গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় হাইকোর্টের রায় নিজের পক্ষে থাকা সত্ত্বেও পৈত্রিক সম্পত্তির দখল ছেড়ে দেননি বলে অভিযোগ করেছেন ডুমুরিয়া ইউনিয়নের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক ভোজেশ্বর বিশ্বাস।

আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

আরো পড়ুন:

গাজায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে ইসরায়েল, অভিযোগ কাতারের

গাজায় ভয়াবহ বিমান হামলার পর যুদ্ধবিরতি পুনঃকার্যকরের ঘোষণা ইসরায়েলের

অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক ভোজেশ্বর বিশ্বাস টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা। মৃত সতীশ চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন স্থানীয় বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে সম্মানের সঙ্গে অবসর নিয়েছেন।

শিক্ষক ভোজেশ্বর বিশ্বাস বলেন, ‘‘ভৈরবনগর মৌজার খাস খতিয়ান আরএস ১/১ দাগ নং ৫২১, মোট ৬ একর ৫৭ শতাংশ জমি আমার পৈত্রিক সম্পত্তি। ১৯৮০ সাল থেকে নবুখালী গ্রামের কিরণ চন্দ্র হিরা ও তার পরিবারের সদস্যরা ওই জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। তারা কাগজপত্রে ঘষামাজা করে ৫২০ দাগ নম্বর পরিবর্তন করে ৫২১ বানিয়ে একাধিক মালি মামলা দায়ের করেছেন।’’ 

সংবাদ সম্মেলনে ভোজেশ্বর বিশ্বাস আরো বলেন, ‘‘যতবার আদালতে মামলা হয়েছে, ততবারই আমি জয়ী হয়েছি। নিম্ন আদালতের পর জজ কোর্টে গেলে হেরে যাওয়ায় আমি হাইকোর্টে আপিল করি। হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বাতিল করে আমার পক্ষে রায় দেন। তবুও প্রতিপক্ষ আমার জমির দখল ছাড়ছে না, বরং জোরজবরদস্তি করছেন।’’ 

অবসরপ্রাপ্ত এই শিক্ষক প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, ‘‘আমি শুধু আমার আইনি অধিকার চাই। হাইকোর্টের রায় কার্যকর করে যেন আমার জমির দখল আমাকে দেওয়া হয় এবং আমার জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।’’ স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের আহ্বান জানান তিনি।

ঢাকা/বাদল/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ জ শ বর ব শ ব স

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশ কমিশন গঠন হচ্ছে, অধ্যাদেশ অনুমোদন

পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এখন অধ্যাদেশটি জারি হলে এর আওতায় পাঁচ সদস্যের একটি কমিশন থাকবে, যার প্রধান হবেন সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। এ কমিশন নাগরিকের অভিযোগ অনুসন্ধান-নিষ্পত্তি, পুলিশ সদস্যদের সংক্ষোভ নিরসন ইত্যাদি বিষয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ করবে।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের বিষয়বস্তু তুলে ধরে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে প্রধান করে গঠিত এ কমিশনের সদস্যরা হবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরতও হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি।

কমিশনের নিয়োগপ্রক্রিয়া কেমন হবে, সে বিষয়ে করা প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, একটি বাছাই কমিটির মাধ্যমে কমিশনের নামগুলো আসবে। তার ভিত্তিতে সরকার নিয়োগ দেবে। বাছাই কমিটিতে থাকবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপারসন, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং জাতীয় সংসদের দুজন প্রতিনিধি।

কমিশনের উদ্দেশ্য-কাজ

কমিশন গঠনের উদ্দেশ্যের বিষয়ে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পুলিশকে জনবান্ধব ও জনমুখী করা হবে। এ কমিশন সরকারের সঙ্গে মিলে কাজ করবে। পুলিশ যেন প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারে, সে ব্যাপারে কী কী করণীয়, সে বিষয়ে কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। এ ছাড়া পুলিশ যাতে মানবাধিকার সংবেদনশীল হয়, সে বিষয়ে পুলিশের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার, সেগুলোও কমিশন চিহ্নিত করবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ কমিশনের আরও দুটি কাজ হচ্ছে পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠাতায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।

সরকার কমিশনের সুপারিশ মানতে বাধ্য কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্য এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে, পুলিশের পেশাগত সংক্ষোভ নিরসনের ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।

সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নামমাত্র ক্ষমতা নিয়ে গঠিত হচ্ছে পুলিশ কমিশন
  • পুলিশ কমিশন গঠন হচ্ছে, অধ্যাদেশ অনুমোদন