাদেশের গেজেট জারি করা হয়। প্রতারণার মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা নিলে এতে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে। এর আগে গত ১৫ মে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।

অধ্যাদেশের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা যে কোনো শ্রেণির আহত জুলাইযোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা জ্ঞাতসারে কোনো মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন করে বা বিভ্রান্তিকর কাগজাদি দাখিল করে নিজেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত জুলাইযোদ্ধা দাবি করে কোনো চিকিৎসা সুবিধা বা আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন সুবিধা দাবি করেন বা গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া সুবিধা বা আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে।’

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ, পুনর্বাসনসহ গণঅভ্যুত্থানের মর্ম ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। যেহেতু সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে এটি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে– আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে, তাই সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন।’

পুনর্বাসনের বিষয়ে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে শহীদ হয়েছেন এমন ব্যক্তির পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য এবং আহত জুলাইযোদ্ধাদের অনুকূলে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক উপার্জনমুখী কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সহজ শর্তে ঋণ বা এমন সুবিধাদি প্রদান এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা প্রদান।

এরই মধ্যে গঠন করা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ এ অধ্যাদেশের অধীনে আনা হয়েছে। জুলাই শহীদ ও আহতদের তালিকাও এই অধ্যাদেশের অধীনে প্রকাশ করা হয়েছে বলে ধরা হবে। অধ্যাদেশে আহতদের তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের যথাক্রমে ‘জুলাই শহীদ’ এবং ‘জুলাইযোদ্ধা’র স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গণঅভ য ত থ ন জ ল ই গণহত য জ ল ই গণঅভ য ত থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫

টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।

আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।

এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।

রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটি পুনর্বহাল
  • সিলেটে পাথরবাহী ট্রাক্টরচাপায় পর্যটক নিহত, আহত ৫
  • ক্রিকেট ম্যাচের দায়িত্ব পালন করতে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনা, আহত ২৭ নারী পুলিশ সদস্য
  • রূপগঞ্জে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে লিফলেট বিতরণ 
  • ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫