নগর ভবনে ইশরাক সমর্থকদের দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
Published: 24th, June 2025 GMT
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন সমর্থিত শ্রমিক দলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সংবাদ সংগ্রহের সময় এক সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক ইউনিয়নের এক পক্ষের সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান প্রিন্স দলবল নিয়ে নগর ভবনে ঢোকার সময় শ্রমিক ইউনিয়নের আরেক পক্ষের সভাপতি আরিফ চৌধুরীর অনুসারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে তাদের নাম জানা যায়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুর দেড়টার দিকে শ্রমিক দলের নেতা আরিফুজ্জামানের অনুসারী সন্দেহে নগর ভবনের এক কর্মীকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ইশরাকের অনুসারীরা সিটি করপোরেশনের প্রশাসন শাখার কম্পিউটার অপারেটর শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে পেটাতে থাকেন।
এ সময় পুলিশ এসে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে পুলিশের কাছে ওই ব্যক্তিকে দিতে রাজী হননি ইশরাক অনুসারীরা। পরে নগর ভবনে আগত আরেক ব্যক্তিকে আরিফুজ্জামান প্রিন্সের অনুসারী সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়া হয়। পুলিশ এই দুই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।
এই বিষয়ে আরিফুজ্জামান প্রিন্স সমকালকে বলেন, ইশরাক হোসেন নগর ভবনে সেবা চালু করার ঘোষণা দেওয়ার পরও বহিরাগত কিছু লোকজন প্রতিদিন এসে মহড়া দিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের হুমকি দিচ্ছেন। নগর ভবনে প্রবেশে বাঁধা দিচ্ছেন তারা। তাই আজ আমরা কর্মচারীরা একত্রে নগর ভবনে প্রবেশ করার সময় অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এরপরেও নগর ভবনে যারা ঢুকছেন তাদের গনপিটুনি দেওয়া হচ্ছে।
তবে আরিফ চৌধুরী বলেন, অন্যান্য দিনের মতো আজও তারা শান্তিপূর্ণভাবে নগর ভবনে অবস্থান নিয়েছিলেন। কিন্তু বহিরাগতরা নগর ভবনে এসে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদের আটজনকে গুরুতর আহত করেছে।
এদিকে সংঘর্ষের ছবি আর ভিডিও করার সময় সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন ইশরাক সমর্থকরা। নাগরিক টেলিভিশনের রিপোর্টার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান শিশিরের মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে সব ছবি ও ভিডিও ডিলিট করে দেন ইশরাকের অনুসারীরা। এ সময় তাকে হেনস্থা করতে দেখা গেছে।
আসাদুজ্জামান সমকালকে বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় মারধরের ভিডিও করতে গেলে মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে সব ভিডিও ও ছবি ডিলিট করে দিয়ে ছুড়ি দেখিয়ে জীবননাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এনটিভির রিপোর্টার নাজিবুর রহমান সমকালকে বলেন, আমার ক্যামেরাম্যানসহ আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। যেন ভিডিও ধারণ করা না হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড এসস স আর ফ জ জ ম ন নগর ভবন র অন স র ইশর ক র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রই কীভাবে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির পথ তৈরি করে দিয়েছিল
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার নির্দেশ দেন, তখন তিনি এক জটিল সমস্যায় পড়েন। এই সমস্যার শুরু হয়েছিল অনেক বছর আগে। তখন যুক্তরাষ্ট্রই ইরানকে পারমাণবিক প্রযুক্তিতে প্রথম সহায়তা দিয়েছিল।
তেহরানের উত্তরে একটি ছোট পারমাণবিক চুল্লি রয়েছে। এটি শান্তিপূর্ণ গবেষণার জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে। গত ১২ দিনের সংঘাতে ইসরায়েল এই স্থাপনায় কোনো হামলা চালায়নি।
এই পারমাণবিক চুল্লির গুরুত্ব প্রতীকী। ১৯৬০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্র এটি ইরানে পাঠিয়েছিল। এটি ‘অ্যাটম ফর পিস’ কর্মসূচির অংশ ছিল।
এই কর্মসূচি চালু করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি আইজেনহাওয়ার। উদ্দেশ্য ছিল মিত্রদেশগুলোকে পারমাণবিক প্রযুক্তি দেওয়া। এতে তাদের অর্থনীতি উন্নত হবে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ হবে।
এই চুল্লি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের জন্য ব্যবহার হয় না। কারণ, এটি খুব দুর্বল জ্বালানিতে চলে। বোমা তৈরির মতো শক্তি এতে নেই।
বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন, পাকিস্তানসহ আরও কিছু দেশ ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির জন্য দায়ী। তারা ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্রের পথে সহায়তা দিয়েছে।
তেহরানের এই চুল্লি একসময়ের স্মৃতিচিহ্ন। তখন ইরান ছিল ধর্মনিরপেক্ষ ও পশ্চিমাপন্থী রাজতন্ত্র। যুক্তরাষ্ট্র তখন ইরানকে প্রযুক্তি শিখিয়েছিল।
পরে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি গর্বের প্রতীক হয়ে ওঠে। শুরুতে এটি উন্নয়নের প্রতীক ছিল। পরে এটি হয়ে ওঠে সম্ভাব্য সামরিক শক্তির উৎস।
পশ্চিমারা ইরানের এই কর্মসূচিকে ঘিরে শঙ্কিত হয়ে ওঠে। তখনকার বিশ্ব আজকের চেয়ে আলাদা ছিল। যুক্তরাষ্ট্র বুঝতেই পারেনি, তার দেওয়া প্রযুক্তি একদিন তার বিপদ ডেকে আনবে।
যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনায় থাকা রবার্ট আইনহোর্ন বলেন, ‘ইরানের শুরুটা আমরাই করেছিলাম।’
আইনহোর্ন বলেন, ‘তখন প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়া নিয়ে আমরা বেশি ভাবতাম না। আমরা অনেক দেশকে এ প্রযুক্তি দিয়েছিলাম।’
গত বছরের অক্টোবরে স্যাটেলাইট চিত্রে ইরানের নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনা