‘দুদক কর্মকর্তা’ পরিচয় দিয়ে ঘুষ চাওয়া প্রতারক চক্রের ৪ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানাল দুদক
Published: 29th, June 2025 GMT
দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে ঘুষ চাওয়া নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ যে ভিডিও ক্লিপ সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন, সে বিষয়ে অনুসন্ধানে নেমে একটি চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে দুদক। গতকাল শনিবার পুলিশ ও র্যাবের সহযোগিতায় ঢাকার মুগদা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা দুদকের চেয়ারম্যান ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। এ ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো.
সম্প্রতি হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুকে এক পোস্টে লেখেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল এক লাখ টাকা। আপনার নামে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ না থাকলেও সেটার ক্লিয়ারেন্স নিতে আপনাকে এক লাখ টাকা দিতে হবে। সম্প্রতি মাহমুদা মিতুর কাছ থেকে এই টাকা চাওয়া হয়েছে দুদকের ডিজি আক্তার আর তাঁর ডিডি পরিচয়ে। মাহমুদা মিতুকে বলা হয়, আপনি একজন ডাক্তার, আপনার তো টাকাপয়সার অভাব থাকার কথা না, আপনি এক লাখ টাকা দিয়ে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যান।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির এই নেতা ফেসবুক পোস্টে আরও লিখেছিলেন, ‘দুদকের এই সব কাজকারবার এই প্রথম না। হাসিনার আমলে খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দলের বহু নেতাকে এরা হয়রানি করেছে। অথচ আওয়ামী লীগের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে এরা কিছুই বলেনি। আমরা আশা করেছিলাম, ৫ আগস্টের পর এদের মধ্যে পরিবর্তন আসবে। কিন্তু আসেনি। বরং এরা এখন চা খাওয়ার জন্য এক লাখ করে টাকা চাওয়া শুরু করেছে। মাহমুদা মিতু সাহস করে ভিডিও করে রেখেছেন, অন্যায় ঘুষ দেন নাই, কিন্তু কত সাধারণ মানুষ এদের এই চায়ের বিল দিতে বাধ্য হয়েছে জানা নেই।’
হাসনাত আবদুল্লাহ ওই ফেসবুক পোস্ট দেওয়ার পর বিষয়টি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়ে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেছিলেন, প্রকৃত ঘটনা সামনে এলে হাসনাত আবদুল্লাহ বুঝতে পারবেন তিনি ভুল করেছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এক ল খ
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় শিশুকে ‘ধর্ষণ’, পিটুনিতে নিহত অভিযুক্ত
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে এলাকাবাসীর পিটুনিতে হাবিল মিয়া নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। গত শনিবার রাতের এ ঘটনায় রোববার আটজনের নামে গোবিন্দগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেছেন হাবিলের ভাই।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত শুক্রবার বিকেলে ওই শিশুকে ফুসলিয়ে নিজের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় হাবিল। পরিবার জানতে পেরে শিশুটিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভতির্র জন্য পাঠান চিকিৎসক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার রাত ১২টার দিকে এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিল হাবিল। তাকে দেখে ধরে পিটুনি দেয় এলাকাবাসী। এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ আহত অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে গতকাল বিকেলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগী শিশু শনিবার হাসপাতালে ভর্তি হলেও রোববার দুপুরের আগেই চলে গেছে। ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে দায়িত্বরত আয়া মাসুদা বেগম রেজিস্ট্রার খাতা দেখে জানান, দুপুর ২টার আগে ওই শিশুসহ স্বজনরা হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি বুলবুল ইসলাম বলেন, হাবিলের বিরুদ্ধে শিশু ধর্ষণের মৌখিক অভিযোগ পেয়েছিলাম। এর পরদিন এলাকাবাসীর মারধরে তার নিহতের অভিযোগ উঠেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হাবিলের ভাই গোবিন্দগঞ্জ থানায় আটজনের নামে মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাত আসামি দু’জন। ওই শিশুর পরিবার রংপুর থেকে ফিরে মামলা করার কথা ছিল। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ থানায় আসেনি।
এদিকে সাদুল্যাপুর উপজেলায় গোপনে এক কিশোরীর গোসলের ভিডিও ধারণ করে তা ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগে শনিবার দুই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আসামিরা হলো– রায়হান রহমান প্রামাণিক ও শাকিল আহম্মেদ মিম। তারা পলাতক। একই উপজেলায় শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে আমিনুর রহমান আকন্দ নামে এক বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যুবককে হত্যা
কক্সবাজারের রামুতে গতকাল সকালে নারীকে ধর্ষণচেষ্টা ও ছুরিকাঘাতের অভিযোগে আবদুল মান্নান নামের এক যুবককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছেন স্থানীয়রা। নিহতের বাড়ি উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নে। স্থানীয়দের অভিযোগ, আবদুল মান্নানের বাবা মছন আলীর নামে ‘মছন বাহিনী’ নামে এক ডাকাত দল রয়েছে। তাদের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ।
রামু থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ ফরিদ জানান, সকালে এলাকার এক বাড়িতে লুটপাট ও নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় মান্নান। ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ওই নারীকে ছুরিকাঘাত করে। ভুক্তভোগীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা জড়ো হয়ে মান্নানকে আটক করে। এ সময় পালানোর চেষ্টা করলে উত্তেজিত জনতা তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে।
কিশোরীকে পাঁচ মাস আটকে রেখে ধর্ষণ
নোয়াখালীর হাতিয়ায় কিশোরীকে অপহরণ করে পাঁচ মাস ধর্ষণের অভিযোগে জাহেদ হাসান নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-১১ জানায়, গত ৬ জানুয়ারি কিশোরীকে অপহরণের পর চট্টগ্রামের কাপ্তাইয়ে নিয়ে যায় জাহেদ। সেখানে একটি জায়গায় আটকে রেখে ভয় দেখিয়ে মাসের পর মাস ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে ওই কিশোরীর গর্ভে সন্তান আসে। জোরপূর্বক ওষুধ সেবন করিয়ে তার গর্ভের সন্তান হত্যা করে আসামি। ১৮ জুন ভুক্তভোগীকে তার বাড়ির কাছে ফেলে চলে যায়। এর আগে কিশোরীর মা-বাবা হাতিয়া থানায় জিডি করেছিলেন। পরে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালতের নির্দেশে হাতিয়া থানায় তিনজনের নামে মামলা করা হয়েছে।
চট্টগ্রামে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ
চট্টগ্রাম নগরে রোববার দুপুরে কিশোরীকে গলায় ছুরি ধরে পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে এক যুবককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। ভুক্তভোগীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার যুবকের নাম মো. রায়হান। তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায়। সে দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের আকবরশাহ থানা এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকে। এর আগেও ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিল রায়হান। আকবরশাহ থানার এসআই সৈয়দ মাঈনুদ্দিন আহমেদ ফয়সাল বলেন, তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার
ফেনীর দাগনভুঞায় ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শনিবার রাতে সাইফুল ইসলাম নামের এক মাদ্রাসাশিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রীকে এদিন সকালে মাদ্রাসাসংলগ্ন একটি পাকা ভবনের কক্ষে নিয়ে যৌন হয়রানি করে সাইফুল। ভুক্তভোগী বাড়ি ফিরে বিষয়টি তার মাকে জানায়। পরে সাইফুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রোববার সকালে ভুক্তভোগীর মা দাগনভুঞা থানায় সাইফুলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
এদিকে রংপুরের মিঠাপুকুরে আলোচিত সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে গতকাল মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
(সংশ্লিষ্ট ব্যুরো, অফিস, প্রতিনিধি ও সংবাদদাতার পাঠানো তথ্য)