বিশ্বজুড়ে নারীর অধিকার অর্জন ফের বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। উত্থান ঘটছে জনতুষ্টিবাদের। বহুস্বর, বৈচিত্র্য এবং চিন্তার স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের ওপরও হুমকি ক্রমেই বাড়ছে। আর তা প্রায়ই প্রকাশ পায় বই ও প্রকাশনা নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে। একইসঙ্গে বিশ্বজুড়ে মতপ্রকাশ ও স্বাধীন চিন্তার ওপর দমন-পীড়নের প্রবণতা দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে, বিশেষ করে সাহিত্য, সাংবাদিকতা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে। এমন বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ফ্রিডম টু পাবলিশ পুরস্কারটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। পুরস্কারজয়ী সাহিত্যিক মার্গারেট অ্যাটউড মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার অক্লান্ত একজন সংগ্রামী হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত। মার্গারেট অ্যাটউড একটি নিপীড়নমূলক সমাজব্যবস্থার ওপর ভিত্তি করে লিখেছিলেন বিখ্যাত ডিস্টোপিয়ান উপন্যাস দ্য হ্যান্ডমেইড’স টেল। এখানে তিনি এমন একটি পুরুষতান্ত্রিক সমাজের কথা বলেছেন, যেখানে ক্ষমতাহীন নারীদের জোর করে সন্তান ধারণে বাধ্য করা হয়। ডিস্টোপিয়ান এই উপন্যাস মূলত এক সতর্কবার্তা যা ধর্ম, রাষ্ট্র আর পুরুষতন্ত্রের নিপীড়নের চূড়ান্ত রূপের সামনে পাঠককে এনে দাঁড় করায়। যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোতে সবচেয়ে বেশি আপত্তিকর বা নিষিদ্ধ ঘোষিত বইগুলোর মধ্যে এটি একটি। আর তাই ২০২২ সালে, অ্যাটউড তাঁর এই বিখ্যাত উপন্যাসের একটি আগুনে অদাহ্য সংস্করণ প্রকাশ করেন, যা ছিল সেন্সরশিপের বিরুদ্ধে একটি প্রতীকী প্রতিবাদ।    বৈশ্বিক এমন প্রেক্ষাপটে, গত ১২ মে সেন্ট্রাল লন্ডনের একটি জমকালো সান্ধ্য আয়োজনে ঘোষণা করা হয় ব্রিটিশ বুক অ্যাওয়ার্ডস ২০২৫। এই অনুষ্ঠানে কানাডিয়ান লেখিকা মার্গারেট অ্যাটউড ব্রিটিশ বুক অ্যাওয়ার্ডসের অত্যন্ত সম্মানজনক ফ্রিডম টু পাবলিশ পুরস্কার অর্জন করেন। এসময় ভিডিও বার্তায় দেওয়া পুরস্কার গ্রহণের বক্তব্যটি পত্রস্থ হলো। 
.

..
আমি এই পুরস্কার পেয়ে অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি। যদিও একটু বিভ্রান্তও বটে। অতীত এবং বর্তমানের অসংখ্য লেখক, প্রকাশক ও বই বিক্রেতাদের মতো আমাকে কখনও কারাবরণ করতে হয়নি। যদিও পরিসংখ্যানটি আবার বিবেচনা করতে হতে পারে, যদি আমি নিকট ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করি।
আমার নিজের জীবৎকালে এমন কোনো সময় মনে পড়ে না, যখন শব্দেরা নিজেরাই এতটা হুমকির মধ্যে পড়েছে। বিংশ শতকের এক পর্যায়ে এসে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মেরূকরণ/বিভাজন যে কমে যাচ্ছিল বলে মনে হয়েছিল তা গত এক দশকে আশঙ্কাজনকভাবে আবার বেড়ে গেছে। এখনকার দুনিয়াটাকে মাঝখানের আশি বছরের তুলনায় মনে হচ্ছে যেন সেই ১৯৩০ আর ৪০-এর দশকের দিকে ফিরে গেছে।
একজন লেখক হিসেবে এবং তরুণ বয়সে ছোট প্রকাশনায় আমি প্রায় ৬০ বছর ধরে কাজ করেছি। এই বছরগুলোর মধ্যে পড়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের সেই সময়টা যখন সামিজদাত (Samizdat) ছিল প্রকাশনার এক বিপজ্জনক পদ্ধতি। হাতে তৈরি পাণ্ডুলিপি গোপনে ছড়ানো হতো। আর কেউ ধরা পড়লে তার জন্য অপেক্ষা করত দুর্ভাগ্য। আজকের দিনে সেই হুমকি এসেছে সাম্প্রতিক সেন্সরশিপ আর বই নিষিদ্ধকরণের জোয়ার হয়ে। শুধু বিশ্বের যে দেশগুলোতে দমনমূলক শাসন চলে সে দেশগুলোতেই নয়, যুক্তরাষ্ট্রেও। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও বিতাড়নের চেষ্টা চলছে। বিশেষ করে যারা সম্ভাব্য আধিপত্যবাদীদের মতাদর্শের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। এ ধরনের মনোভাব কেবল কোনো একটি পক্ষের চরমপন্থার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়– হোক তথাকথিত ‘বাম’ অথবা ‘ডান’। সব চরমপন্থাই চায় বিরোধীদের মুছে ফেলতে, নিজেদের প্রচার ব্যতীত অন্য যে কোনো সৃজনশীল প্রকাশকে স্তব্ধ করতে এবং সর্বোপরি সব সংলাপ বন্ধ করে দিতে। তারা বহু কণ্ঠের পৃথিবী চায় না। তারা চায় কেবল একটি স্বরের আওয়াজ।
একটি মুক্ত পৃথিবীতে প্রকাশক ও বই বিক্রেতারা গণমানুষের কণ্ঠ রক্ষা করেন। যদি মুক্ত সরকার এবং মানুষের স্বাধীন চিন্তাশক্তি টিকিয়ে রাখতে হয়, তবে শব্দের এই বহুস্বর যারা রক্ষা করবে, তাদের হতে হবে সাহসী। আমি আপনাদের জন্য কামনা করি শক্তি ও আশাবাদ এবং সেই সাহস যার মাধ্যমে একদিকে মবের উন্মত্ততা আর অন্যদিকে প্রতিহিংসাপরায়ণ শাসকদের স্বেচ্ছাচারিতা রুখে দাঁড়ানো সম্ভব। 

কানাডীয় সাহিত্যিক অ্যান্ড্রু টেইট ২০১০ সালে ২১ জুলাই মার্গারিট অ্যাটউডের একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। লেখক সেখানে দ্য হ্যান্ডমেইড’স টেলের বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ নৈরাজ্য-সম্ভাবনার ওপর আলোকপাত করেছিলেন। 
অ্যান্ড্রু টেইট: ১৯৮৫ সালে লেখা দ্য হ্যান্ডমেইড’স টেল এখন ব্রিটিশ পাঠ্যক্রমে ভালোভাবেই জায়গা করে নিয়েছে। এ গ্রন্থ যেন সময়ের আগেই ভবিষ্যদ্বাণীস্বরূপ। আপনি কি মনে করেন, এই পঁচিশ বছরে নারীদের অবস্থার কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে?
মার্গারেট: যখন এই গ্রন্থ লিখছি, তখন যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মীয় কট্টরপন্থিরা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ষাটের দশকের শেষ আর সত্তরের মাঝামাঝি সময় তাদের অবস্থান একটু দুর্বল হয়ে পড়েছিল। কিন্তু তখন তারা আবারও বলছিল, ‘নারীদের জায়গা ঘরেই।’ আমার বিশ্বাস– মানুষের জীবনে কোনো কিছুই একেবারে শূন্য থেকে আসে না। যদি আমেরিকার প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে তাকান, মার্গারেটপূর্ব অঞ্চলে, তাহলে স্বাধীনতার ঘোষণা, বিপ্লব এসবের নিচে আরও একটা স্তর দেখতে পাবে, তা হলো পিউরিটান ধর্মতন্ত্র। এই ধর্মতন্ত্রই, মজার ব্যাপার, শেষ পর্যন্ত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছিল। এই পিউরিটানরা কোয়াকারের মতো ভিন্নমতাবলম্বীদের ফাঁসি দিয়েছিল। তারা চেয়েছিল নিজেরাই ধর্মীয় মতবাদ ঠিক করতে। আশির দশকের মাঝামাঝি যেসব কথা শোনা যাচ্ছিল, সেগুলোর অনেকটাই ১৭শ শতকের কথা। এই শতাব্দীটা আমাকে বরাবরই টেনেছে। কারণ আমার পূর্বপুরুষদের মধ্যে এমন লোকই ছিলেন, যারা কোয়াকারের ফাঁসি দিয়েছিলেন, ডাইনির বিচার করেছিলেন। তাই দ্য হ্যান্ডমেইড’স টেল-এ আমি যে ধর্মতান্ত্রিক রাষ্ট্র দেখিয়েছি, যেটা আমরা প্রায় জর্জ ডব্লিউ বুশের আমলেই পেয়ে গিয়েছিলাম, আমি সেটা বসিয়েছি কেমব্রিজ, ম্যাসাচুসেটসে। এখন যেসব মুক্তচিন্তার এক শহর হিসেবে পরিচিত। আমি এই বইয়ে এমন কিছু দেখাইনি, যা আগে কোথাও কখনও ঘটেনি। আমার বিকৃত কল্পনায় বানানো কিছুই নেই। আসলে মানুষ যে বিষয়গুলো নিয়ে বেশি চমকে ওঠে, তা হলো– কোথায় সেটা হচ্ছে। আমি কখনোই বিশ্বাস করিনি, এটা এখানে ঘটতে পারে না। উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরি হলে, এসব যে কোনো জায়গায় ঘটতে পারে। এই বইটি নিয়ে তখনকার প্রতিক্রিয়াগুলোও খুবই মজার ছিল। ইংরেজরা, যারা একবার গৃহযুদ্ধ করে নিয়েছে, তারা আর তা করতে চায় না, তারা বলল, ‘দুর্দান্ত একটা কাহিনি!’ কানাডিয়ানরা, যারা সবসময় একটু চিন্তিত প্রকৃতির মানুষ, তারা বলল, ‘এটা কি এখানে ঘটতে পারে?’ আর আমেরিকানরা বলল, ‘আমাদের হাতে আর কতটা সময় আছে?’ রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও এখনকার যেভাবে বিভক্তি হচ্ছে—তাতে কোনো একটা ক্যু হওয়া একেবারে অসম্ভব নয়।
অ্যান্ড্রু টেইট : আপনি কি মনে করেন, এখন নারীদের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো, না খারাপ?
মার্গারেট : কোন নারীদের কথা বলছেন? আপনি জানেন, এমন প্রশ্নে সবাইকে এক ঘরানায় ফেলা যায় না, যেমনটা পুরুষদের ক্ষেত্রেও করা যায় না। আপনি যদি বলেন, পুরুষদের জন্য এখন সময় ভালো না খারাপ, আমি বলব, ‘কোন পুরুষ?’ একটা দেশ বেছে নিন। সাধারণভাবে বলতে গেলে, যখন সবার জন্য খারাপ সময় চলে, তখন নারীদের জন্যও তা খারাপই হয়। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গল প য ক তর ষ ট র প রস ক র প রক শ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

শাহরুখের ব্যাপারে সাবধান করলেন জুহি চাওলা

বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। অভিনয় গুণে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে দোলা দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে যশ-খ্যাতি যেমন পেয়েছেন, তেমনি আয় করেছেন মোটা অঙ্কের অর্থও। রবিবার (২ নভেম্বর) ৬০ বছর পূর্ণ করে একষট্টিতে পা দেবেন এই তারকা।  

অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেক নায়িকার সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন শাহরুখ খান। তাদের মধ্যে অন্যতম জুহি চাওলা। ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’, ‘রামজানে’, ‘ডর’, ‘ইয়েস বস’, ‘ডুপ্লিকেট’সহ আরো কিছু জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন এই জুটি। একসঙ্গে অভিনয় ছাড়াও, এই দুই তারকা বাস্তব জীবনে খুবই ভালো বন্ধু। কেবল তাই নয়, ব্যবসায়ীক অংশীদারও তারা। 

আরো পড়ুন:

শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?

পাকিস্তানের সন্ত্রাসী তালিকায় সালমান খান কেন?

বন্ধু শাহরুখের জন্মদিন উপলক্ষে হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন জুহি। এ আলাপচারিতায় স্মৃতিচারণ তো করেছেনই, পাশাপাশি শাহরুখের বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।  

শাহরুখের সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের বিষয়ে জুহি চাওলা বলেন, “আমি যখন প্রথম ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হই, তখন সহপ্রযোজক বিবেক ভাসওয়ানি আমাকে বলেছিলেন, ‘আমার নায়ক দেখতে আমির খানের মতো।’ আমি শাহরুখকে দেখে ভীষণ অবাক হয়েছিলাম। দেখি, শাহরুখের চুল চোখের ওপরে নেমে এসেছে। আর সে একেবারেই আমার কল্পনার সেই ‘চকলেট বয়’ নয়! যখন কাজ শুরু করি, তখন বুঝতে পারি, সে একদম নতুন অভিনেতাদের মতো নয়, সে পরিশ্রমী, দিনে তিন শিফটে কাজ করছে।” 

একটি ঘটনা বর্ণনা করে জুহি চাওলা বলেন, “আমার মনে আছে, ‘ইয়েস বস’ সিনেমার শুটিংয়ের সময়, কোনো দৃশ্য ঠিকমতো লেখা না থাকলে পরিচালক আজিজজি (আজিজ মির্জা) বলতেন, ‘শাহরুখ আসুক, সব ঠিক হয়ে যাবে।’ রোমান্স আর মজার মিশেলে থাকা দৃশ্যগুলো আমাদের সবচেয়ে ভালো ছিল। সেই সূত্রেই আমরা অনেকগুলো সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করেছি।” 

শাহরুখের পাশে অবস্থান করলে সাবধান থাকার কথার কথা বলেছেন জুহি। হাসতে হাসতে এ অভিনেত্রী বলেন, “শাহরুখের আশেপাশে থাকলে সাবধানে থাকবেন। কারণ সে কথা দিয়ে আপনাকে যেকোনো কিছু করাতে রাজি করিয়ে ফেলতে পারে। ওর কথাবলার ভঙ্গি এমন যে, আপনি ‘না’ বলতেই পারবে না। আমি ‘ডুপ্লিকেট’ সিনেমা করতে চাইছিলাম না, কারণ সেখানে আমার তেমন কিছু করার ছিল না। আমরা তখন আরেকটি সিনেমার শুটিং করছিলাম, আর শাহরুখ আমাকে সিঁড়িতে বসিয়ে দুই ঘণ্টা বোঝায় এবং আমি সিনেমাটিতে চুক্তিবদ্ধ হই। সে আপনাকে যেকোনো কিছু করতে রাজি করাতে পারে, তাই সাবধানে থাকবেন।” 

শাহরুখ খানের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয়ে জুহি চাওলা বলেন, “অফস্ক্রিনে আমাদের সম্পর্কেও উত্থান-পতন রয়েছে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা কোনো না কোনোভাবে আমাদের যুক্ত রেখেছেন, এমনকি আইপিএলের মাধ্যমেও। আমাদের বন্ধন কোনো পরিকল্পনার ফল নয়, এটা একেবারেই ভাগ্যের ব্যাপার।” 

শাহরুখ খানের সঙ্গে আইপিএল দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) সহ-মালিক জুহি ও তার স্বামী জয় মেহতা। এই দলের পেছনে জুহি বিনিয়োগ করেছেন ৬২৯ কোটি রুপি। বর্তমানে এই দলটির মূল্য আছে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি রুপি। শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘রেড চিলিস গ্রুপ’ প্রতিষ্ঠা করেন জুহি। 

১৯৬৫ সালে ২ নভেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শাহরুখ খান। তার শৈশবের প্রথম পাঁচ বছর কেটেছে ম্যাঙ্গালুরুতে। শাহরুখের দাদা ইফতিখার আহমেদ স্থানীয় পোর্টের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। যার কারণে সেখানে বসবাস করেন তারা। শাহরুখের বাবার নাম তাজ মোহাম্মদ খান, মা লতিফ ফাতিমা। 

দিল্লির হংসরাজ কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন শাহরুখ খান। তারপর জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়াতে গণযোগাযোগ বিষয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন। কিন্তু অভিনয় জীবন শুরু করার কারণে পড়াশোনা ছেড়ে দেন তিনি। তবে বলিউডে ক্যারিয়ার শুরুর দিকে দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-তে ভর্তি হন এই শিল্পী। 

১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন শাহরুখ খান। রোমান্টিক ঘরানার এ সিনেমায় অভিনয় করে নজর কাড়েন তিনি। সিনেমাটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ। 

একই বছর ‘চমৎকার’, ‘দিল আসনা হে’ ও ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় অভিনয় করেন শাহরুখ। তার পরের বছর ‘ডর’ ও ‘বাজিগর’ সিনেমায় অভিনয় করে নিজের জাত চেনান শাহরুখ। তার অভিনয়ের জাদুতে মুগ্ধ হন কোটি ভক্ত; পৌঁছে যান সাফল্যের চূড়ায়। তার অভিনয়ের খ্যাতি আরো বাড়তে থাকে যশরাজ ফিল্মসের সিনেমায় ধারাবাহিকভাবে অভিনয় করে। একের পর এক হিট সিনেমা দিয়ে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অবস্থান করেন শাহরুখ। যদিও তার এই সফলতার জার্নির গল্প মোটেও সহজ ছিল। আর সে গল্প সবারই জানা। 

অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন শাহরুখ খান। তার মধ্যে মোট পনেরোবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি। এর মধ্যে আটবার সেরা অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। হিন্দি সিনেমায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০০২ সালে তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে ভারত সরকার। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করেছেন মোট পাঁচবার। তবে শাহরুখ খানের ৩৩ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে অধরা ছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। চলতি বছর ‘জওয়ান’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ