চৌগাছায় ইউপি চেয়ারম্যানকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দিল দুর্বৃত্তরা
Published: 25th, June 2025 GMT
চাঁদা না দেওয়ায় যশোরের চৌগাছার ফুলসারা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান ঢালীকে (৪৭) পিটিয়ে হাত পা ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার দুপুরে ইউনিয়নের মান্দারতলা এলাকায় মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তার ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।
পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। জিয়াউর রহমান ঢালী সদ্য কার্যক্রম স্থগিত হওয়া সংগঠন আওয়ামী লীগের ফুলসারা ইউনিয়নের সভাপতি।
জিয়াউর রহমান ঢালী বলেন, ‘চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে একটি পক্ষ আমাকে মেনে নিতে পারেন না। আমাকে হত্যার চেষ্টা শুরু করে। স্থানীয় সন্ত্রাসী লিটন আমার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। সেই টাকা না দেওয়াতে আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। মারধরের একপর্যায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করার চেষ্টা করে। কিন্তু স্থানীয় লোকজন চলে আসাতে তারা পালিয়ে যায়।’
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হাসিবুর রহমান বলেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে আনা হলেও বর্তমানে তিনি শঙ্কা মুক্ত।
চেয়ারম্যানের স্বজনের অভিযোগ, ফুলসারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরি। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তিনি আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গত ২৮ এপ্রিল গ্রেফতার হন। এরপর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউর রহমান ঢালী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। দায়িত্ব পাওয়ার পর স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও একাধিক মামলার আসামি সন্ত্রাসী লিটনের নেতৃত্বে পাঁচ থেকে ছয়জন জিয়াউর রহমানের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। তাদের চাঁদা না দেওয়াতে ক্ষুব্ধ হন লিটন। আজ বুধবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মোটরসাইকেলে বাড়িতে যাওয়ার পথে লিটন ও তাদের সহযোগীরা পথরোধ করে। এরপর অস্ত্র ঠেকিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। পরে হকিস্টিক দিয়ে দুই পা ও হাত ভেঙে দিয়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত লিটন পুলিশের তালিকাভুক্ত অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ী। আওয়ামী সরকারের আমলে উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের ছত্রছায়াতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতেন। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়াতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করেছে। তদন্ত চলছে, এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। জড়িতদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিচারকের ছেলে হত্যা: লিমন ৫ দিনের রিমান্ডে
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের বাসায় প্রবেশ করে তার ছেলেকে হত্যা এবং স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলার একমাত্র আসামি লিমন মিয়ার (৩৪) পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক মো. মামুনুর রশিদ এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আরো পড়ুন:
আশরাফুলের সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে প্রেমের সম্পর্ক গড়েন কোহিনূর: র্যাব
রাঙ্গুনিয়ায় শ্রমিক দল নেতাকে গুলি করে হত্যা
রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গাজিউর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, তদন্ত কর্মকর্তা রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুল ইসলাম জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আসামির সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
তিনি আরো জানান, শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসাধীন লিমন মিয়াকে হাসপাতাল ত্যাগের অনুমতি দেয়। এরপর তাকে আদালতে হাজির করা হয়। বেলা ১১টার পর থেকে তাকে আদালতের হাজতে রাখা হয়। দুপুর ২টার দিকে তাকে আদালতে তোলা হয়। পরে আদালত থেকে তাকে রাজপাড়া থানায় নেওয়া হয়েছে। সেখানে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ড এবং হত্যাচেষ্টার ঘটনার ব্যাপারে লিমন মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান তিনি।
গত বৃহস্পতিবার শহরের তেরখাদিয়া ডাবতলা এলাকায় বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের বাসায় আকস্মিক প্রবেশ করেন গাইবান্ধার ফুলছড়ির বাসিন্দা লিমন মিয়া। এরপর তিনি বিচারকের ছেলে তাওসিফ রহমানকে (১৫) ছুরিকাঘাতে ও শ্বাসরোধে খুন করেন। লিমন মিয়ার ছুরিকাঘাতে বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসি (৪৪) আহত হন। এ সময় ধ্বস্তাধ্বস্তিতে হামলাকারী লিমন মিয়াও আহত হন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) নিজে বাদী হয়ে লিমন মিয়াকে একমাত্র আসামি করে রাজপাড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহমান। আসামি এ হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছেন বলে এজাহারে দাবি করা হয়েছে।
ঢাকা/কেয়া/বকুল