চোখের কর্নিয়া বা লেন্স যদি সঠিকভাবে আলোর প্রতিচ্ছবি রেটিনায় (চোখের একটি গুরুত্বপূর্ণ পাতলা পর্দার মতো অংশ) ফেলতে না পারে, তখন কোনো বস্তু ঝাপসা দেখা যায়। এই সমস্যা দূর করতে চশমা ব্যবহার করা হয়। চশমা আলোকে রেটিনায় সঠিক বিন্দুতে পৌঁছাতে সাহায্য করে।
কেন কারও ছোটবেলা থেকেই চশমা লাগে? অনেক শিশুর জন্ম থেকেই দৃষ্টির সমস্যা থাকতে পারে। যেমন মায়োপিয়া (দূরে দেখার ক্ষেত্রে সমস্যা), হাইপারমেট্রোপিয়া (কাছ দেখা সমস্যা) ও অ্যাস্টিগমাটিজম (দূর ও কাছ—উভয়ই ঝাপসা দেখা)। এসব সমস্যা চোখের গঠনগত কারণে এবং জন্মগত বা বংশগত হতে পারে। আবার একটু বড় হওয়ার পর পড়াশোনার সময় চোখে চাপ পড়লে বা মুঠোফোন স্ক্রিন বেশি সময় দেখলে এই সমস্যা বেড়েও যেতে পারে।
চশমার ‘পাওয়ার’ মানে কী
চশমার পাওয়ার দুই রকম—প্লাস (+) ও মাইনাস (–)। মাইনাস পাওয়ার ব্যবহৃত হয় মায়োপিয়া বা দূরে দেখার সমস্যায়। আর প্লাস পাওয়ার কাছ থেকে পড়া বা দেখার অসুবিধা দূর করতে ব্যবহার করা হয়। অ্যাস্টিগমাটিজম থাকলে পাওয়ারের সঙ্গে সিলিন্ডার ও অ্যাক্সিস নামক মানও লেখা থাকে।
চোখের গঠন বয়সের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। তাই পাওয়ারও পরিবর্তিত হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে চোখের বৃদ্ধির কারণে পাওয়ার বাড়তে বা কমতে পারে। বড়দের ক্ষেত্রে চোখের বেশি পরিশ্রম, মুঠোফোন-কম্পিউটার বেশি দেখা, চোখের নানা রোগের কারণে পাওয়ার বদলাতে পারে।
চশমার প্রকারভেদ
সাধারণভাবে বছরে একবার চোখ পরীক্ষা করা উচিত। তবে শিশুদের বা যাঁদের পাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে, তাঁদের ছয় মাস পরপর চোখ পরীক্ষা করা ভালো। যদি চোখে জল পড়ে, মাথা ব্যথা করে, ঝাপসা দেখেন বা চোখ চুলকায়, তবে দ্রুত পরীক্ষা করানো উচিত।
রিডিং গ্লাস: বয়স বাড়লে (৪০ পেরিয়ে গেলে) অনেকেই কাছের লেখা পড়তে অসুবিধায় পড়েন। তখন প্লাস পাওয়ার রিডিং গ্লাস প্রয়োজন হয়।
বাইফোকাল চশমা: একই চশমায় ওপরে দূরের এবং নিচে পড়ার জন্য আলাদা লেন্স থাকে। এটি দূর ও কাছ—দুই দিকেই সুবিধা দেয়।
প্রোগ্রেসিভ লেন্স: এটি বাইফোকালের আধুনিক রূপ, যাতে দূর, মাঝামাঝি ও কাছের জন্য আলাদা পাওয়ার থাকে, কিন্তু কোনো দৃশ্যমান ভাগ থাকে না।
রোদচশমা ও পাওয়ার রোদচশমা: সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চোখ রক্ষা করে।
অ্যান্টি-রিফ্লেকশন ও ব্লু-লাইট কোটিং: যাঁরা বেশি কম্পিউটার বা মুঠোফোন ব্যবহার করেন, তাঁদের চোখে চাপ কমাতে সাহায্য করে।
মনে রাখবেন
চোখের ব্যায়াম, পুষ্টিকর খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম ও কম স্ক্রিন টাইম চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে। অনেকে লেন্স বা লেজার অপারেশন করতে চান, কিন্তু সব সমস্যার সমাধান এতে হয় না। সঠিক সময়ে চোখ পরীক্ষা, উপযুক্ত চশমা ব্যবহার ও সচেতন থাকলে চোখ সুস্থ রাখা সম্ভব।
অধ্যাপক ডা.
ইফতেখার মো. মুনির: পরিচালক, বাংলাদেশ আই হসপিটাল, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র পর ক ষ সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
চশমা কেন ও কোনটা পরবেন
চোখের কর্নিয়া বা লেন্স যদি সঠিকভাবে আলোর প্রতিচ্ছবি রেটিনায় (চোখের একটি গুরুত্বপূর্ণ পাতলা পর্দার মতো অংশ) ফেলতে না পারে, তখন কোনো বস্তু ঝাপসা দেখা যায়। এই সমস্যা দূর করতে চশমা ব্যবহার করা হয়। চশমা আলোকে রেটিনায় সঠিক বিন্দুতে পৌঁছাতে সাহায্য করে।
কেন কারও ছোটবেলা থেকেই চশমা লাগে? অনেক শিশুর জন্ম থেকেই দৃষ্টির সমস্যা থাকতে পারে। যেমন মায়োপিয়া (দূরে দেখার ক্ষেত্রে সমস্যা), হাইপারমেট্রোপিয়া (কাছ দেখা সমস্যা) ও অ্যাস্টিগমাটিজম (দূর ও কাছ—উভয়ই ঝাপসা দেখা)। এসব সমস্যা চোখের গঠনগত কারণে এবং জন্মগত বা বংশগত হতে পারে। আবার একটু বড় হওয়ার পর পড়াশোনার সময় চোখে চাপ পড়লে বা মুঠোফোন স্ক্রিন বেশি সময় দেখলে এই সমস্যা বেড়েও যেতে পারে।
চশমার ‘পাওয়ার’ মানে কী
চশমার পাওয়ার দুই রকম—প্লাস (+) ও মাইনাস (–)। মাইনাস পাওয়ার ব্যবহৃত হয় মায়োপিয়া বা দূরে দেখার সমস্যায়। আর প্লাস পাওয়ার কাছ থেকে পড়া বা দেখার অসুবিধা দূর করতে ব্যবহার করা হয়। অ্যাস্টিগমাটিজম থাকলে পাওয়ারের সঙ্গে সিলিন্ডার ও অ্যাক্সিস নামক মানও লেখা থাকে।
চোখের গঠন বয়সের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। তাই পাওয়ারও পরিবর্তিত হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে চোখের বৃদ্ধির কারণে পাওয়ার বাড়তে বা কমতে পারে। বড়দের ক্ষেত্রে চোখের বেশি পরিশ্রম, মুঠোফোন-কম্পিউটার বেশি দেখা, চোখের নানা রোগের কারণে পাওয়ার বদলাতে পারে।
চশমার প্রকারভেদ
সাধারণভাবে বছরে একবার চোখ পরীক্ষা করা উচিত। তবে শিশুদের বা যাঁদের পাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে, তাঁদের ছয় মাস পরপর চোখ পরীক্ষা করা ভালো। যদি চোখে জল পড়ে, মাথা ব্যথা করে, ঝাপসা দেখেন বা চোখ চুলকায়, তবে দ্রুত পরীক্ষা করানো উচিত।
রিডিং গ্লাস: বয়স বাড়লে (৪০ পেরিয়ে গেলে) অনেকেই কাছের লেখা পড়তে অসুবিধায় পড়েন। তখন প্লাস পাওয়ার রিডিং গ্লাস প্রয়োজন হয়।
বাইফোকাল চশমা: একই চশমায় ওপরে দূরের এবং নিচে পড়ার জন্য আলাদা লেন্স থাকে। এটি দূর ও কাছ—দুই দিকেই সুবিধা দেয়।
প্রোগ্রেসিভ লেন্স: এটি বাইফোকালের আধুনিক রূপ, যাতে দূর, মাঝামাঝি ও কাছের জন্য আলাদা পাওয়ার থাকে, কিন্তু কোনো দৃশ্যমান ভাগ থাকে না।
রোদচশমা ও পাওয়ার রোদচশমা: সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চোখ রক্ষা করে।
অ্যান্টি-রিফ্লেকশন ও ব্লু-লাইট কোটিং: যাঁরা বেশি কম্পিউটার বা মুঠোফোন ব্যবহার করেন, তাঁদের চোখে চাপ কমাতে সাহায্য করে।
মনে রাখবেন
চোখের ব্যায়াম, পুষ্টিকর খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম ও কম স্ক্রিন টাইম চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে। অনেকে লেন্স বা লেজার অপারেশন করতে চান, কিন্তু সব সমস্যার সমাধান এতে হয় না। সঠিক সময়ে চোখ পরীক্ষা, উপযুক্ত চশমা ব্যবহার ও সচেতন থাকলে চোখ সুস্থ রাখা সম্ভব।
অধ্যাপক ডা. ইফতেখার মো. মুনির: পরিচালক, বাংলাদেশ আই হসপিটাল, ঢাকা