খুলনায় শেখ হাসিনাসহ ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
Published: 26th, June 2025 GMT
বিএনপির কর্মিসভা পণ্ড এবং নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে এ মামলার আবেদন করেন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম (তুহিন)।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ শামীম হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আদালত আবেদন গ্রহণ করেছেন, তবে কোনো আদেশ দেননি। মামলায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, হত্যাচেষ্টাসহ ১০টি ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার আরজিতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১৯ মে খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির উদ্যোগে কর্মিসভা চলছিল। এতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলালসহ দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা সশস্ত্র অবস্থায় সেখানে হামলা চালান। বল প্রয়োগে সভা বন্ধ করে দেওয়া হয়। নেতা–কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে গুলিবিদ্ধ ও স্প্লিন্টারের আঘাতে বিএনপির অন্তত ৫০ নেতা–কর্মী আহত হন।
আসামিদের মধ্যে আছেন শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এবং শেখ সোহেল উদ্দিন, শেখ রুবেল, শেখ বেলাল উদ্দিন বাবু। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, সাধারণ সম্পাদক এম ডি বাবুল রানা, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শফিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহজালাল।
এ ছাড়া খুলনা রেঞ্জের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি জয়দেব চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার সোনালী সেন, সহকারী কমিশনার গোপীনাথ কাঞ্জিলাল, খুলনা সদর থানার সাবেক ওসি হাসান আল মামুনসহ পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের আরও অনেক নেতাকে মামলার আসামি করা হয়েছে। আসামিদের তালিকায় খুলনার পাঁচ গণমাধ্যমকর্মীর নামও আছে।
মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সন্নিকটের নয়টি বালুমহালের ইজারা কার্যক্রম স্থগিত
কক্সবাজারের চকরিয়া, রামু ও উখিয়া—এই তিন উপজেলার সংরক্ষিত–রক্ষিত বনাঞ্চল এবং সন্নিকটে অবস্থিত নয়টি বালুমহালের ইজারা কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ওই বন এলাকা থেকে বালু উত্তোলনে জড়িত ইজারাগ্রহীতাসহ দোষী ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি এবং বালু উত্তোলনের ফলে বনের যে ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) গত মাসে রিটটি করে।
নয়টি বালুমহাল হচ্ছে চকরিয়ার খুটাখালী মৌজার খুটাখালী-১; রামুর ধোলিরছড়া মৌজার ধলিরছড়া এবং পানিরছড়া খাল; উখিয়ার উখিয়া ঘাট মৌজার বালুখালী-১, উয়ালাপালং এবং রাজাপালং মৌজার দোছড়ি বালুমহাল, পালংখালী মৌজার পালংখালী; রাজাপালং মৌজার হিজলিয়া, ধোয়াংগারচর ও কুমারিয়ারছড়া।
আদালতে বেলার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া।
বেলা জানায়, জেলা প্রশাসক কক্সবাজার জেলার ৫টি উপজেলায় মোট ২৭টি বালুমহালের তালিকা প্রস্তুত করে ২০২৫-২৬ (১৪৩২ বঙ্গাব্দ) সালের জন্য ইজারার উদ্দেশ্যে গত ১১ মার্চ দরপত্র আহবান করেন। ২৭টি বালুমহালের মধ্যে ওই ৯টি বালুমহাল সংরক্ষিত ও রক্ষিত বনের মধ্যে এবং কাছাকাছি। তাই সংশ্লিষ্ট বনের পরিবেশ ও প্রতিবেশের সম্ভাব্য ক্ষতি বিবেচনা করে ওই বালুমহালগুলো ইজারা প্রদান থেকে বিরত থাকতে কক্সবাজার উত্তর ও দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তারা কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেন। এই অনুরোধ উপেক্ষা করে তিনটি বালুমহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে। অন্যগুলোর ইজারাপ্রক্রিয়া চলমান। এ অবস্থায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বালু উত্তোলনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সংরক্ষিত ও রক্ষিত বন রক্ষায় রিটটি করে।
নয়টি বালুমহাল ইজারার জন্য তালিকাভুক্ত করা সংবিধান ও অন্যান্য আইনের পরিপন্থী বলে কেন তা বেআইনি ও জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানান বেলার অন্যতম আইনজীবী এস হাসানুল বান্না। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ওই বালুমহালগুলো বিলুপ্ত ঘোষণা এবং ইজারাযোগ্য বালুমহালের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে সংরক্ষিত–রক্ষিত বনাঞ্চলের সুরক্ষা নিশ্চিতের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে। বালু উত্তোলনের ক্ষতি নিরূপণ করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, রুলে তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে।