সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) বা আনুপাতিক ভোট আরও বেশি স্বৈরতন্ত্রের দিকে ঠেলে দেবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তাঁর ভাষায়, এতে স্থানীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব গড়ে ওঠার সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন রিজভী। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‘ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) ’ স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচির আয়োজন করে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান তিনি।

সেই অনুষ্ঠানে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজকে নানা কথা সামনে আনা হচ্ছে—আনুপাতিক ভোট। কেন আনুপাতিক ভোট? এটা তো এলাকার নেতৃত্ব গঠনের পথ রুদ্ধ করবে। কেউ যদি দীর্ঘদিন এলাকায় থেকে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে নেতা হন, তাঁকেও তো তখন দলীয় সিদ্ধান্তে বাদ দেওয়া হতে পারে। এতে আরও বেশি স্বৈরশাসনের দিকে যাওয়া হবে।’

বিএনপি চিরায়ত গণতন্ত্রের যে ভোট, সেই পদ্ধতি চেয়েছে—উল্লেখ করে রিজভি বলেন, ‘যাঁরা বৈধ ভোটার, তাঁরা ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন। যে দলের প্রার্থীরা সর্বোচ্চ ভোট পাবে, তারাই সরকার গঠন করবে। ১৮ কোটি মানুষের দেশে যেখানে ১২ কোটি ভোটার, সেখানে কীভাবে আনুপাতিক ভোটের কথা বলা হচ্ছে—তা আমরা বুঝতে পারছি না।’

আওয়ামী লীগের মতো ‘রক্তপিপাসু’ দল যাতে আর ক্ষমতায় না আসতে পারে, সে জন্য গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য দরকার বলেও মন্তব্য করেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র মানে হচ্ছে একে অপরের বিরুদ্ধে মুক্তভাবে সমালোচনা করা, ভিন্নমত প্রকাশ করা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজ নিজ কর্মসূচি নিয়ে কাজ করবে। কিন্তু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের একে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে—এটাই হওয়া উচিত।’

বিএনপির নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি হিসেবে আমাদের এমন আচরণ করতে হবে, যাতে কোনো সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। কোনো চাঁদাবাজি, দখলবাজির সঙ্গে বিএনপি বা এর কোনো অঙ্গসংগঠনের নাম যাতে না জড়ায়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মাহফুজ উন নবী, জেলা ড্যাবের আহ্বায়ক মো.

খালেকুজ্জামান বাদল, সদস্যসচিব অধ্যাপক মো. দেলোয়ার হোসেন সরকার, মহানগর ড্যাবের আহ্বায়ক নিখিলেন্দ্র শংকর গুহ রায় ও সদস্যসচিব শরিফুল ইসলাম।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন: আকবর খান

ঢাকা-৮ আসনে দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান। তিনি বলেন, “ভোটের অধিকার জনগণের পবিত্র আমানত, এটি সচেতনভাবে প্রয়োগ করতে হবে।”

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা জননেতা সাইফুল হক-এর ঢাকা-৮ আসনে নির্বাচনী গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি একথা বলেন।

গণসংযোগের শুরুতে ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাকের সভাপতিত্বে এক সংক্ষিপ্ত পথসভা হয়। 

সেখানে আকবর খান বলেন, “নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে অবিলম্বে ভোটের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। গত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে—২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে—ঢাকা-৮ আসনের বহু নাগরিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। যে তরুণের এখন বয়স ২৫ বা ২৬, তারা কখনো ভোট দিতে পারেনি, ভোট কী তা জানে না- এটি গণতন্ত্রের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।”

তিনি আরো বলেন, “গত ১৬-১৭ বছর ধরে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং আমাদের নেতা সাইফুল হক জনগণের ভোটাধিকারের আন্দোলনে রাজপথে সংগ্রাম করে আসছেন। এর জন্য জেল-জুলুম, নির্যাতন সহ্য করেও তিনি থেমে থাকেননি। ভোটাধিকার গণমানুষের দীর্ঘ লড়াই ও ত্যাগের ফসল। এই অধিকার ভুল ব্যক্তিকে নির্বাচিত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।”

আকবর খান বলেন, “জননেতা সাইফুল হক গণমানুষের পরীক্ষিত নেতা। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের জনগণ যেন তাকে ভোট দিয়ে নিজেদের সুখ-দুঃখ, চাওয়া-পাওয়ার কথা ও দীর্ঘ বঞ্চনার ইতিহাস সংসদে তুলে ধরার সুযোগ করে দেন- এটাই আমাদের আহ্বান।”

গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকা থেকে শুরু হয়ে মতিঝিল, কমলাপুর, ফকিরাপুল, কালভার্ট রোড হয়ে বিজয়নগরে এসে শেষ হয়। এতে শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সিকদার হারুন মাহমুদ, মীর রেজাউল আলম, কবি জামাল সিকদার, ফাইজুর রহমান মুনির, বাবর চৌধুরী, মহানগর নেতা যুবরান আলী জুয়েল, সালাউদ্দিন, রিয়েল মাতবর, আরিফুল ইসলাম, মুজিবুল হক চুন্নু, গোলাম রাজিব, মাহমুদুল হাসান খান, ফয়েজ ইবনে জাফর, নান্টু দাস, শিবু মহন্ত ও হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

ঢাকা/এএএম/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাই এখন জাতির দাবি
  • জনগণের বৃহত্তর ঐক্য ছাড়া এই ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার পতন হবে না: সাকি
  • দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন: আকবর খান
  • আন্তর্জাতিক সংকট যেভাবে স্বৈরশাসকদের শক্তিশালী করে
  • সরকার এখন প্রতারকের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে: মান্না