মুরাদনগরে নারী নির্যাতন ও ভিডিও ছড়ানোর নেপথ্যে ‘দুই ভাইয়ের বিরোধ’
Published: 4th, July 2025 GMT
কুমিল্লার মুরাদনগরে নারীকে ‘ধর্ষণ’ ও নির্যাতন এবং এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার নেপথ্যে রয়েছে প্রধান হোতা শাহ পরান এবং তার ভাই ফজর আলীর দীর্ঘদিনের বিরোধ। ফজর আলীকে বিপদে ফেলে প্রতিশোধ নিতেই শাহ পরান এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন চাঞ্চল্যকর এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, পূর্বশত্রুতার জেরে ধরে বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে ছোট ভাই শাহ পরান জনতাকে উস্কে দিয়ে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত ধর্ষককে নির্যাতন, শ্লীলতাহানি এবং অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। বাহেরচর গ্রামের শহিদের বড় ছেলে ফজর আলী এবং ছোট ছেলে শাহ পরান দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগী নারীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। প্রায় দুই মাস আগে দুই ভাইয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। পরে গ্রাম্য শালিসে ফজর আলী তার ছোট ভাই শাহ পরানকে চড় মারেন। এ অপমানের প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজছিলেন শাহ পরান।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে অপহৃত কিশোরী উদ্ধার
ছাত্রীকে যৌনপল্লীতে বিক্রি, যুবক গ্রেপ্তার
র্যাব-১১ এর অধিনায়ক জানান, শালিসের কিছুদিন পর ভুক্তভোগী নারীর মা ফজর আলীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে ফজর আলী সুদের টাকা আদায়ের অজুহাতে ভুক্তভোগীর শয়নকক্ষে প্রবেশ করেন। এর ২০ মিনিট পর পূর্বপরিকল্পিতভাবে ভুক্তভোগীর বাড়ির আশপাশে অবস্থানরত শাহ পরান এবং একই গ্রামের আবুল কালাম, অনিক, আরিফ, সুমন, রমজান ও অজ্ঞাত ৮-১০ জন ব্যক্তি দরজা ভেঙে ভুক্তভোগীর শয়নকক্ষে প্রবেশ করেন। তারা ভুক্তভোগীকে শারীরিক নির্যাতন ও শ্লীলতাহানি করেন এবং অশ্লীল ভিডিও ধারণ করেন। তা পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন, এ ঘটনা সমাজে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে।
ঢাকা/এমআর/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মুরাদনগরে পর্নোগ্রাফি মামলায় ৪ যুবক ৩ দিন রিমান্ডে
কুমিল্লার মুরাদনগরে ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ায় পর্নোগ্রাফি আইনে গ্রেপ্তার চার যুবকের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে কুমিল্লার আমলী আদালত-১১ এর বিচারক মমিনুল হক তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মুরাদনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুহুল আমিন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালত পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাদেকুর রহমান।
রিমান্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মুরাদনগরের পাঁচকিত্তা গ্রামের সুমন, রমজান, মো. আরিফ ও মো. অনিক।
আরো পড়ুন:
আরিফুলকে হত্যা করে তারই ২ বন্ধু: পুলিশ
ভোলায় স্বামীকে নির্যাতনের পর স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, মামলা
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জুন রাতে ওই গ্রামের এক প্রবাসীর বাড়িতে ঢুকে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তদের মধ্যে চারজন ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন এবং পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন। এরপরই চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা অপর মামলায় অভিযুক্ত ফজর আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঢাকা/রুবেল/বকুল