দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের জন্য বিএনপিকে দায়ী করলেন আখতার হোসেন
Published: 4th, November 2025 GMT
বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের জন্য বিএনপিকে দায়ী করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা পঁচাত্তরের যে ঘটনাপ্রবাহ দেখি, মুক্তিযুদ্ধের পর একটি ঘটনাপ্রবাহ দেখি, এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ভার যেমন আওয়ামী লীগের এবং বর্তমান বাংলাদেশের যে সংকট তৈরি হয়েছে, এই সংকটের দায়ভারও কিন্তু বিএনপির ওপরে গিয়ে বর্তায়।’
বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তরের জন্য ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘ আলোচনার কথা উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে বিএনপি যে নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) দিয়েছে, সেগুলো যদি থাকে তাহলে এনসিপির দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবগুলো অর্জন করা সম্ভব হবে না। বিএনপির নোট অব ডিসেন্টের বিপরীতে এনসিপির দেওয়া নোট অব ডিসেন্ট বহাল না রাখলে জুলাই সনদে অর্জনের ছিটেফোঁটাও থাকবে না বলে মনে করেন এনসিপির এই নেতা।
‘মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে রাষ্ট্র গঠনের ব্যর্থতার অনিবার্য পরিণতি: নভেম্বর, ১৯৭৫’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন আখতার হোসেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে এ সভার আয়োজন করে এনসিপির মিডিয়া সেল।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ এনসিপির প্রধান লক্ষ্য উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশটাকে নতুন করে গড়তে হলে আমাদের দলাদলি বাদ দিতে হবে। আমাদের দলীয় সংকীর্ণ চিন্তা বাদ দিতে হবে এবং বাংলাদেশের পক্ষে যে সংস্কার উপস্থাপনাগুলো আছে, তার পক্ষে আমাদের সকলকে অংশগ্রহণ করতে হবে।’
এনসিপির নিবন্ধনের খবরে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আখতার হোসেন বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির নিবন্ধন পাবে কি পাবে না; জনগণ জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে আছে কি নাই, সে বিষয় নিয়ে অনেকে অনেক ধরনের কটাক্ষ করেছে। কিন্তু আমরা দিন শেষে দেখিয়ে দিয়েছি যে বাংলাদেশের জনগণ জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে আছে এবং বাংলাদেশের জনগণ জাতীয় নাগরিক পার্টিকে সামনের নির্বাচনে যে সমর্থন ব্যক্ত করবে।’
বিএনপি বাংলাদেশে একদলীয় গণতন্ত্র কায়েম করতে চায় উল্লেখ করে আলোচনা সভায় এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘বিএনপি বাংলাদেশে একদলীয় গণতন্ত্র তারা কায়েম করতে চাচ্ছে, গণতন্ত্রের কথা বলছে কিন্তু এটা শুধু জিয়া ফ্যামিলির (জিয়াউর রহমানের পরিবার) গণতন্ত্র। আমরা তেমন গণতন্ত্র বাংলাদেশে চাই না।’ এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীকে ধর্মের নামে রাজনীতি না করারও আহ্বান জানান তিনি।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, খালেদ সাইফুল্লাহ, যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন, জয়নাল আবেদীন শিশির প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আখত র হ স ন গণতন ত র এনস প র র জন য ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
জনগণের সহজে ভূমিসেবা নিশ্চিত করতে হবে: সিনিয়র সচিব
ভূমি প্রশাসন ব্যবস্থার আধুনিকায়নের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নাগরিকদের কাছে সহজ, দ্রুত ও স্বচ্ছ ভূমিসেবা পৌঁছে দেওয়া বলে উল্লেখ করেছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ।
তিনি বলেন, “সরকারের লক্ষ্য হলো জনগণের দোরগোড়ায় ভূমিসেবা বাস্তবায়ন করা, যাতে সাধারণ মানুষ ঘরে বসেই অনলাইনে সকল ভূমিসংক্রান্ত সেবা নিতে পারেন।”
সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের কম্পিউটার ল্যাবে ‘মানোন্নীত অটোমেটেড ভূমিসেবা’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন তিনি।
রংপুর বিভাগের চারটি জেলা-রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম-এবং খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া জেলার ৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক থেকে কম্পিউটার অপারেটর পর্যায় পর্যন্ত) এই প্রশিক্ষণে অংশ নেন। দুই দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করে ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প।
সিনিয়র সচিব বলেন, “বাংলাদেশের ভূমিসেবা এখন প্রায় সম্পূর্ণরূপে ডিজিটাল রূপ নিয়েছে। নাগরিক ভূমিসেবা কেন্দ্রসহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনলাইন সেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রয়োজনে নতুন কেন্দ্র স্থাপনও চলছে। তবে শুধুমাত্র প্রযুক্তি নয়, বরং জনসচেতনতা, সেবাদাতাদের আন্তরিকতা এবং দক্ষ জনবলের সমন্বয়ই ভূমিসেবা ব্যবস্থাকে আরো কার্যকর করবে।”
তিনি আরো বলেন, “এই প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হলো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা বাড়ানো, যাতে তারা নিজ নিজ কর্মস্থলে গিয়ে সহকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে পারেন। এতে জ্ঞান দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে, এবং প্রশাসনের সব স্তরে অটোমেটেড সেবার সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত হবে।”
সিনিয়র সচিব মনে করেন, “প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মকর্তারা শুধু প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতা অর্জন করবেন না, বরং ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ এবং প্রশিক্ষণ প্রদানের কৌশলও শিখবেন। এতে নাগরিক ভোগান্তি কমবে, সেবায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়বে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. এমদাদুল হক চৌধুরী।
ঢাকা/এএএম/এসবি