২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটে লিফটকে মূলধনি যন্ত্রপাতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা ও তার ওপর বিদ্যমান বাড়তি শুল্ক–কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ এলিভেটর, এসকেলেটর অ্যান্ড লিফট ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বেলিয়া)।

আজ বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি এমদাদ উর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মো.

শফিউল আলম উজ্জ্বল। এ ছাড়া সংগঠনের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। খবর বিজ্ঞপ্তি

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২১–২২ অর্থবছর পর্যন্ত লিফট মূলধনি যন্ত্রপাতি হিসেবে আমদানি করা হতো। মূলধনি যন্ত্রপাতিতে আমদানি শুল্ক থাকে ন্যূনতম। কিন্তু হঠাৎ বিগত সরকার ২০২২–২৩ অর্থবছর থেকে লিফটকে বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করে। এতে শুল্ক–কর অনেক বেড়ে যায়। এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামে বাংলাদেশ এলিভেটর, এসকেলেটর অ্যান্ড লিফট ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু সে প্রতিবাদ আমলে নেওয়া হয়নি।

বেলিয়ার নেতারা বলেন, ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটেও লিফটকে বাণিজ্যিক পণ্য শ্রেণিতে রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে পণ্যটির করহার আরও বাড়ানো হয়েছে। ফলে লিফট খাতে ১৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক, ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর, ৫ শতাংশ অগ্রিম কর ও নতুন আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ মোট শুল্ক–কর দাঁড়িয়েছে ৪৩ শতাংশ। গত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে যা ছিল ২৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

সংগঠনের সভাপতি এমদাদ উর রহমান বলেন, লিফট বিক্রি ও চুক্তি সম্পাদনের পরে উৎপাদন ও আমদানি করা পর্যন্ত দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হয়। চলতি জুনের আগে লিফটের ক্রয়াদেশ, ঋণপত্র খোলা, প্রস্তুতি পর্যায়, জাহাজীকরণ অবস্থায় ও বন্দরে শুল্কায়ন পর্যায়ে সহস্রাধিক লিফট প্রক্রিয়াধীন। এই লিফটগুলো আগের ২৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ শুল্কহারে বিক্রি করা হয়েছে। এখন সেগুলোর জন্য নতুন ধার্য করা বাড়তি হারে অর্থাৎ ৪৩ শতাংশ হারে শুল্ক–কর দিতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে জুনের আগে লিফটগুলোর জন্য আগের হারে শুল্ক–কর ধার্যের জন্য জোর দাবি জানান তিনি।

বেলিয়ার সাধারণ সম্পাদক মো. শফিউল আলম বলেন, দেশের আবাসন খাতের উন্নয়নে লিফট অন্যতম প্রধান উপকরণ। ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অতিরিক্ত শুল্ক–কর আরোপের ফলে পণ্যটির দাম অনেক বেড়ে যাবে এবং ভোক্তারা ক্ষতির মুখে পড়বেন। সার্বিকভাবে আবাসন খাতের উন্নয়ন ঝিমিয়ে পড়বে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন খাতটির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ী ও হাজার হাজার কর্মী। তাই প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদনের আগেই লিফটের বাড়তি এই শুল্ক–কর প্রত্যাহার ও আগের মতো মূলধনি যন্ত্রপাতি হিসেবে গণ্য করার দাবি জানান তিনি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের অতিরিক্ত মূল্যায়নের ফলে আমদানি পর্যায়ে লিফটের জন্য অতিরিক্ত শুল্ক ও কর পরিশোধ করতে হচ্ছে। এ প্রক্রিয়াটি বাস্তবসম্মত হওয়া প্রয়োজন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ল ক কর প রস ত র জন য ম লধন আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ডিজিটাল খাতে বাজেটের প্রভাব কেমন

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, বাজেট গতানুগতিক। দেশের ইন্টারনেট খাতের জন্য বিশেষ কিছু নেই। মাঝারি ও ছোট আইএসপিদের জন্য বাজেটে তেমন কোনো সুখবর নেই। আগে যা ছিল, এখনও তা-ই আছে। ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী যারা আছেন, তারা শতভাগ দেশি উদ্যোক্তা। তবে করপোরেট গ্রাহকের জন্য ইন্টারনেট সেবা দেয়, তারা 
কিছুটা সুবিচার পেতে পারেন।
কারণ, সব ধরনের করপোরেট প্রতিষ্ঠান অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স (এআইটি) কেটে রেখে বিল পরিশোধ করে। এআইটি ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করায় স্বল্প সংখ্যক আইএসপি কিছুটা সুবিচার পেতে পারে। সরকার ইন্টারনেটের দাম কমাতে চায়। কিন্তু ভ্যাট, ট্যাক্সে হাত দেবে না; ইকুইপমেন্টের মধ্যেও হাত দেবে না। ফলে কোনো লাভ হবে না। ভ্যাট, ট্যাক্সে হাত না দিলে ইন্টারনেটের দাম কমবে না।
শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বাজেট প্রসঙ্গে বলেন, আমি মনে করি, ভোক্তা পর্যায়ে স্মার্টফোন খাতে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। উৎপাদন পর্যায়ে মোবাইল হ্যান্ডসেট নির্মাতার লাভের পরিমাণ কিছুটা কমে যেতে পারে। তবে সেটিও খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। ইতোমধ্যে বেশির ভাগ মোবাইল হ্যান্ডসেট প্রস্তুতকারক প্রায় ৩০ শতাংশ মূল্য সংযোজন করে এবং ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে এত বেশি ব্যয় হয় না। ধারণা করছি, ব্যবসায়িক পর্যায়েও এর কোনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে না।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ওভার দ্য টপ প্ল্যাটফর্ম (ওটিটি) পরিষেবায় আরোপ করা হয়েছে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক। এতে চরকি, নেটফ্লিক, বঙ্গ ছাড়াও কয়েকটি ওটিটিতে সিনেমা ও সিরিজ ছাড়াও ভালো মানের কনটেন্ট দেখতে দর্শকের ব্যয় বাড়বে। বর্তমানে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর দিতে হয়।
সংশ্লিষ্ট অনেকে মনে করছেন, ওটিটি পরিষেবার ওপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দূরদৃষ্টিহীন সিদ্ধান্ত। দেশের উদীয়মান ডিজিটাল অর্থনীতি ও উদ্ভাবনী শিল্পের বিকাশ ব্যাহত করবে। সিদ্ধান্তটি একদিকে যেমন দর্শকের ব্যয় বাড়াবে, অন্যদিকে ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বড় ধরনের বাধা হবে। সরকারের উচিত, দ্রুত সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করা এবং ডিজিটাল অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সহায়ক নীতিমালা গ্রহণ করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লিফটের ওপর বাড়তি কর প্রত্যাহারের দাবি বেলিয়ার
  • স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের ৯ মাসে লোকসান কমেছে ১৯.৭৯ শতাংশ
  • বাজেটকে সমৃদ্ধ করতে নারীর প্রতি আরও সংবেদনশীল হতে হবে: ফওজিয়া মোসলেম
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৩৫ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন, বেতন-ভাতায় খরচ ৬৩%
  • ঢাবির ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেট প্রকাশ, অবহেলিত গবেষণা ও স্বাস্থ্য খ
  • ঢাবিতে ১ হাজার ৩৫ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন, গবেষণায় মাত্র ২.০৮%
  • বাজেটে পানি–স্যানিটেশনে কম বরাদ্দে ঝুঁকিতে নাগরিক অধিকার: হোসেন জিল্লুর
  • বাজেটে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন খাতে বরাদ্দ কম, বড় বৈষম্য
  • ডিজিটাল খাতে বাজেটের প্রভাব কেমন