বাংলাদেশের ‘সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা ঝুঁকি’ হিসেবে জলবায়ু সংকটের কথা বলেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বুধবার ঢাকার মিরপুরে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। 

তিনি বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে থাকা দেশের এক-তৃতীয়াংশ ভূখণ্ডকে ডুবিয়ে দিতে পারে। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে স্যাটেলাইটভিত্তিক তথ্য ও প্রশিক্ষণ সহায়তা দিতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি। 

উপদেষ্টা বলেন, এখন প্রয়োজন সেই তথ্য বিশ্লেষণের সক্ষমতা গড়ে তোলা ও তা সাধারণ মানুষের কাছে সহজভাবে পৌঁছে দেওয়া। জাতীয় নিরাপত্তা এখন কেবল অস্ত্রের ওপর নির্ভর করে না, এটি জনমতের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিভ্রান্তিকর তথ্য একটি মনস্তাত্ত্বিক অস্ত্র, এটি মোকাবিলায় চাই সত্য, আস্থা এবং তথ্যভিত্তিক সচেতনতা।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, তথ্য যদি গোপন রাখা হয়, সত্য যদি দমন করা হয়, তাহলে আমরা টেকসই উন্নয়ন ও নিরাপত্তা– দুটোই হারাব। এই আলোচনার মাধ্যমে আমরা যেন একটি তথ্যভিত্তিক, সুরক্ষিত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব শ উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

হামলায় যুক্তরাষ্ট্রকে জড়াতে চায় ইসরায়েল, ইরানের হুঁশিয়ারি

ইসরায়েল ও ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকেও ইরানে হামলার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইরানে হামলায় ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও যোগ দেবে কি না, সেটা নিয়ে এখন আলোচনা হচ্ছে বেশি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন মন্তব্য ও তৎপরতায়ও সেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে জড়াতে পারে, এমন আলোচনা শুরু হয় কানাডায় জি-৭ সম্মেলন শেষ না করেই ট্রাম্প ওয়াশিংটনে ফিরে আসায়। ট্রাম্প দেশে ফিরেই যুক্তরাষ্ট্র সময় মঙ্গলবার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকেন। মন্ত্রিসভার সদস্য, সামরিক নেতৃত্ব ও উপদেষ্টাদের সঙ্গে ট্রাম্পের ৮০ মিনিটের এই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালাবে কি না, সেই আলোচনা হয়।

তবে গতকাল বুধবার পর্যন্ত ওই বৈঠক নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। আলোচনা সম্পর্কে জানেন, এমন পাঁচটি সূত্র বলেছে, সেই বৈঠকে ইসরায়েলের সঙ্গে মিলে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা শুরু করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে ইরানে হামলা চালানোর বিষয়ে ট্রাম্পের উপদেষ্টাদের কেউ কেউ ভিন্নমত পোষণ করেন।

ইরানে ওয়াশিংটনের হামলার পরিকল্পনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে তেহরান। ইরান আত্মসমর্পণ করবে না মন্তব্য করে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি গতকাল বলেন, এটা করলে যুক্তরাষ্ট্রকে অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

এদিকে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো গতকাল বুধবার পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইরান ও ইসরায়েল। ইরানের একটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরায়েল। ইসরায়েলে ব্যালিস্টিকের পাশাপাশি গতকাল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।

ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের জ্যেষ্ঠ ফেলো এলি জেরানমায়েহর মতে, ট্রাম্প ইরানে হামলার সিদ্ধান্ত নিলে ইরান সেটা তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে বিবেচনা করবে। এতে অভূতপূর্ব এক সংকট তৈরি হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যদি এই প্যান্ডোরার বাক্স একবার খুলে যায়, আমরা জানি না পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে।’

আলোচনায় সরকার পরিবর্তন

ইসরায়েল-ইরান সংঘাত নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, নতুন করে আরও সামরিক হস্তক্ষেপ ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এই সংঘাত যেন আন্তর্জাতিক পরিসরে ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য আমি সবাইকে জোরালোভাবে সতর্ক করছি।’

সংঘাতের বিস্তার ঠেকাতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গতকাল তিনি বলেছেন, এই সংকটে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত মস্কো। এ বিষয়ে অন্যান্য আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে তাঁর আলোচনা হয়েছে।

ইসরায়েলের হামলার মধ্যে ইরানে সরকার পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। ইসরায়েলি একাধিক মন্ত্রী এ নিয়ে কথা বলছেন। ইরানের শেষ শাহ মোহাম্মদ রেজা শাহ পাহলভির ছেলে রেজা পাহলভি বলেছেন, ইরানে খামেনি যুগের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। সরকার পতনের পর ১০০ দিনের একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়ে প্রস্তুত আছেন বলেও জানান তিনি।

তবে ইরানে সরকার পরিবর্তন হলে তা একটি ‘বড় ভুল’ হবে বলে মনে করেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। তিনি বলেন, ‘সবাইকে আবার আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে আমাদের প্রয়োজন।’

ইসরায়েলের লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রকে টেনে আনা

জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে বৈঠকের পরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো এই তথ্য জানালেও, তাঁদের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে, সে সম্পর্কে কিছু জানায়নি।

গতকাল হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলাপকালে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় ট্রাম্পকে। এ সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি এটা বলতে পারছি না। আমি এটা করতে পারি, আবার না–ও পারি। কেউ জানে না আমি কী করতে যাচ্ছি।’

এর আগে মঙ্গলবার ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্পের একাধিক পোস্ট থেকেও যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা শুরু করতে পারে—এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে।’ এরপর আরেক পোস্টে ইরানকে ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের’ আহ্বান জানান তিনি। ট্রাম্প আরেক পোস্টে দাবি করেন, ‘আমরা এখন ইরানের আকাশ পুরোপুরি ও সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি।’ ট্রাম্পের বক্তব্যে ‘আমরা’ শব্দটি দেখে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও ইরানে হামলায় যোগ দিচ্ছে—এমন আলোচনা জোরালো হয়।

যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইরানে হামলা চালাবে কি না, এমন প্রশ্ন করা হলে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। গতকাল তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত গোপনীয় একটি বিষয়। তাই বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালালে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত এক নতুন মোড় নেবে। শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্বেই এর প্রভাব হবে ভয়াবহ।

যুক্তরাষ্ট্রকে এই সংঘাতে যুক্ত করতে ইসরায়েল সব চেষ্টা চালাচ্ছে বলে মনে করেন ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই৬-এর সাবেক প্রধান জন সাওয়ার্স। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘ইসরায়েলের লক্ষ্য আমেরিকানদের এই সংঘাতে সরাসরি যুক্ত করা। কারণ, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাতে পারলেও সেগুলো ধ্বংস করার ক্ষমতা ইসরায়েলের নেই। এই ক্ষমতা শুধু যুক্তরাষ্ট্রেরই আছে।’

শুক্রবার ইসরায়েলি হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনার ওপরের অংশ ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু ফর্দোয় ইরানের আরেকটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রের ক্ষতি করতে পারেনি ইসরায়েল। পাহাড়ের ভূগর্ভে ৯০ মিটার (প্রায় ৩০০ ফুট) গভীরের এই কেন্দ্র ধ্বংস করতে হলে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ১৩ হাজার ৬০০ কেজির বোমা জিবিইউ–৫৭ এবং মার্কিন বোমারু বিমান বি–২ প্রয়োজন।

ইসরায়েলে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ইসরায়েলের বাণিজ্যিক রাজধানী তেল আবিবসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে ইরান। গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানানো হয়, ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তেহরান। ‘ফাত্তাহ’ নামের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সফলভাবে ভেদ করে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে।

ইরান বলেছে, ইসরায়েলের একাধিক বিমানঘাঁটিতে গতকাল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় তারা। হাইপারসনিক ছাড়াও খাইবার-শাকান ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। হামলার লক্ষ্যবস্তুগুলোর একটি ছিল ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের মেরন বিমানঘাঁটি। এ ছাড়া তেহরান, ইস্পাহানসহ দেশটির বিভিন্ন স্থান থেকে ১৪টি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে।

ইরানের বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার দাবি করে ইসরায়েল বলেছে, গতকালের এসব হামলায় কারও প্রাণহানি হয়নি।

আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সংঘাত শুরুর প্রথম দিকে একসঙ্গে কয়েক ডজন করে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালাতে দেখা গেছে ইরানকে। কিন্তু গত দুই দিনে সেই সংখ্যাটা কমে গেছে

পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা ইসরায়েলের

ইসরায়েলও ইরানে হামলা অব্যাহত রেখেছে। গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও ইরানে হামলা চালাচ্ছিল তারা। এর আগে বিকেলে এক বিবৃতিতে ইসরায়েল জানায়, সর্বশেষ কয়েক ঘণ্টায় অর্ধশতাধিক আকাশযান (যুদ্ধবিমান ও ড্রোন) দিয়ে তেহরানসহ ৪০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে তারা। পাশাপাশি ইরানের ১০টি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে।

তেহরানের অদূরে কারাজ শহরে ইরানের একটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরায়েল। জাতিসংঘের পারমাণবিক কর্মসূচি নজরদারিবিষয়ক সংস্থা আইএইএ জানায়, হামলায় পারমাণবিক স্থাপনার দুটি ভবন ধসে পড়েছে।

ইসরায়েল দাবি করেছে, তেহরানের অদূরে খোজিরসহ ১২টি ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে তারা। খোজির ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনকেন্দ্র। গত বছরের অক্টোবরেও ইরানের এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা তেহরানে ‘অবিরত ও তীব্র’ বিস্ফোরণের খবর জানিয়েছে। তেহরানের অদূরে ইমাম হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়েও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ দাবি করেন, গতকাল ইরানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সদর দপ্তর ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

ইরান ৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে

ইসরায়েল জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলে ৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। হামলার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এমন স্থানের সংখ্যা ৪০। এসব হামলায় প্রায় ১৬ হাজার অবকাঠামো ও এক হাজারের বেশি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইসরায়েলের পক্ষ থেকে দুই দিন আগে জানানো হয়েছিল, ইরানের হামলায় দেশটিতে ২৪ জন নিহত হয়েছেন। তবে এর পর থেকে হালনাগাদ তথ্য দিচ্ছে না ইসরায়েল।

এদিকে ওয়াশিংটনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যাকটিভিস্টস জানায়, ইরানে প্রায় ৬০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। যদিও ইরানের দেওয়া সর্বশেষ হিসাবে নিহতের সংখ্যা দুই শতাধিক।

সংস্থাটি বলছে, ইসরায়েলের হামলায় ইরানে ৫৮৫ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩২৬ জন আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২৩৯ জন বেসামরিক ও ১২৬ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। এর মধ্যে ইরানের সামরিক বাহিনীর দুই ডজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা রয়েছেন।

গত সোমবার ইরানের দেওয়া সর্বশেষ হিসাবে, সেদিন পর্যন্ত হামলায় ২২৪ জন নিহত ও ১ হাজার ২৭৭ জন আহত হয়েছিলেন।

মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন উপস্থিতি

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের যুক্ত হওয়ার আলোচনার মধ্যে যুক্তরাজ্যের পূর্বাঞ্চলীয় একটি ঘাঁটি ছেড়েছে বেশ কিছু মার্কিন যুদ্ধবিমান। ছবিতে দেখা যায়, ইংল্যান্ডে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি লেকেনহিথ থেকে উড়ে যাচ্ছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের একটি বহর। এসব যুদ্ধবিমানের মধ্যে আকাশে জ্বালানি সরবরাহকারী (রিফুয়েলিং) ট্যাংকারও ছিল।

মধ্যপ্রাচ্যের ১৯টি স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ থেকে ৫০ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে। এর মধ্যে অঞ্চলটিতে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে রয়েছে মার্কিন বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস কার্ল ভিনসন। ইউএসএস নিমিৎজ নামে আরও একটি রণতরি মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছে। এ ছাড়া আরব সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ডেস্ট্রয়ার যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা রয়েছে।

এর বাইরে সাইপ্রাসে মার্কিন সেনাঘাঁটি আছে। এ ছাড়া বাহরাইনে আছে মার্কিন নৌঘাঁটি। এখন সবটা নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্র কী সিদ্ধান্ত নেয় এবং ইরানে হামলার ক্ষেত্রে কতটা জড়াতে চায় তারা।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চিন্তন প্রতিষ্ঠান স্টিমসন সেন্টারের সম্মাননীয় ফেলো বারবারা স্লাভিনের মতে, ট্রাম্প সব সময় জয়ী হতে চান। তিনি আল–জাজিরাকে বলেন, ইরানের সঙ্গে সংঘাতের বর্তমান যে পরিস্থিতি, তাতে করে ট্রাম্প মনে করছেন ইসরায়েলই জয়ী হতে যাচ্ছে। এ কারণেই তিনি ইরানে সরাসরি হামলার বিষয়ে একটা রহস্য তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থাৎ নিজেকে আলোচনার কেন্দ্রে আনতে চাইছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ