মুখের ভাষা অস্পষ্ট। কোনো রকম হাটতে পারলেও পারেন না লিখতে। এরপরও নিজের ইচ্ছা শক্তিতে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন এইচ এম সিয়াম (১৮)। পরীক্ষার হলে তাকে শ্রুতি লেখক হিসেবে সাহায্য করছেন দশম শ্রেণির ছাত্র রাজিব। প্রশ্ন দেখে অস্পষ্ট ভাষায় উত্তর দিচ্ছিলেন সিয়াম। সেই উত্তর খাতায় লিখছিলেন রাজিব।

সিয়াম ভালো ফলাফল নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বড় কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবেন এমনটি আশা করছেন তার বাবা-মা ও শিক্ষকরা।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের রহমতপুর এলাকার এনজিও কর্মী ওবাইদুল ইসলামের বড় ছেলে এইচ এম সিয়াম। জন্মের এক বছর পর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন তিনি। এরপর তার স্বাভাবিক চলাফেরা ও কথা বলায় অনেক সমস্যা দেখা দেয়। তাকে সুস্থ করতে অনেক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন পরিবারের সদস্যরা। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। 

আরো পড়ুন:

শাবিপ্রবিতে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ৭ জুলাই

মহানবী (সা.

)-কে কটূক্তি: জাবি শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করে তদন্ত কমিটি

স্বজনরা জানান, ছোট থেকেই পড়ালেখার প্রতি অনেক আগ্রহ ছিল সিয়ামের। পরিবারের সহযোগিতা ও নিজের ইচ্ছাশক্তিতে পড়ালেখা চালিয়ে যান তিনি। ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ- ৪.০৭ নিয়ে উত্তীর্ন হন সিয়াম। এবার তিনি দিচ্ছেন এইচএসসি পরীক্ষা।

ইসমাইল তালুকদার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট টেকনোলজি বিভাগে ওই কেন্দ্রেই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন সিয়াম। নিজে লিখতে না পারায় শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করে নিয়েছেন শ্রুতি লেখক। পরীক্ষার হলে সিয়াম অস্পষ্টভাবে উত্তর বলেন আর তা শুনে খাতায় লিপিবদ্ধ করেন আমতলী উপজেলার কুকুয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র শ্রুতি লেখক রাজিব। পরীক্ষা দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত সিয়াম। সিনিয়র ভাইকে সহযোগিতা করতে পেরে খুশি রাজিব। 

পরীক্ষার্থী এইচ এম সিয়াম বলেন, “আমার পড়াশুনা করতে অনেক ভালো লাগে। বাবা-মা এবং কলেজের শিক্ষকরা সবাই আমাকে সহযোগিতা করেন। আমার এইচএসসি পরীক্ষা খুব ভালো হয়েছে। বাংলা ও ইংরেজি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। আমি পড়ালেখা করে যাতে ভালো পর্যায়ে পৌঁছাতে পারি এজন্য সবার কাছে দোয়া চাই।” 

রাজিব বলেন, “আমি সিয়াম ভাইয়ের শ্রুতি লেখক হিসেবে পরীক্ষা দিতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।”

সিয়ামের বাবা ওবাইদুল ইসলাম বলেন, “সিয়ামকে ঘরে বসিয়ে রাখা কোনো ভাবেই ভালো হতো না। ওর পড়ালেখা করার অনেক ইচ্ছা। শত কষ্ট হলেও আমি ওকে পড়ালেখা করাবো।” 

সিয়ামের মা জয়নব বেগম কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলের বয়স যখন এক বছর তখন সে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। ওর হাটা ও কথাবার্তায় সমস্যা শুরু হয়। অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। অগের চেয়ে অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এখনো তার ওষুধ চলে। আমার ছেলের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।” 

ইসমাইল তালুকদার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আবু সালেহ বলেন, “সিয়াম অন্য সব ছাত্রের সঙ্গেই ক্লাস করেছে। আমরা আলাদাভাবে তার খেয়াল রেখেছি। তিনি মেধাবী এবং তার শ্রবণ শক্তি অনেক ভালো। আশা করছি, ভালো রেজাল্ট নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে বড় কোনো বিদ্যাপিঠে পড়ালেখা করতে পারবেন তিনি।”

কলাপড়া উপজেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির সহকারী পরিচালক ও ইসলাম তালুকদার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান খান বলেন, “সিয়ামের পরীক্ষায় কোনো আইনি জটিলতা নেই। তিনি বোর্ড থেকে অনুমতি নিয়ে শ্রুতি লেখকের মাধ্যমে পরীক্ষা দিচ্ছেন।”

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এইচএসস পর ক ষ য়

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদন আজ বিকেলে, ক্লাস ১৩ নভেম্বর

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (পাস) প্রোগ্রামে ভর্তি কার্যক্রম আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা থেকে শুরু হচ্ছে। আবেদন করা যাবে আগামী ১৫ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত। এ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে ১৩ নভেম্বর থেকে। গত রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন যেসব শিক্ষার্থী

২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালের এসএসসি বা সমমান এবং ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালের এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন ভর্তির জন্য। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি (ভোকেশনাল), এইচএসসি (বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি) ও ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরাও আবেদন করতে পারবেন। এ-লেভেল, ও-লেভেল ও বিদেশি সনদধারীদের ক্ষেত্রে নির্ধারিত নিয়মে সরাসরি ডিন অফিসে বা ই–মেইলে আবেদন করতে হবে শিক্ষার্থীদের।
যেসব শিক্ষার্থী গত দুই শিক্ষাবর্ষে (২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪) স্নাতক (সম্মান), স্নাতক (সম্মান) প্রফেশনাল বা স্নাতক (পাস) প্রোগ্রামে ভর্তি হয়ে রেজিস্ট্রেশন কার্ড পেয়েছেন, তাঁরা এই শিক্ষাবর্ষে নতুন করে ভর্তি হতে পারবেন না। তবে পূর্ববর্তী ভর্তি বাতিল করে নতুন শিক্ষাবর্ষে আবেদন করতে পারবেন। একই সঙ্গে কোনো শিক্ষার্থী দ্বৈত ভর্তি হলে তাঁর উভয় ভর্তি ও রেজিস্ট্রেশন বাতিল হবে।

আবেদন ফি ৪০০ টাকা

ভর্তি ফি হিসেবে প্রাথমিক আবেদন ফি ৪০০ টাকা, যার মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ ২৫০ টাকা এবং কলেজের অংশ ১৫০ টাকা। ভর্তি নিশ্চিত হওয়ার পর রেজিস্ট্রেশন ফি ৭২০ টাকা জমা দিতে হবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীর তথ্য যাচাই করে অনলাইনে নিশ্চয়ন করবে। তবে নিশ্চয়ন ছাড়া কোনো আবেদনকারীকে মেধাতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। আবেদন ফি ১৯ অক্টোবরের মধ্য জমা দিতে হবে।

আরও পড়ুনবাংলাদেশ বিমানে ইন্টার্নশিপ, দৈনিক হাজিরায় সম্মানী ৬০০ টাকা৪ ঘণ্টা আগে

আবেদনকারীদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে প্রতিটি কলেজের জন্য আলাদাভাবে কোর্সভিত্তিক মেধাতালিকা প্রণয়ন করা হবে। একই মেধা নম্বরপ্রাপ্ত হলে এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএ (৪০: ৬০ অনুপাতে) এবং প্রয়োজনে মোট নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে। এরপরও সমতা থাকলে বয়স কম শিক্ষার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। ভর্তি কার্যক্রম ধাপে ধাপে প্রথম মেধাতালিকা, দ্বিতীয় মেধাতালিকা, কোটার মেধাতালিকা এবং প্রথম ও দ্বিতীয় রিলিজ স্লিপের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। তবে এবারও তৃতীয় রিলিজ স্লিপে আবেদন করার সুযোগ থাকবে না।

বিস্তারিত দেখুন এখানে

আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ, সুযোগ পাবেন ৪৮ জেলার যুবরা১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আরও পড়ুন১২ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে সরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদন আজ বিকেলে, ক্লাস ১৩ নভেম্বর