ময়মনসিংহে একদিনে পৃথক পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ ১০ জন নিহত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১১ জন।

শুক্রবার (২০ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফুলপুর উপজেলার ইন্দারাপার মোড়ে কুরিয়ার ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে ও সন্ধ্যা ৬ টার দিকে পার্শ্ববর্তী তারাকান্দা উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকায় হিমালয় ফিলিং স্টেশনের সামনে দুর্ঘটনায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

তারাকান্দায় নিহতরা হলেন- জেলার ধোবাউড়া উপজেলার বরাটিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল বারেকের স্রী জবেদা খাতুন (৮৫), ফুলপুর উপজেলার মদীপুর সুতারপাড়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে রাকিবুল হাসান (১৫) ও ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের শুইলাম বুধবারিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলম (৩৫)। তাদের মধ্যে মোহাম্মদ আলম সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক ছিলেন।

ফুলপুরে নিহত ৭ জনের মধ্যে ৪ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- একই উপজেলার জসিম উদ্দিনের ছেলে ফরিদ মিয়া (৩৮), ময়েজ উদ্দিনের ছেলে জহুর আলী (৭০), আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী হাসিনা খাতুন (৫০) ও রংপুরের আজিম উদ্দিন (৩৫)।

পুলিশ ও স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, শুক্রবার রাতে হালুয়াঘাট থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী বাংলা পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটি দ্রুতগতিতে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাসটি ইন্দারাপার মোড়ে কুরিয়ার ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে বিপরীত দিক থেকে আসা মাহিন্দ্রাকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মাহিন্দ্রায় থাকা ৪ জন পুরুষ ও একজন নারী নিহত হয়। এসময় গুরুতর আহত হয় আরও ৮ জন। তাদের মধ্যে দুইজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ৬ জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বাসচালক পালিয়ে যান। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং  যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।

এর আগে বিকেলে ময়মনসিংহ-শেরপুর আঞ্চলিক সড়কে উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকায় হিমালয় ফিলিং স্টেশনের সামনে একটি অ্যাম্বুল্যান্স যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার যাত্রী এক নারী ও এক শিশু নিহত হয়। এসময় অটোরিকশাচালক ছাড়াও আরও তিন যাত্রী আহত হন। এছাড়াও আহত হয় অ্যাম্বুল্যান্সের হেলপারসহ আরও একজন। পরে আশপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অটোচালক মোহাম্মদ আলম মারা যান।

ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

আব্দুল হাদি বলেন, ‘‘বিক্ষুব্ধ জনতা বাসে আগুন ধরিয়ে দিলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ারসার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। নিহতদের মধ্যে সবাই মাহিন্দ্রার যাত্রী ছিলেন। তাদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থাও প্রক্রিয়াধীন।’’ 

তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. টিপু সুলতান বলেন, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্সটি পার্শ্ববর্তী হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের। গাড়িতে কোনো রোগী ছিল না। দুর্ঘটনার পরপরই চালক পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’’ 

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘রাতে ফুলপুরে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় ৬ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদেরকে অর্থোপেডিক্স ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে মাহিন্দ্রার একজন যাত্রী মারা গেছেন। মাহিন্দ্রার চালকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’’ 

তিনি আরও বলেন, ‘‘এছাড়া তারাকান্দায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত অবস্থায় আরও ৬ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদেরকে অর্থোপেডিক্স ও সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে অটোরিকশাচালক মারা গেছেন। অন্যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।’’ 

ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার পর দুইটি স্পট পরিদর্শন করেছি। মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। কয়েকজনের মরদেহ চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’’ 

ঢাকা/মিলন/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ঘটন য় উপজ ল র অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

অচলায়তন ভেঙে সক্রিয় হওয়ার অপেক্ষায় কোয়াব

‘‘কোনো একজন ব‌্যক্তির জন‌্য ক্রিকেট থেমে থাকতে পারে না।’’ মোহাম্মদ মিঠুন কখনো ভাবেননি ক্রিকেট মাঠে দাঁড়িয়ে কখনো এমন কথা বলতে পারবেন। সঙ্গেও এ-ও যোগ করেন, ‘‘এর আগে কখনো কোয়াবের সঙ্গে বিশেষ করে বর্তমান খেলোয়াড় কখনো জড়িত ছিল না। কারণ আমরা অনুভব করতাম যারা এর আগে দায়িত্বে ছিল, তারা আমাদের জন্য কাজ করবে। এই আশায় আমরা শেষ ১৫ বছর, ২০ বছর বা ৩০ বছর তাদের অপেক্ষায় কাটিয়ে দিয়েছি বা তাদের ওপর নির্ভর করে আমরা লম্বা সময় ভুগেছি।’’

জাতীয় দলে খেলা এই ক্রিকেটারের আঙুল তুলেছেন সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দূর্জয়ের ওপর। যিনি ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ‌্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সভাপতি ছিলেন ১৫ বছর। কোনো নির্বাচন, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীতা, কোনো বিরুদ্ধ আওয়াজ ছাড়াই হট সিটে বসে অনায়েসে দায়িত্ব পালন করেছেন। যদিও ক্রিকেটারদের অভিযোগ, ‘‘কেবল সিটটাই দখল করে রেখেছিলেন তিনি। কোনো দায়িত্বই পালন করেননি।’’

শুধু মিঠুন নয়, বাকি সব ক্রিকেটারদের একই অভিযোগ। তাদের এক দাবি, নির্বাচন। সোমবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জাতীয় দলের বর্তমান ক্রিকেটাররা, সাবেক ক্রিকেটাররা, পুলের ক্রিকেটাররা এবং বিভিন্ন লিগে খেলা প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় বিভাগের খেলোয়াড় এক হয়েছিলেন কোয়াবের নতুন অফিসে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ মিরপুরেই তাদের স্থায়ী ঠিকানা দিয়েছে। নতুন অফিসে চূড়ান্ত হয়েছে নির্বাচনের দিনক্ষণ।

আরো পড়ুন:

‘আমাদের হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে, আমরা বিধ্বস্ত’

ক্রিকেটকে এখনো উপভোগ করছেন সাকিব

আগামী ৪ সেপ্টেম্বর ক্রিকেটারদের সংগঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোয়াবের আহবায়ক সেলিম শাহেদ। এছাড়া কোয়াবের কাঠামোতে আসতে যাচ্ছে বড় পরিবর্তন। দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আসন্ন নির্বাচনে থাকছে না সাধারণ সম্পাদক (সেক্রেটারি) পদ। নতুন করে গঠিত হতে যাওয়া কমিটিতে থাকবে একজন সভাপতি, একজন সিনিয়র সহ-সভাপতি, একজন সহ-সভাপতি এবং আটজন কার্যনির্বাহী সদস্য।

সেলিম শাহেদ গনমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘আমাদের আজকে একটা মিটিং ছিল কোয়াবের, যেই মিটিংয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমাদের ইলেকশন কবে হবে এবং ইলেকশনের প্রসেসটা কী হবে। আমরা সেপ্টেম্বর মাসের ৪ তারিখে ইলেকশনের ডেট ফাইনাল করেছি এবং ৪ তারিখের মধ্যে আমাদের বাকি যে সমস্ত ইলেকশন রিলেটেড কাজ সেগুলো কমপ্লিট করার চেষ্টা করবো। অর্থাৎ মেম্বারশিপ, প্লাস নমিনেশন ফর্ম কেনা, নমিনেশন ফর্ম জমা দেওয়া, এই সমস্ত জিনিসপত্র আমরা কমপ্লিট করার চেষ্টা করবো এবং ৪ তারিখে, অর্থাৎ ৪ঠা সেপ্টেম্বর, আমরা ইলেকশনের জন্য প্রসিড করবো।’’

তিন সদস‌্যের নির্বাচন কমিশনও গঠন করা হয়েছে। ইলেকশন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে রাখা হয়েছে ইফতেখার রহমান মিঠুকে। তার সাথে দুই সদস্য হিসেবে আছেন নাসির আহমেদ নাসু  ও হাবিবুল বাশার সুমন।

কোয়াবের সদস‌্য হওয়ার জন‌্য নতুন ক্রাইটেরিয়াও ঠিক করা হয়েছে। আজীবন সদস‌্যপদ আগে ছিল না। নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে। যেখানে জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড়রা ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে এই পদ নিতে পারবেন। আর জাতীয় দলের বাইরের খেলোয়াড়দের গুনতে হবে ১ লাখ টাকা। ভোটাধিকার তারা পাবেন। লাগবে না কোনো বাৎসরিক ফি।

স্থায়ী সদস্যপদের ক্ষেত্রে, ১৯৭২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত জাতীয় দল, প্রথম শ্রেণি, লিস্ট ‘এ’ অথবা ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলেছেন এমন ক্রিকেটাররা ৫ হাজার টাকা দিয়ে এই পদ নিতে পারবেন। এই ক্যাটাগরির সদস্যদের বাৎসরিক ফি দেওয়া লাগবে।

এর বাইরে রয়েছে সহযোগী সদস্যপদ। এই ক্যাটাগরির জন্য ২ হাজার টাকা ফি ও বাৎসরিক ফি ১ হাজার ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এই সদস্যরা ভোটের অধিকার পাবেন না।

ঢাকা/ইয়াসিন/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভুল রেলস্টেশনে নামা তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় একজন গ্রেপ্তার
  • পাবনায় মসজিদের নির্মাণকাজ নিয়ে সংঘর্ষে আহত আরও একজনের মৃত্যু
  • গয়নার দোকান থেকে গুজবের বাজার—তামান্না অবশেষে মুখ খুললেন রাজ্জাক প্রসঙ্গে
  • বৃষ্টির দাপট চলবে আরো কয়েকদিন, কমবে পরের সপ্তাহে
  • আবুল হাসানকে নিয়ে নতুন গল্পগাছা ও পূর্বাপর
  • সরকারের কাছ থেকে ভোট আদায় করেই ছাড়ব: মির্জা আব্বাস
  • অচলায়তন ভেঙে সক্রিয় হওয়ার অপেক্ষায় কোয়াব
  • চার জেলায় বন্যার সতর্কতা
  • আনন্দ মোহনের অধ্যক্ষকে ওএসডি, অভিযোগ—তিনি আওয়ামী লীগের ‘দোসর’
  • চার বিভাগে বৃষ্টি বাড়তে পারে