রাজধানীর দক্ষিণখানে ভবন থেকে পড়ে নারীর মৃত্যু
Published: 27th, June 2025 GMT
রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকার একটি ভবনের ছাদ থেকে নিচে পড়ে মোসাম্মৎ জান্নাত (২০) নামের এক নারী মারা গেছেন।
ভবনটিতে থাকা নূরানী ট্রেনিং সেন্টারে মাদ্রাসার শিক্ষকতার জন্য আবাসিক প্রশিক্ষণ নিতে জান্নাত এসেছিলেন বলে জানান প্রশিক্ষণকেন্দ্রটির শিক্ষক আদনান মাহমুদ।
আদনান মাহমুদ আজ শুক্রবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত দশটার দিকে জান্নাত ভবনের ছাদে যান। কী কারণে ছাদে যান, সে ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। একপর্যায়ে তিনি ভবনের ছাদ থেকে নিচে পড়ে যান। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতাল নেওয়া হয়। কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে তাঁকে দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো.
জান্নাতের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানান পরিদর্শক মো. ফারুক। তিনি বলেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশকে জানানো হয়েছে।
দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাইফুর রহমান আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাটি তদন্ত করছেন। জান্নাত পারিবারিক সমস্যায় ছিলেন বলে তাঁরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন।
জান্নাতের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলায়। বাবার নাম লোকমান হোসেন।
জান্নাত ১৫ জুন প্রশিক্ষণকেন্দ্রটিতে ভর্তি হয়েছিলেন বলে জানান শিক্ষক আদনান মাহমুদ। তিনি বলেন, মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করার আগে এখানে নারী ও পুরুষদের আলাদাভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। নারীদের প্রশিক্ষণ দেন নারী শিক্ষক। আর পুরুষদের প্রশিক্ষণ দেন পুরুষ শিক্ষক। প্রশিক্ষণ নিতে আসা নারী ও পুরুষেরা আলাদাভাবে থাকেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমি এতিম হয়ে গেলাম রে’
“আমি এতিম হয়ে গেলাম রে, আমার বাবা আর নেই, আমি এখন কী করবো ফুফু”- এভাবেই হাহাকার করছিলেন পাপিয়া আক্তার। বাবা হারানোর শোকে কণ্ঠ যেন পাথর ভেদ করা আর্তনাদ। পাশে অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছেন স্বজনরা। সবাই জানে, এই কান্নার আর কোনো সান্ত্বনা নেই।
পাপিয়া মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ফলসাটিয়া এলাকায় হলি চাইল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া চালক পারভেজ খানের (৪৫) মেয়ে। তিনদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত হার মানলেন পারভেজ খান। সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আরো পড়ুন:
স্কুল পরিচালকের বিরুদ্ধে ৮ শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতের অভিযোগ
শ্রেণিকক্ষে টিকটক বানানোয় ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) গভীর রাতে ফলসাটিয়া বাজারের পাশে থেমে থাকা স্কুল বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। বাসে ওই সময় ঘুমিয়ে ছিলেন চালক পারভেজ খান। আগুনে বাসটি মুহূর্তেই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। তিনদিন ধরে ৭০ শতাংশ দগ্ধ শরীর নিয়ে বাঁচার লড়াই চালিয়েছেন তিনি। কিন্তু জীবন তাকে আর সময় দেয়নি।
নিহত পারভেজ খান সদর উপজেলার বারাইভিকড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তার ঘরে রয়েছে স্ত্রী, এক স্কুলপড়ুয়া ছেলে এবং ছোট মেয়ে পাপিয়া আক্তার।
স্ত্রী চোখে মুখে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “স্বামীকে হারিয়ে আমরা পথে বসে গেলাম। এখন সন্তানদের কীভাবে মানুষ করবো? কে চালাবে সংসার?”
স্থানীয়রা জানান, এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটা হত্যাকাণ্ড। যারা করেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পারভেজের পরিবার যেন রাষ্ট্রীয় সাহায্য পায়, সন্তানদের পড়াশোনা ও সংসারের ব্যয় চালাতে যেন সরকার ও প্রশাসন এগিয়ে আসে।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আমান উল্লাহ বলেন, “গত বৃহস্পতিবার স্কুলবাসটিতে আগুন দেওয়া হয়। এতে দগ্ধ হন বাসটির ভেতর ঘুমিয়ে থাকা চালক পারভেজ। পুলিশ উদ্ধার করে তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় তাকে। স্কুলবাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
ঢাকা/মেহেদী