দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা সীমান্তে ১১৭ ফুট উচ্চতায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ওড়ানো হয়েছে। এখন থেকে এই পতাকা নিয়মিত উড়বে। এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পতাকাস্ট্যান্ড হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাবান্ধা সীমান্তের শূন্যরেখা-সংলগ্ন বাংলাদেশের অংশে নির্মাণ করা পতাকাস্ট্যান্ডের নামফলক উন্মোচন করেন জেলা প্রশাসক মো.

সাবেত আলী। পরে বেলুন উড়িয়ে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে দেশের সর্বোচ্চ উচ্চতায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

এ সময় পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি, পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম, সিভিল সার্জন মিজানুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির পল্লি উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক ও পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, জেলা জামায়াতের আমির ইকবাল হোসাইনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বাংলাবান্ধা সীমান্তের শূন্যরেখার ওপারে ভারতের ফুলবাড়ী এলাকায় প্রায় ১০০ ফুট উচ্চতার একটি পতাকাস্ট্যান্ডে ভারতের জাতীয় পতাকা ওড়ানো হয়। কিন্তু বাংলাদেশের অংশে বড় কোনো পতাকাস্ট্যান্ডে পতাকা ওড়ানোর ব্যবস্থা ছিল না। এ জন্য ভারতের চেয়েও বেশি উচ্চতার পতাকাস্ট্যান্ড স্থাপন করে জাতীয় পতাকা ওড়ানোর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় সেখানে ১১৭ ফুট উঁচু পতাকাস্ট্যান্ড স্থাপনের কাজ শুরু হয়। আজ সেই পতাকাস্ট্যান্ড উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশের সর্বোচ্চ উচ্চতায় নিয়মিত জাতীয় পতাকা উড়বে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিকেএমইএ সভাপতি হাতেম ‘গণ-অভ্যুত্থানের শত্রু’ : এনসিপি নেতা আল আমিন

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল বিপর্যয় ও উত্তরণের করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ীক সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমকে গণ-অভ্যুত্থানের শত্রু আখ্যা দিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব ও শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান আব্দুল্লাহ আল আমিন। এ সময় তিনি হাতেমকে এ আয়োজনে স্পেস দেয়া উচিৎ হয়নি বলেও মন্তব্য করেন।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জ শহরের শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জেলার বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে এক বিশেষ মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।

সভায় আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, ‘আজ আসার পর দেখলাম একজন স্টেজে এসে ছাত্ররা কীভাবে পড়ালেখা করবে, রেজাল্ট ভালো করবে, ওই পরামর্শ দিচ্ছেন; যে ব্যক্তি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় শেখ হাসিনার মিটিংয়ে উপস্থিত হয়ে কীভাবে ছাত্রদের আন্দোলন দমন করতে হবে, সেই অনুরোধ করেছিলেন।’

আব্দুল্লাহ আল আমিন আরও বলেন, ‘আন্দোলন চলাকালীন শেখ হাসিনার সামনে দাঁড়িয়ে সে ছাত্রদের দমনের ব্যাপারে বলেছে। তাকে আমরা এই স্পেস দিতে পারি না। খুবই দুঃখ লেগেছে, নারায়ণগঞ্জের মানুষ আমরা এগুলো জানি। জানার পরও কেন আমরা এটা করি? আমরা কি সব ভুলে গেলাম। এই ভুলে যাওয়া আমাদের উচিত হয়নি।

এর আগে এই এনপিসি নেতা বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক নানান ধরনের জটিলতা হয়েছে মানে ম্যানেজিং কমিটি এড কমিটি কোথাও কমিটি নাই কোথাও অধ্যক্ষ বা শিক্ষক আছে নাই বা নানান ধরনের ইস্যু সৃষ্টি হয়েছে। 

এইজন্য এক ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ছিল যেই ধরনের চেইন অফ কমান্ডে স্কুল কলেজ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চলে ওভাবে চলতে পারেনি। ছাত্রদের মধ্যেও গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্রিক একটা ট্রমা আছে। আমরা যখন শহীদ পরিবার বা আহতদের সাথে কাজ করি, আন্দোলনকারীদের মধ্যে এক ধরনের ট্রমা আছে। 

তাদের যে আবার পড়ালেখায় মনোনিবেশ করতে হবে। সে মানসিকতা সবার হয়ে ওঠে নাই। আমরা যেই প্রফেশনে ছিলাম অভুত্থানের পরে আবার যে আমাদের কাজটা আমরা করব এই মানসিকতাটা হয় নাই। তো আমাদের পুরা ন্যাশনাল একটা গ্রুমিং এর প্রয়োজন। 

তিনি বলেন, “গ্রীক পৌরাণিক কাহিনীতে আমরা দেখছিলাম যে, একিলিস হিল বলতে একটা ব্যাপার আছে। একিলিসের মতো এত বছরে হাসিনা প্রশ্নফাস, জালিয়াতি অটোপাসের মতো নানা ধরনের বড় বড় লুপস তারা রেখে দিছে। কিন্তু তারা উপস্থাপন করছে একটা বিশাল সাফল্য। এই দুর্বলতাটা আমরা উপলব্ধি করতে পারছি এটা সামনে আমাদের জেনারেশন, ছাত্র, দেশের জন্য ভালো হবে।”

নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ ড. ফজলুল হক রুমন রেজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিনুর রশিদ, বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দকার এহসানুল কবির, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শোয়াইব আহমাদ খান, নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. আ.ফ.ম. মশিউর রহমান, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম সুজন, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবু সাউদ মাসুদ, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মাইনুদ্দীন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মহানগর সভাপতি মুফতি মাসুদ বিল্লাহ প্রমুখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ